‘স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালনায় অনুসরণীয় পদ্ধতি’ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে
ঢাকা, ১২ জুলাই – দেশের ভেতরেই স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালনার পথ খুলেছে। এ লক্ষ্যে সরকার ‘স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালনায় অনুসরণীয় পদ্ধতি’ অনুমোদন করেছে, যা ইতোমধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশ হয়েছে।
দেশের ভেতরে স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন করতে হলে একই সীমানায় নিজস্ব ২০ বিঘা জমি থাকতে হবে। কোনো ভাড়া, লিজ করা সম্পত্তিতে পরিশোধনাগার স্থাপন করা যাবে না। পরিশোধনাগার ও ওয়ারহাউস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে হবে।
সেই সঙ্গে কোম্পানির নামে অনুমোদিত মূলধন হিসেবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা থাকতে হবে এবং পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে ১০০ কোটি টাকা। গত ৭ জুলাই প্রকাশিত গেজেটে এমনই শর্ত রাখা হয়েছে।
স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠন করা বাছাই কমিটি আবেদন যাচাই-বাছাই করে দুই মাসের মধ্যে সুপারিশ করবে। তার ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেবে। লাইসেন্স পাওয়ার দুই বছরের মধ্যে পরিশোধনাগার স্থাপনের কাজ শেষ করতে হবে।
বাছাই কমিটির আহ্বায়ক হবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) ও সদস্য সচিব হবেন উপ-সচিব (রফতানি-১)। সদস্য হিসেবে থাকবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (রফতানি-১)।
তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে থাকবেন- রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, আরজেএসসি, সিসিআইঅ্যান্ডই, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট এবং পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিনিধি। এছাড়া বাছাই কমিটিতে প্রয়োজনে সরকারি দফতর থেকে সদস্য কো-অপ্ট করা যাবে।
স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপনে প্রাথমিক অনুমতি পাওয়ার পর পরিশোধনাগার কর্তৃক গ্রহণ করা কাজের ওপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বাৎসরিক কর্মপরিকল্পনা জমা দিতে হবে। বছর শেষে তা কারিগরি কমিটি যাচাই করবে।
রফতানি বাজারে প্রবেশের জন্য শুল্ক বন্ড সুবিধা প্রদান, ব্যয়বহুল ও আর্থিক ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ বিবেচনায় উৎপাদন শুরু হওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কর সুবিধা এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি ও পরিশোধনাগারে ব্যবহৃত ব্যবহারযোগ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক সুবিধা দেবে সরকার। এ ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
আবেদনে যেসব তথ্য দিতে হবে
>> কোম্পানি গঠন করতে হবে। কোম্পানি ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন দাখিল করতে হবে।
>> পরিশোধনাগারে কাঁচামালের অব্যাহত ও নিরবচ্ছিন্ন যোগান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক বা একাধিক স্বর্ণখনি এবং আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ সরবরাহকারী আন্তর্জাতিক মানের এক বা একাধিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
>> পরিশোধনাগারের স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের লে-আউট।
>> পরিশোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে এমন মেশিনারিজের তালিকা, কোন দেশ থেকে সংগ্রহ করা হবে সে সম্পর্কিত তথ্য।
>> পরিশোধনাগারে স্বর্ণ পরিশোধনে ব্যবহৃতব্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্য।
>> পরিকল্পিত বর্জ্য (তরল, কঠিন ও বায়বীয়) ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ইটিপিসহ উপযুক্ত বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন সম্পর্কিত পরিকল্পনা।
>> আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপদ কর্মপরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন।
>> নিজস্ব ল্যাবরেটরি স্থাপনে মেশিনারিজের তালিকা এবং সম্পাদিত কাজের বিবরণ/পরিকল্পনা (হলমার্ক প্রদান, বিশুদ্ধতা পরীক্ষা), সংশ্লিষ্ট আইএসও সনদ গ্রহণের পরিকল্পনা।
>> আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মার্কেট রেগুলেটরি কমিটির সদস্য পদ গ্রহণের পরিকল্পনা।
>> নিজস্ব ওয়ারহাউজ এবং ভল্ট স্থাপনের পরিকল্পনা।
>> বার্ষিক অপরিশোধিত অথবা আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ পরিশোধনের পরিমাণ।
>> যেসব দেশে স্বর্ণবার, স্বর্ণ কয়েন রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে।
>> আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদন পাওয়া সুপারভাইজার এবং রেফারি নিয়োগের পরিকল্পনা।
>> প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কাঠামোসহ বাণিজ্যিক পরিকল্পনার মূল বিষয়াদি।
>> শিল্প স্থাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ডকুমেন্ট।
আবেদন বাছাইয়ে বিবেচ্য বিষয়
কারিগরি, গুণগতমান নিশ্চয়তা, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, কর্ম পরিবেশ, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স প্রতিপালনে সক্ষমতার প্রমাণাদি ও পরিকল্পনার পাশাপাশি বিনিয়োগ সক্ষমতা (ব্যাংক সলভেন্সি/অডিট রিপোর্ট) বিবেচনা করা হবে।
