১ উইকেটে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১১৪ রান
হারারে, ০৯ জুলাই – আটজন ব্যাটসম্যান নিয়ে হারারে টেস্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ। যদিও দ্বিতীয় দিন শেষে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল বোলার স্পেশালিস্ট তাসকিন আহমেদ।
১৩৪ বলে ১১ বাউন্ডারিতে ৭৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছেন তাসকিন। নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে অবিশ্বাস্য জুটি গড়লেন তাসকিন। দেশের টেস্ট ইতিহাসের ৯ বছরের রেকর্ড ভেঙে ১৯১ রান গড়ল মাহমুদউল্লাহ-তাসকিন জুটি।
মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিনের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে ভর করে জিম্বাবুয়ের সামনে ৪৬৮ রানের পাহাড় তৈরি করল মুমিনুল বাহিনী।
আর সে পাহাড় খননে শুরুটা বেশ ভলোই করেছে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে দিন শেষে ১১৪ রান জমা করেছে তারা।
অর্থাৎ আগামীকাল আরো ৩৫৪ রান তাড়ায় নামতে হবে তাদের।
নিজেদের ব্যাটিংই ইনিংসে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই ওপেনার মিল্টন শুম্বা ও তাকুজওয়ানাশে কাইতানো। কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৭.২ ওভারে ৬১ রান করে ফেলেন তারা। যদিও শুরুতে বেশ সতর্ক ছিলেন দুই ওপেনার। হাত খুলছিলেন না।
তাসকিন আর এবাদত হোসেনের করা প্রথম পাঁচ ওভারে জিম্বাবুয়ে তুলে মাত্র ৫ রান। তাসকিন ৩ ওভারে দুইটিই মেইডেন নেন, দেন মাত্র ১ রান। এবাদত ২ ওভারে ৪।
এরপরই হাত খুলে মারা শুরু করেন তারা। এ সময় উইকেট থেকে সুবিধা নিতে পারছিলেন না বাংলাদেশের পেসাররা। ১০ ওভার করে ফেলেন তাসকিন। মাত্র ১৬ রান দিলেও উইকেট ফেলতে পারেননি। তুলনামূলক খরচে ছিলেন পেসার এবাদত। ৯ ওভার করে ২৮ রান দিয়েছেন।
তবুও সফলতা আসেনি। পেসাররা সফল না হওয়ায় স্পিনারদের কাজে লাগান মুমিনুল। এ বেলায় মিরাজ ব্যর্থ হলেও সফল হয়েছেন সাকিব।
জিম্বাবুয়ের প্রথম উইকেটটি নিজের ঝুলিতে জমা করলেন। ব্যক্তিগত ৪১ রানে সাকিবের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পা দিলেন শুম্বা। ৮৩ বলে ৭ চারের মারের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে।
এরপর কাইতানোর সঙ্গী হতে নামেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। নেমেই ওয়ানডে মেজাজে দুর্দান্ত খেলে সংগ্রহ করলেন ৩৩টি রান। যেখানে কাইতানো ৩৩ রান করতে ১১৭ বল মোকাবিলা করেছেন, সেখানে টেলর খরচ করছেন মাত্র ৪৬টি বল।
টেলরের ৩৩ রানের মধ্যে ২৪ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। ১৩.৪ ওভারে প্রায় চারের কাছাকাছি করে রান তুলে ৫৩ রান যোগ করেছেন টেলর আর কাইতানো।
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে শঙ্কা ছিল টিতে থাকা একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারবেন কি না তাসকিন।
সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এমনই অনবদ্য ব্যাটিং করলেন যা তার ক্যারিয়ারসেরা। আর প্রায় ১৬ মাস পর সাদা জার্সিতে ফিরেই মাহমুদউল্লাহ জানালেন, ফুরিয়ে যাননি তিনি। ক্যারিয়ারসেরা ১৫০ রানের ইনিংস খেললেন। শেষ উইকেট এবাদত আউট না হয়ে গেলে নিজের সংগ্রহকে আরো বাড়িয়ে নিতে পারতেন।
মাহমুদউল্লাহর এই রাজসিক প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে তাসকিন ছাড়া আরো দুটি দুর্দান্ত ইনিংস দেখেছে বাংলাদেশ।
দল যখন ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ধুকছিল তখন নেতার মতো ইনিংস খেললেন মুমিনুল হক। ৯২ বলে ১৩ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৭০ রানের ইনিংস খেললেন তিনি।
একেবারে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন দলকে। ওদিকে ২৩ রানে ওপেনার সাদমানের বিদায়ের পর দল আবার বিপর্যয়ে পড়ে।
এবার দলকে ফের খাদের কিনারে টেনে নেন বাংলাদেশ দলের সেরা দুই টাইগার সাকিব ও মুশফিক। মুশফিক ৪৫ বলের মোকাবিলায় ১১ রান করলেও সাকিবের ব্যাট কথাই বলেনি।
৫ বল খেলে ৩ রান করে নাইয়ুচির বলে সাজঘরে ফেরেন। গারাভার বলে তিনি আউট হলে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। দলকে প্রথমে টেনে তুলেন তিনিই। ৯২ বলে ৭০ রানে দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। মুমিনুলের আউটের পর এক সময় দেখা যায় ১৩২ রানের মধ্যে ৬ উইকেট সেই বাংলাদেশের।
এরপর দলের কাণ্ডারি হিসেবে আবির্ভাব ঘটে লিটন দাসের। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে শতরানের পার্টনারশিপ গড়েন। তিনি নিজে খেলেন ১৪৭ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে ৯৫ রানের অনবদ্য ইনিংস।
সফরকারীরা আবারো ম্যাচে ফেরে। কিন্তু নার্ভাস নাইনটির ফাঁদে পড়ে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন লিটন। তিরিপানোর বলে সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতেই সাজঘরে ফেরেন। লিটন ফেরার পর দ্রুত ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সবাইকে হতাশ করে সাইফের মতো ডাক মারেন মেহেদী হাসান মিরাজও। দল আবার বিপদে পড়ে।
২৭০ রানের মধ্যে ৮ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় টাইগাররা।
এ সময় লাদেশের ত্রাতা হয়ে ২২ গজে আসেন তাসকিন আহমেদ। দলের ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন।
লের দায়িত্ব চমৎকারভাবে পালন করেন রিয়াদ ও তাসকিন। ১৯১ রানের জুটি গড়ে ৪৬৮ রানের লক্ষ্য দাঁড় করান স্বাগতিকদের সামনে। যেখানের মাহমুদউল্লাহর অবদান দেড় শ রান।
সূত্র : প্রতিদিনের সংবাদ
এন এইচ, ০৯ জুলাই