জাতীয়

করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে যে ১০ জেলা

ঢাকা, ০৮ জুলাই- রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীসহ দেশব্যাপী করোনার মৃত্যু ও সংক্রমণের ভয়াল রূপ দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত জেলা ভিত্তিক সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে: ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, ফরিদপুর ও কক্সবাজার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যায়ে করোনার তৃতীয় ঢেউ চূড়ায় উঠবে, তারপর ধীরে ধীরে নামতে শুরু করবে। এ সময়ে চলাচল, গণজমায়েত ইত্যাদি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সংক্রমণের উচ্চমুখী এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, জুলাইয়ে রোগী সংখ্যা এপ্রিল ও জুন মাসকে ছাড়িয়ে যাবে।

অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, করোনায় রোগী শনাক্তের ঊর্ধ্বগতিতে প্রয়োজনে ফিল্ড হাসপাতাল করা হবে। একইসঙ্গে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের শয্যা বাড়ানো ও জনবল পুনর্বণ্টন করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম (এমআইএস) জানায়, রাজধানী ঢাকায় (মহানগরসহ) এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ৪১১। মারা গেছেন পাঁচ হাজার ৬২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন তিন হাজার ২৮৫ জন। মারা গেছেন ২৯ জন; চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ২৮ জন। মারা গেছেন ৮৫০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৬১১ জন। মারা গেছেন চার জন।

রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৯ হাজার চারজন। মারা গেছেন ২১৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ২৩৪ জন। মারা গেছেন দুইজন। খুলনাতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৪৫৬ জন। মারা গেছেন ৩৩৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৫৮৫ জন। মারা গেছেন ১২ জন।

কুমিল্লাতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ২৮ জন। মারা গেছেন ৮৫০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৩০৩ জন। মারা গেছেন নয়জন। বগুড়াতে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৩ জন। মারা গেছেন ৩৮১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১৫৪ জন। মারা গেছেন চারজন।

নারায়ণগঞ্জে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৭৬৬ জন। মারা গেছেন ৪৬৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১৫৬ জন। মারা গেছেন তিনজন। যশোরে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ১৯১ জন। মারা গেছেন ২৫৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ৩৭৩ জন। মারা গেছেন ১২ জন।

ফরিদপুরে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৫১ জন। মারা গেছেন ২৪৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১৬৩ জন। মারা গেছেন সাতজন। কক্সবাজারে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৯৭৩ জন। মারা গেছেন ১৪৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছেন ১৭৬ জন। মারা গেছেন চারজন।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজির আহমেদ  বলেন, ‘‘জেলা পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সংক্রমিত রোগীদের জিনোম সিকুয়েন্সিং করে দেখতে হবে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের পরিস্থিতি কী? এছাড়াও ঢাকা থেকে করোনা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও নার্সের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে হবে যাতে রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। এছাড়াও সরকারীভাবে কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে সেন্টার খুলে সেখানে রাখতে হবে। তাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তারা যেন অন্য জেলায় চলে যেতে না পারে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।’’

ডা. বে-নজির বলেন, ‘যেসব জেলায় বর্তমানে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী সেসব জেলায় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা বাজেট রাখতে হবে। যাতে করে সেসব জায়গায় দ্রুত রোগীদের আনা নেওয়ার জন্য গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স নিশ্চিত করা যায়।’

‘পাশাপাশি করোনার প্রয়োজনীয় ওষুধসহ অক্সিজেন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার, অক্সিজেন কনসেনটেট্ররের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রতি ১০ লাখ রোগীতে শনাক্ত ৫৭৮০ দশমিক ৭ জন, সুস্থ ৫০২৯ দশমিক ৩ জন এবং মৃত্যু ৯২ দশমিক ০২ জন।
সূত্রঃ চ্যানেল আই
আর আই

Back to top button