মেসিকে নিয়ে উভয় সঙ্কটে বার্সেলোনা
সময় যত যাচ্ছে তত বাড়ছে চিন্তা। বার্সেলোনা পড়েছে উভয় সংকটে। একে তো তারা লিওনেল মেসিকে ছাড়তে চাইছে না। তার ওপর নতুন চুক্তিও করতে পারছে না। এক প্রকার হাত-পা বাঁধা এখন কাতালানদের। লা লিগার প্রেসিডেন্ট তেবাস সোজা বলে দিয়েছেন, নতুন মৌসুমে বার্সার ব্যয় কমাতে হবে। ব্যয় কমানো দূরে থাক, উল্টো কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় রিক্রুট করেছে দলটি। যদিও তাদের ফ্রিতে এনেছে বার্সা। তবে ব্যয় সেভাবে এখনও কমানো যায়নি। এমন অবস্থায় মেসির সঙ্গে চুক্তি করলে তার রেজিস্ট্রেশন আটকে দিতে পারে লা লিগা কর্তৃপক্ষ। এ জন্য ছাড়তে হবে আরও কয়েকজন খেলোয়াড়কে। এরই মধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে বার্সেলোনা। জুনিয়র ফিরপো, আলেনা, তোধিবোকে বেচে দিয়েছে ক্লাবটি। তবে তিনজনকে বেচে আয় হয় মোটে ২৮ মিলিয়ন ইউরোর মতো। তাদের মূল টার্গেট যে দুই ফুটবলারকে নিয়ে, সেই আন্তোনিও গ্রিজম্যান ও ফিলিপে কুতিনহোকে কিনতে এখনও কোনো ক্লাব আগ্রহ দেখায়নি। সেটাই এখন গলার কাঁটা হয়ে আছে বার্সার।
গত ১ জুলাই থেকে মেসি ফ্রি এজেন্ট। চাইলে যে কোনো ক্লাবে নাম ওঠাতে পারবেন। যেটা বার্সার জন্য ভয়েরও; যদি মেসিকে হাতছাড়া করে ফেলে তারা। তাই নিয়মিতই নাকি মেসির খোঁজখবর নিচ্ছেন বার্সা প্রেসিডেন্ট লাপোর্তে। কোপা আমেরিকা জেতার পর জানিয়েছেন অভিনন্দনও। মেসির বাবা হোর্হে মেসির সঙ্গে চলছে বার্সার যত কথাবার্তা।
আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকার ট্রফি জিতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন মেসি। ব্রাজিল থেকে ট্রফি নিয়ে নিজ শহর রোজারিওতে যায় আর্জেন্টিনা। সেখানে স্বদেশি সমর্থকরা উষ্ণ অভিনন্দন জানায় মেসিদের। দীর্ঘ ২৮ বছর পর আকাশি-সাদা জার্সিতে শিরোপা জেতায় যেমন আর্জেন্টিনার অপূর্ণতা ঘুচল, একইভাবে দেশের হয়ে স্বপ্নের ট্রফির ছোঁয়া পেয়ে আনন্দিত মেসিও। তারই মাঝে আবারও শুরু তার বার্সায় থাকা না থাকা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা। এ জন্য এক বার্তায় বার্সা প্রেসিডেন্ট মেসির প্রশংসাও করেছেন। যদিও চুক্তি নিয়ে তিনি এবার কিছু বলেননি, ‘কাতালানদের সবাই, বার্সার, কাতালুনিয়ার এমনকি বিশ্বের সব ফুটবলপ্রেমী মেসির কোপা আমেরিকা জয়ে আনন্দিত। এটা সত্যিই রোমাঞ্চের, বিশ্বের সেরা ফুটবলারের হাতে অবশেষে এমন (দেশের হয়ে) একটা শিরোপা এলো। তার এই অর্জনে আমাদের কান্নাগুলো সুখে রূপ নিল।’
এদিকে কোপা আমেরিকা জয়ের পর সপ্তম ব্যালন ডি’অর জেতা নিয়ে কথা শুরু। এবার মেসির হাতে ব্যালন ডি’অর উঠলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তার অর্জনের পাল্লাও বেশ ভারী। আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা ছাড়াও বার্সার হয়ে জিতেছেন কোপা দেল রে। এই বছর ৪৭ ম্যাচে অংশ নিয়ে করেছেন ৩৮ গোল এবং ১৪ অ্যাসিস্ট। সেইসঙ্গে ছিল ২৬টি ম্যাচসেরার পুরস্কার। লা লিগার পিচিচি ট্রফিও যায় তার ঘরে।
সর্বশেষ কোপা আমেরিকায় চার গোল ও পাঁচ অ্যাসিস্ট করে সেরা গোলদাতার খাতায়ও নাম ওঠান। তার সামনে নেই বড় কোনো তারকা প্রতিপক্ষও। কিলিয়ান এমবাপ্পে এবার সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি, লিগ ওয়ানও যায় অন্যের ঘরে, জেতা হয়নি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো জেতেননি সিরি-এ লিগ। পাশাপাশি ইউরোপায়ও তার দল ভালো করতে পারেনি। রবার্ট লেভানডস্কি ক্লাব প্রতিযোগিতায় দারুণ করলেও ইউরোয় পারেননি নৈপুণ্য দেখাতে। তবে মেসির সঙ্গে লড়াইটা হবে ইউরো জেতা চিয়েল্লিনি-বোনুচ্চির। এ ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা চেলসি মিডফিল্ডার এনগোলা কান্তে ও ম্যাসন মাউন্টের।
সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ১৪ জুলাই