অভিভাবকের দায়িত্ব-কর্তব্য ও ইসলাম
প্রতিটি পরিবারের একজন প্রধান থাকেন। অথবা ব্যক্তিগত জীবনে প্রত্যেকেই প্রাপ্ত বয়ষ্ক ও জীবনে বিকশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কারও না কারও তত্ত্বাবধানে চলেন। তিনিই হলেন অভিভাবক। আদিকাল থেকে এই প্রথা চলে এসেছে। যিনি অভিভাবক তার ওপর নির্ভর করে তার অধীনস্থদের জীবনধারা। একজন সফল অভিভাবকের কী গুণ থাকা চাই সে ব্যাপারে কোরআন-সুন্নাহয় বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।
প্রথমত একজন অভিভাবক তার পরিবার ও ছেলেমেয়ের শিক্ষা-দীক্ষা ও আখলাক চরিত্রের প্রহরী। আর যিনি প্রহরী তিনি নিজেই যদি আদর্শচ্যুত হন তবে অন্যদেরকে শেখাবেন কী। এজন্য সর্বপ্রথম একজন অভিভাবককে আদর্শবান হতে হবে। নিজে কোনো বিষয় না মেনে বা আমল না করে অন্যকে এর নির্দেশ দেয়া যাবে না। দ্বিতীয়ত অভিভাবককে হতে হবে সহিঞ্চু ও ভারসাম্যপূর্ণ স্বভাবে। হুট-হাট করে, মাথা গরম অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে যাওয়া অভিভাবকের কাজ নয়। হাদিসে আছে, তোমার মধ্যে এ দুটি গুণ যারা আছে সে আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়, সহিষ্ণুতা ও ধীরস্থিরতা। একজন ব্যক্তি বা পরিবারকে চালাতে হলে এই গুণটির প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি।
আরও পড়ুন: নামাজে টুপি পরা কি জরুরি?
অভিভাবককে হতে হবে দয়ার্দ্র ও কোমল। কোনো হিংস্রতা তার থেকে যেন কখনোই প্রকাশ না পায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ দয়ালু, তিনি কোমলতাকে পছন্দ করেন।’ রাসুলের (সা.) চরিত্রে এই গুণটি ছিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। তিনি অধীনস্থদের জন্য মোমের মতো কোমল ছিলেন। তবে প্রয়োজনের তাগিদে কখনও কখনও তিনি কারও ওপর কঠোর হতেন। কিন্তু সেটা কখনও হিংস্রতার পর্যায়ে যেতো না। একজন অভিভাবকের মধ্যে কখনও হিংস্রতা যেন প্রকাশ না পায় সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অভিভাবকত্বেরজ ন্য দরকার একটি মমত্বপূর্ণ হৃদয়। যার হৃদয় কর্কশ ও কঠোর তিনি অভিভাবক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি বৃক্ষেরই ফল রয়েছে, আর কলিজার ফল হলো সন্তান। আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তিকে রহম করেন না যে ব্যক্তি তার সন্তানের প্রতি করুণা প্রদর্শন করে না।’ এছাড়া অভিভাবককে দুটি বিষয়ের মধ্যে যা অধিক সহজ তা বেছে নিতে হবে, যদি তা পাপপূর্ণ না হয়। রাগ-ক্ষোভ অভিভাবককে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। সবক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করতে হবে। এসব গুণে গুণান্বিত অভিভাবকই প্রকৃত অর্থে তার অধীনস্থদের আদর্শবান হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।
এন এইচ, ২১ অক্টোবর