প্রাথমিক অনুমতি
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে গঠিত বাছাই কমিটি আবেদন পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে আবেদন যাচাই করে সুপারিশ করবে। বাছাই কমিটির ইতিবাচক সুপারিশের ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিশোধনাগার স্থাপনে প্রাথমিক অনুমতি দেবে।
যে কারণে অনুমতি স্থগিত বা বাতিল হবে
>> পরিশোধনাগারের মালিকানা পরিবর্তন ঘটলে এবং নতুন মালিক তাদের যথাযথ বিশ্বাসযোগ্যতা প্রদর্শনে ব্যর্থ হলে।
>> কারিগরি নির্দেশনা, বিশুদ্ধতা/মান কমপ্লায়েন্স প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে।
>> আবেদনের সময় কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালিত না হলে অথবা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি অনুসরণ না করলে।
>> লাইসেন্সের শর্ত যথাযথ প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে।
>> দেশে বিদ্যমান সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন-বিধির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে।
>> পরিশোধনাগার দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়ায় থাকলে।
বিনিয়োগ
>> কোম্পানির নামে অনুমোদিত মূলধন হিসেবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকার সম্পদ এবং ১০০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে।
>> পরিশোধনাগার নিজস্ব জমিতে স্থাপিত হবে এবং জমির পরিমাণ হবে অবিচ্ছিন্নভাবে কমপক্ষে ২০ বিঘা। কোনো ভাড়া, লিজ করা সম্পত্তিতে পরিশোধনাগার স্থাপন করা যাবে না।
>> পরিশোধনাগারসহ জুয়েলারি শিল্পের সব ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য দেশীয় বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেয়া।
কাঁচামালের উৎস
>> অপরিশোধিত/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আকরিকের অব্যাহত ও নিরবিচ্ছিন্ন যোগান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১০০ টন স্বর্ণের মজুদ রয়েছে এরূপ এক বা একাধিক স্বর্ণখনি এবং বাৎসরিক ১০ টন আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ সরবরাহ করার সক্ষমতা রয়েছে এমন আন্তর্জাতিক মানের এক বা একাধিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে হবে।
>> আন্তর্জাতিকভাবে স্বনামধন্য উৎস থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হবে, যা কোনো ধরনের অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত নয় এবং যার ওপর আন্তর্জাতিক কমিউনিটি কর্তৃক কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই।
>> যেসব স্বর্ণ খনি থেকে স্বর্ণ আকরিক আমদানি করা হবে তা সর্বোচ্চ গ্রেড সোনার খনির অন্তর্ভুক্ত হবে।
কাঁচামাল আমদানি
কেবল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পাওয়া স্বর্ণ পরিশোধনাগার কাঁচামাল হিসেবে অপরিশোধিত স্বর্ণ আকরিক/আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণ আমদানি করতে পারবে। কাঁচামাল আমদানিতে সংশ্লিষ্ট আইন, বিধি, পদ্ধতির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদিত ডিলার হিসেবে লাইসেন্স নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্বর্ণালঙ্কারের ব্যবসায়িক ডিলার এবং পরিশোধনাগারের ডিলার পৃথক হবে।
কেমিক্যাল আমদানি
আমদানি নীতি আদেশ এবং দেশে বিদ্যমান আইন, বিধি-বিধান অনুসরণ করে পরিশোধনাগারের উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেমিক্যাল আমদানি করা যাবে।
স্বর্ণ পরিশোধনাগারে নিজস্ব পরীক্ষাগার স্থাপন
স্বর্ণ মান/বিশুদ্ধতা পরীক্ষার লক্ষ্যে স্বর্ণ পরিশোধনাগারে নিজস্ব পরীক্ষাগার স্থাপন করতে হবে। পরীক্ষাগারের জন্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অ্যাক্রেডিটেশন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষাগারকে হলমার্ক সেন্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হলমার্ক সেন্টারে এক্স-রে ফ্লুরেসেন্স স্পেকট্রোমিটার এবং ফায়ার অ্যাস সিস্টেম অবশ্যই থাকতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মেশিনারিজ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। পরীক্ষাগারকে ০০.০০-৯৯৯.৯ পিপিটি মন/বিশুদ্ধতা পরীক্ষায় সক্ষম হতে হবে।
নিরাপত্তা
ভৌত অবকাঠামো নিরাপত্তাজনিত দিক থেকে আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। পরিশোধনাগারের জন্য কেপিআই পদ্ধতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে পরিবহনের ক্ষেত্রে সুরক্ষিত পরিবহন ব্যবস্থাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে এ ধরনের পরিবহনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করতে হবে। পরিশোধনাগার ও ওয়ারহাউস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ থাকতে হবে।
পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
স্বর্ণ পরিশোধনাগারের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বায়বীয় পদার্থ- লেড অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি এবং তরল বর্জ্য হিসেবে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড, পাওয়া যায়। এছাড়া বিপুল পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ভারী ধাতু মিশ্রিত কঠিন বর্জ্য, ধাতু দণ্ড ও স্লাজ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এ ধরনের বর্জ্যের পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে-
