দক্ষিণ এশিয়া

আফগানিস্তানে শান্তি কি সম্ভব?

কাবুল, ১৬ জুলাই – মার্কিন ও ব্রিটিশসহ বিদেশি সৈন্যরা আফগানিস্তানের ঘাঁটি ছাড়তে শুরু করতেই আবার হামলাÑসহিংসতা বাড়িয়ে দিয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। একে একে তারা বিভিন্ন এলাকার দখল নিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সরকার যদিও দাবি করেছে, তালেবান প্রতিরোধে তার বাহিনী যথেষ্ট সক্ষম, কিন্তু বাস্তবে ইঙ্গিত মিলছে উল্টো। অগ্রসর হচ্ছে তালেবান শক্তি। এমনকি পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সীমান্তেরও নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। ফলে, আফগানিস্তানে আদৌ শান্তি সম্ভব কি না, এ সন্দেহ আবার সৃষ্টি হয়েছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, তিন মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়ার একদিনের মাথায় ভোল পাল্টেছে সশস্ত্র তালেবান গোষ্ঠী। আফগান সরকার যদি সাত হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দেয় তা হলে যুদ্ধবিরতিতে যেতে প্রস্তুত তারা। তবে দলটির এক মুখপাত্র বলছেন যুদ্ধবিরতি নয়, প্রস্তাব মেনে নিলে সামরিক অভিযান কিছুটা কমিয়ে আনবে তালেবান সরকার। অন্যদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, তালেবানের সশস্ত্র অভিযানের মুখে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশ আফগান শরণার্থী। তাজিক সীমান্তরক্ষীদের বরাতে বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা খোভার জানিয়েছে, গত দুদিনে অন্তত ৩৪৭ জন আফগান শরণার্থী প্রাণ বাঁচাতে তাজিকিস্তানে প্রবেশ করেছে। তবে সীমান্ত পারাপারের সময় দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুসারে, আফগানিস্তানের অন্তত ৭০ শতাংশ এলাকা বর্তমানে তালেবানের দখলে এবং প্রতিদিনই তারা নতুন নতুন জেলা সরকারি বাহিনীর হাত থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে। বাদাখশানেও জোরদার অভিযান চালাচ্ছে তালেবান যোদ্ধারা। এর জেরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তাজিক-সীমান্তবর্তী আফগান ঘাঁটিগুলো থেকে সৈন্য পালানোর ঘটনা ঘটছে। গত সপ্তাহেও তালেবানের আক্রমণের মুখে প্রায় হাজারখানেক আফগান সৈন্য তাজিকিস্তানে পালিয়ে যায়। অবশ্য তাদের ফিরিয়ে আবারও তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামানোর কথা জানিয়েছে আফগান কর্তৃপক্ষ।

এদিকে দুই দশক আগে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান শুরুর পর থেকে দেশটির যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের বিশেষ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হবে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র জেন সাকি এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা প্রত্যেকেই সাহসী মানুষ। আমরা তাদের নিশ্চিত করতে চাই যে, গত দু’দশক ধরে তারা আফগানিস্তান অভিযানে যে ভূমিকা পালন করেছেন, আমাদের কাছে তার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।’

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টুইন টাওয়ারে বিমান হামলাকারী আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা নেটওয়ার্ককে নির্মূল করতে ওই বছরই আল কায়দার তৎকালীন হেডকোয়ার্টার আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই অভিযানে উৎখাত হয় দেশটিতে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার, যাদের বিরুদ্ধে আল কায়দা নেটওয়ার্ককে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ছিল।

সূত্র : আমাদের সময়
এন এইচ, ১৬ জুলাই

Back to top button