জানা-অজানা

ব্রুনেইয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনার কথা

রাহীদ এজাজ

ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী নাহিদা রহমান সুমনা নিজেকে ‘অ্যাক্সিডেন্টাল ডিপ্লোম্যাট’ মনে করেন। কারণ, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা স্বামী উৎসাহ না দিলে তাঁর কূটনীতিক হওয়া সম্ভব ছিল না। স্বামী বলতেন, ‘নিজের পরিচয় তোমার নিজেকেই করে নিতে হবে।’

২৩ বছর আগে বাড়ির চার দেয়াল থেকে সরাসরি গিয়েছিলেন সেগুনবাগিচার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তাই প্রতিটি দিন নিজের কাছে চ্যালেঞ্জিং মনে হতো। প্রতিদিন তাঁকে নতুন করে সবকিছু শিখতে হয়েছিল। কারণ, তাঁর ব্যাচের অন্যরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার আগে কোথাও না কোথাও চাকরি করেছিলেন। ফলে শুরু থেকেই নানা রকম প্রশিক্ষণসহ সবকিছুতে তাঁকে বাড়তি চেষ্টা করতে হয়েছিল।

নাহিদা রহমান সুমনা ২০২০ সালে ব্রুনেইয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে ঢাকায় কনস্যুলার অনুবিভাগের মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করে গেছেন। কনস্যুলার সেবা সহজ করার পাশাপাশি প্রবাসীরা যাতে বিদেশে বসে সহজেই সেবা পেতে পারেন, সে জন্য তিনি ২০১৮ সালে দূতাবাসের মোবাইল আ্যপ চালুর প্রস্তাব দেন। এই আ্যপ দিয়ে এখন সহজেই কনস্যুলার সেবা নেওয়া যায়।

একসময় অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ মিশনে কর্মরত ছিলেন নাহিদা রহমান সুমনা। সে সময় অস্ট্রেলিয়ায় কনস্যুলারের কাজে তাঁকে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার সিডনি যেতে হতো। সেখানকার দুটি ঘটনা এখনো ভুলতে পারেননি। ওই সময়ে কুমিল্লার তানভীর নামের এক শিক্ষার্থীর জটিল ক্যানসার ধরা পড়ে। প্রতি ১৫ দিন পরপর সিডনি থেকে কাজ শেষে ক্যানবেরায় ফেরার পথে তিনি তানভীরকে দেখতে যেতেন। অস্ট্রেলিয়ার উন্নত চিকিৎসার পরও ছেলেটিকে বাঁচানো যায়নি। বিষয়টি এখনো তাঁকে নাড়া দেয়।

অন্যটি হলো অনিয়মিত হয়ে পড়ার কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে বাংলাদেশিদের কনস্যুলার সুবিধা দিতে তাঁকে যেতে হতো। কিন্তু সেখানে আটক বাংলাদেশিরা তাঁকে অনুরোধ করতেন, যেভাবেই হোক তাঁদের যেন দেশে ফেরত পাঠানো না হয়। তাঁরা ডিটেনশন সেন্টারে হলেও থাকতে চান। তবু দেশে যাবেন না। এমন এক অনিশ্চিত আর দুর্বিষহ জীবন নিয়ে কেন তাঁরা থেকে যাবেন, এটা তাঁকে অবাক করে এখনো।

এস সি/১৩ জুলাই

Back to top button