পশ্চিমবঙ্গ

মিশন একুশের সমীকরণ তৈরি বিজেপির

কলকাতা, ২১ অক্টোবর- মিশন একুশের সমীকরণ তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি। সেই সমীকরণের উপর ভিত্তি করেই বিজেপি বাংলায় সেনাপতি নির্ধারণ করতে চাইছে। দিল্লিতে কয়েক দফা বৈঠকের পরেও বঙ্গের ভোট সেনাপতি নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় জল্পনা চলছে অনেক নাম নিয়ে। তবে দিলীপ-রাহুল সিনহাদের টপকে সেনাপতির দৌড়ে এগিয়ে মুকুল রায়ই।

মমতাকে হারাতে মুকুল রায়ই আদর্শ

বঙ্গ বিজেপি সম্প্রতি মুকুল রায়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। মুকুল রায়কে বিজেপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি করে একটা বাজি জিততে চাইছে। মুকুলের হাতে বাংলার নির্বাচনের ব্যাটন তুলে দিতেই তাঁকে কেন্দ্রীয় সহসভাপতি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোদী-শাহরা জানেন বাংলায় বাজিমাত করতে মুকুল রায়ই আদর্শ হতে পারেন!

মুকুল রায়ই বিজেপির সেনাপতি একুশে

২০১৮-র পঞ্চায়েত বা ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মুকুল রায়ই ছিলেন বিজেপির ভোটযুদ্ধের কাণ্ডারি। তাই এবার যখন তাঁর গুরুত্ব বাড়ানো হল, তাঁকে যে বঙ্গ-ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিশ্চিত। সেইমতো মুকুল রায়ই ২০২১-এর নির্বাচনে বিজেপির সেনাপতি হচ্ছেন। তাঁর কাঁধে ভর করেই বিজেপি বাংলার ভোট বৈতরণী পার করতে চাইছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

মুকুল ভাঙাতে পারেন, তাই পাল্লা ভারী

মোদী-শাহ-নাড্ডারা বাংলায় বাজিমাতের কথা চিন্তা করেই মুকুল রায়কে সামনে রেখে ঝাঁপাচ্ছে ২০২১-এর নির্বাচনে। মুকুল রায়কে সামনে এগিয়ে দিয়ে তৃণমূলকে যদি ভেঙে দেওয়া যায় বা মুকুল রায় তৃণমূল নেতাদের ভাঙিয়ে আনতে পারেন, তাতে আখেরে বিজেপিরই লাভ। তাই মুকুলকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপির থিঙ্কট্যাঙ্ক।

আরও পড়ুন: দর্শকশূন্যই থাকবে পুজো মণ্ডপ, রায় বহাল হাইকোর্টের

দিলীপ-রাহুলরা ভাঙবেন না, বিশ্বাস বিজেপির

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করে, দিলীপ ঘোষ বা রাহুল সিনহার সঙ্গে থাকা নেতারা সবাই বিজেপি অন্ত প্রাণ। তাঁরা ক্ষুব্ধ হলেও বিজেপি ছাড়তে দু-বার ভাববেন। গুরুত্ব কমলেও বিজেপি ছেড়ে তাঁদের অনুগামীদের তৃণমূলে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীঁণ। তাই মুকুলকে গুরুত্ব দিয়ে অন্য সমীকরণে ভোট জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করতে চাইছে।

তৃণমূল বনাম তৃণমূল যুদ্ধ বাধাতে পারেন মুকুল

মোদী-শাহরা একুশে মুকুলকে দিয়ে তৃণমূলকে ভাঙার পরিকল্পনাতেই এগোচ্ছে। ঠিক যেমন ২০১৯-এ মুকুল রায়কে দিয়ে বিজেপি তৃণমূল ভাঙাতে সক্ষম হয়েছিল। তৃণমূল ভাঙিয়ে দলত্যাগীদের প্রার্থী করে কাজ হাসিল করেছিল বিজেপি। তৃণমূল বনাম তৃণমূল যুদ্ধ লাগিয়ে বাংলায় ফায়দা লুটেছিল গেরুয়া শিবির। সেই অঙ্কেই ২ থেকে বেড়ে ১৮ হয়েছে, তাহলে একুশে জয় অসম্ভব কোথায়!

দিলীপ-রাহুল-মুকুলদের নিয়ে সমীকরণ বিজেপির

বিজেপি নয়া সমীকরণেই মুকুল রায়কে গুরুত্ব দিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বা রাহুল সিনহাদের কথা ভাবেননি মোদী-শাহরা। এক কলমের খোঁচায় দিলীপ গোষ্ঠীর নেতাদের চুপ করিয়ে দিয়েছেন। দিলীপ ঘোষকেও ট্যাঁ-ফুঁ করতে দেননি মোদী-শাহরা। আর রাহুল সিনহা তো গর্জে উঠেই চুপসে গিয়েছেন। কোনও পদক্ষেপই নেই তাঁর।

মমতাকে কুর্সি থেকে হটাতে পারেন মুকুল

মুকুল রায়ের এই গুরুত্ব বৃদ্ধিতে আদৌ খুশি নন দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহার অনুগামীরা। কেউ প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করছেন, কেউ আড়ালে, আর কেউ চুপ করে রয়েছেন কিছু বলতে না পেরে। ফলস্বরূপ আদি নেতারা মুকুলের এই ভূমিকা কতটা মেনে নেন, তার উপরই নির্ভর করবে বিজেপির ভাগ্য। বিজেপি মূল লক্ষ্য ২০২১-এর নির্বাচনে জয়লাভ করে মমতাকে কুর্সি থেকে হটানো। তাই মুকুলই অগ্রণী।

এন এইচ, ২১ অক্টোবর

Back to top button