জাতীয়

টিকা কূটনীতিতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে: জিএম কাদের

ঢাকা, ১৪ জুলাই – জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, টিকা কূটনীতিতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বের সব দেশ যখন করোনা টিকা দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ফেলেছে, তখন আমাদের দেশে করোনা টিকার পূর্ণ নিশ্চয়তা মেলেনি। মাস্ক পরে আর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে করোনা মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।

মঙ্গলবার জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানা কমিটির নেতার সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। জিএম কাদের বলেন, করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ভবিষ্যতে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। সময়মতো মানুষকে করোনার টিকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় করোনা পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কখনোই এদেশে লকডাউন সফল হবে না। কারণ দেশের বেশিরভাগ মানুষের ঘরে খাদ্য নেই, পকেটে পয়সা নেই। তাই খাদ্য সহায়তা না দিলে ক্ষুধার্ত মানুষ ঘরের বাইরে বের হবেই। শুরু থেকেই আমরা লকডাউনের আগে দরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে বলেছি। সদিচ্ছার অভাবে সরকার হতদরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা দেয়নি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দেশের মানুষ মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দেখেছে। দেশের কল্যাণে তারা কিছুই করতে পারেনি। তাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির পতাকাতলে শামিল হোন। তিনি বলেন, ৯০ সালের পর থেকে দুটি দলের ব্যবহারে মানুষ বিরক্ত হয়ে পড়েছে। তারা এক বুক আশা নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষ আবারও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। ৯০ সালের পর প্রতিটি সরকারই জাতীয় পার্টির ওপরে আঘাত করেছে। কিন্তু মানুষের আস্থা ও ভালোবাসায় জাতীয় পার্টি এখনো মানুষের মাঝে টিকে আছে।

জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন জননন্দিত নেতা। অপবাদ দিয়ে তাকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া যায়নি। প্রতিটি নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তার মৃত্যুর পরে চারটি জানাজায় মানুষের যে ঢল নেমেছে তাতে প্রমাণ হয়েছে দেশের মানুষ তাকে কতটা ভালোবাসেন। আগামীতে জাতীয় পার্টির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। তাই দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। করোনা মোকাবিলায় লকডাউন হচ্ছে না, মানুষের জীবন ও জীবিকাও হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে উদ্ভট কথা বলা হচ্ছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। মানুষের জীবন ও জীবিকা নিয়ে পরিহাস করছে সরকার। প্রতিটি মানুষের জীবন ও জীবিকার দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকেই।’

তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালের বন্যায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এক বুক পানির মধ্যে গিয়ে মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। পল্লীবন্ধুর আদর্শ প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের পথ দেখায়। সাধারণ মানুষের প্রতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভালোবাসা ছিল অকৃত্রিম। ১৪ জুলাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী সফল করতে সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান জাতীয় পার্টি মহাসচিব।

জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক (পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য) শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, উপদেষ্টা-মনিরুল ইসলাম মিলন, আমানত হোসেন আমানত, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব-মো. সামসুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন সরকার, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, আনোয়ার হোসেন তোতা, আনিস উর রহমান খোকন, প্রচার সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুম, দপ্তর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন মিলন, কেন্দ্রীয় সদস্য হাওলাদার মহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : যুগান্তর
এন এইচ, ১৪ জুলাই

Back to top button