রাজশাহী

রাজশাহীতে করোনা সার্টিফিকেট জিম্মি চক্রের ৩ জন গ্রেপ্তার

রাজশাহী, ০৮ জুলাই – রাজশাহীতে করোনা সার্টিফিকেট জিম্মিচক্রের প্রধান রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসানসহ (৪১) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বুধবার (৭ জুলাই) দিবাগত গভীর রাতে এবং বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার তিনজনসহ প্রতারকচক্রের ১৫-২০ জন সদস্য গত চার মাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারকচক্রের সদস্যদের দ্বারা বিদেশগামী অসংখ্য মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দুপুরে আরএমপি গোয়েন্দা কার্যালয়ে উপ-কমিশনার আরেফিন জুয়েল প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসানসহ গ্রেপ্তার অন্য দুইজন হলেন— রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের গাড়িচালক রফিকুল ইসলাম (৪২) এবং তার স্ত্রী সামসুন্নাহার ওরফে শিখা (৩৮)। তারেক মহানগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালি কাপাসিয়া এলাকার বাসিন্দা।

প্রেসব্রিফিংয়ে উপ-কমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে করোনা সার্টিফিকেট জিম্মিকারী প্রতারণাচক্রের ব্যাপারে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরপর এ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। মূলতঃ রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়কে কেন্দ্র করে এ প্রতারকচক্রটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এসব তথ‌্যের ভিত্তিতে রফিকুল এবং শিখাকে বুধবার দিবাগত গভীর রাতে তাদের হেতমখাঁ এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তারেক আহসানকেও একই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উপ-কমিশনার আরও জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসান বক্ষব্যাধি হাসপাতালের গাড়িচালক রফিকুলের কাছে বিদেশগামী ব্যক্তিদের করোনা টেস্টের তথ্য সরবরাহ করতেন। এরপর রফিকুলের স্ত্রী শিখা টেস্টের ফরমে উল্লেখ করা মোবাইল নম্বরে ফোন দিতেন।

ডিবি কার্যালয়ে গ্রেপ্তারদের জিঙ্গাসাবাদে রফিকুলের স্ত্রী শিখা জানান, মোবাইল ফোনে টেস্টের জন্য স্যাম্পল দেওয়া ব্যক্তিদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানাতেন। আপনি (স্যাম্পল দেওয়া ব্যক্তি) আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করলে আপনার রিপোর্ট নেগেটিভ দেওয়া হবে বলে তিনি তাদের জানাতেন।

আরেফিন জুয়েল জানান, যেসব ব্যক্তিদের ফোন দেওয়া হত তাদের সকলের রিপোর্টই সার্টিফিকেটে নেগেটিভ থাকত। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের কাছে তিন থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত টাকা নেওয়া হতো। দ্রুত এবং নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার জন্য বিদেশগামীরা ওই চক্রের কাছে টাকা দিতে বাধ্য হতেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার তিনজনসহ আরও অজ্ঞাত তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আর এ প্রতারকচক্রের আরও সাত থেকে আটজন সদস্যকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এন এইচ, ০৮ জুলাই

Back to top button