জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে গৃহবধূর চুল কেটে নির্যাতন, স্বামীসহ আটক ৩

জয়পুরহাট, ২১ অক্টোবর- জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে শামীমা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূকে চুল কেটে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার বেলা ১১ টায় তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ওই উপজেলার করমজি গ্রামের বাসিন্দা এবং নির্যাতিত ওই গৃহবধূর স্বামী রুহুল আমিন (৩০) দেবর শাহীন হোসেন (২৫) ও শ্বশুর আবুল কালাম আজাদ (৬০)। আক্কেলপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে বগুড়া জেলার দূপচাঁচিয়া উপজেলার পোঁওতা গ্রামের মাহাতাব সরদারের মেয়ে শামীমা আক্তারের সাথে আক্কেলপুর উপজেলার করমজি গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে রুহুল আমিনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই গৃহবধূ শামীমাকে স্বামীসহ তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করে আসছিল। গত ১৪ অক্টোবর দুপুরে শামীমাকে তার বাবার বাড়ি থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেয় রুহুল আমিন। এতে ওই গৃহবধূ অস্বীকৃতি জানালে রুহুল আমিন ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে তাকে প্রচণ্ড মারপিট করে। এক পর্যায়ে দেবর শাহীন হোসেন এবং শাশুড়ি নাজমা বেগম নির্যাতিত ওই নারীর দুই হাত বেঁধে রাখেন। এরপর স্বামী রুহুল আমিন কাঁচি দিয়ে শামীমার মাথার অর্ধেক চুল কেটে দেন। ওই ঘটনার পাঁচ দিন পর ফের গত ১৮ অক্টোবর রাতে যৌতুকের দাবিতে ওই নারীর স্বামী আরেক দফায় লাঠি দিয়ে তাকে মারপিট করে হাত পাঁ দড়ি দিয়ে বেঁধে বাড়ির উঠানে ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে ১৯ অক্টোবর শামীমার পরিবারের লোকজন ওই বাড়িতে এলে রুহুল আমিন তাদের উপরেও চড়াও হন। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে তার পরিবারের লোকজনের সাথে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে গত ২০ অক্টোবর ওই শামীমার মা বাদী হয়ে মেয়ের স্বামী, দেবর, শ্বশুর, শাশুড়ির নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

আরও পড়ুন: বগুড়ায় শিশু অপহরণকালে হা‌তেনা‌তে আটক ৪ জন

নির্যাতিত ওই গৃহবধূর মা মনোয়ারা বেগম জানান, পাঁচবছর আগে মেয়েকে অনেক টাকা খরচ করে ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তার মেয়েকে নির্যাতন শুরু করে জামাইসহ তার পরিবারের লোকজন। শেষ পর্যন্ত তারা হাত পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেয়ের মাথার চুল পর্যন্ত কেটে নিয়েছে। তিনি বলেন, মেয়ের প্রতি নির্যাতনের বিচার চেয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছি।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ খান বলেন, গৃহবধূ শামীমাকে নির্যাতন ও চুল কাটার ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়েছি, তাদের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নিয়েছি। তিনি জানান, দ্রুতই তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজাতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ২১ অক্টোবর

Back to top button