>> স্বর্ণ পরিশোধনাগারে উৎপাদিত বিষাক্ত বায়বীয়/গ্যাসীয় নিঃসরণ পরিশোষণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ পরিশোধন ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে।
>> স্বর্ণ পরিশোধনাগারে সৃষ্ট তরল বর্জ্য পরিশোধনের জন্য ইটিপি স্থাপনসহ যথাযথ পরিশোধন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
>> স্বর্ণ পরিশোধনাগারে উৎপাদিত ক্ষতিকর ভারী ধাতু মিশ্রিত বিপুল পরিমাণে কঠিন বর্জ্য, ধাতু দণ্ড ও স্লাজ নিরাপদভাবে সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত মজুদ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
>> উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ কঠিন বর্জ্য, ধাতু দণ্ড, স্লাজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে পরিবেশসম্মত উপায়ে সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে উপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
>> জলাধারের এর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
>> পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ গ্রহণ করতে হবে।
গুণগত মান
>> স্বর্ণবার এবং কয়েনের ওজন, আকার, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ পুরুত্ব ও মসৃণতা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদানুসারে প্রস্তুত করা যাবে।
>> গোল্ডবার গ্রাফাইট বা কাস্ট আয়রনের মোল্ডের উপর নির্মিত হতে হবে।
>> গোল্ডবারের আকৃতি অবশ্যই ধাতুপিণ্ড আকার হতে হবে।
>> বারের উপরিভাগে কোনো প্রকার ক্ষত, গর্ত বা স্বচ্ছতার অভাব থাকবে না।
>> অতিরিক্ত মাত্রায় সংশোধন করা যাবে না। বারের চারপাশ এবং নিম্নভাগ যথাসম্ভব সমতল থাকতে হবে। বারের প্রলেপগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় যাতে না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
গোল্ডবারের মার্কসের ভেতর যা থাকতে হবে
>> রিফাইনারির ছাপ, যার মাধ্যমে রিফাইনারির পরিচয় এবং অবস্থান নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
>> বারের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার ছাপ বারে থাকতে হবে।
>> প্রতিটি বারের ক্রমিক নম্বর সর্বোচ্চ ১১ সংখ্যার হতে হবে।
>> ১১ সংখ্যার দিক নম্বরের প্রথম দিকে বার উৎপাদনের বছর ও মাস উল্লেখ থাকতে হবে। প্রথম দিকে উল্লেখ না থাকলে উৎপাদন বছর ও মাস পৃথকভাবে উল্লেখ করতে হবে। ফন্টের (অক্ষর) আকার নূন্যতম ১২ এমএম হতে হবে।
>> ফন্টের আকার একই মাপের হতে হবে।
>> বারের ওজন ছাপের মধ্যে রাখা যাবে না।
>> ক্ষেত্র বিশেষে সনদ বা সার্টিফিকেট প্রদান করা যাবে।
>> বিশুদ্ধতা/স্বচ্ছতা পিপিটি মানে থাকতে হবে।
স্বর্ণবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী স্বর্ণবার উৎপাদন করতে পারবে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত রাখতে হবে।
অনুসরণীয় পদ্ধতি প্রতিপালনে বাধ্যবাধকতা
>> বাংলাদেশে স্থাপিত সব স্বর্ণ পরিশোধনাগার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে করা অনুসরণীয় পদ্ধতি প্রতিপালনে বাধ্য থাকবে।
>> পরিশোধনাগারগুলো তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য অভ্যন্তরীণ নীতিমালা এবং পদ্ধতি প্রণয়ন করতে পারবে। তবে এই নীতিমালা বা পদ্ধতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুসরণীয় পদ্ধতির সঙ্গে অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। কোনো অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুসরণীয় পদ্ধতি প্রাধান্য পাবে।
অনুসরণীয় পদ্ধতি পরিবর্তনের ক্ষমতা
>> আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানে কোনো পরিবর্তন অথবা অভ্যন্তরীণ কোনো প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) যেকোনো সময় অনুসরণীয় পদ্ধতিতে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন সংশোধন আনতে পারবে। কর্তৃপক্ষ কমপক্ষে তিন মাস আগে সংশ্লিষ্ট পরিশোধনাগারকে তা অবহিত করবে এবং পরিশোধনাগার সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
>> আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানে কোনো পরিবর্তন অথবা অভ্যন্তরীণ কোনো প্রয়োজনে পরিশোধনাগারের অনুসরণীয় পদ্ধতিতে কোনো পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হলে পরিশোধনাগার কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে যৌক্তিকতা সহকারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তা উপস্থাপন করতে পারবে।
লক্ষ্য
স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের অনুসরণীয় পদ্ধতি।
উদ্দেশ্য
স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপনে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবহৃত ও স্বীকৃত অত্যাধুনিক মেশিনারিজ ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার এবং পরিশোধনাগার পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবেশগত, সামাজিক, ব্যবস্থাপনাজনিত ও গুণগত কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করে অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও রফতানির উদ্দেশ্যে স্বর্ণবার প্রস্তুত করা।
তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ
এস সি/ ১২ জুলাই