ইউরোপ

সিরিয়ার আইএস কারাগারে থাকা সুইডিশ নারী এবং শিশুদের সুইডেনে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

স্টকহোম, ০৭ জুলাই – সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাসী গ্রুপ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কারাগারে থাকা সুইডিশ নারী এবং শিশুদের সুইডেনে ফিরিয়ে আনার জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। তাদেরকে কুর্দিশ স্বায়ত্তশাসিত এলাকা থেকে বহিষ্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই সুইডেনে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানা যায়।

সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (এমএফএ) এবং শিশু বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত সুইডিশ একটি প্রতিনিধি দল উত্তর সিরিয়ার একটি বন্দিশিবির পরিদর্শন করেছে। তাঁদের সফরের উদ্দেশ্য ছিল, বন্দিশিবিরে যে সব শিশুরা জন্মগ্রহণ করেছে তাঁদের পরিচয় নির্ণয় করা। এ ছাড়াও সুইডিশ-বংশোদ্ভূত শিশুদের পরিচয় সুনিশ্চিত করা।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানায়, সিরিয়ায় সফর করা প্রতিনিধি দলটি মোট ১২ জন নারী এবং ২২ জন শিশুর সাথে সাক্ষাত করেছে। শিশুদের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য নারীদের ডিএনএ টেস্ট করানোর জন্য তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছেন। বাচ্চারা সুইডিশ-বংশোদ্ভূত কি না তা নির্ণয় করার জন্যই এ প্রস্তাব।

এর আগে আইএস কারাগারে বন্দি শিশুদের জন্য সুইডেনের জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বোর্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে কয়েকটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। প্রতিবেদনে শিশুরা আইএস বন্দিশিবিরে যে পরিবেশে অবস্থান করছে তাতে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে জানানো হয়েছিল। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বন্দিশিবিরে অবস্থানরত নারী ও শিশুদের সুইডেনে ফিরিয়ে আনার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি চলছে বলে সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়।

অনুমান করা হয় যে, প্রায় ৩০ জন সুইডিশ নারী এবং প্রায় ৪০ জন সুইডিশ বংশোদ্ভূত শিশু বন্দিশিবিরে রয়েছে। কুর্দিস্তানের স্থানীয় কতৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছে যে, বন্দি নারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের ভিত্তি রয়েছে কি না। যাদের ক্ষেত্রে অপরাধের কোনো আলামত পাওয়া যাবে না, শুধুমাত্র তাঁদের এবং তাঁদের সন্তানদের একসাথে নিজ দেশে ফিরে যেতে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের গ্রহণ করতে সুইডেন সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে জানা যায়।

কুর্দিশ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সরকারি এক মুখপাত্র জানান, সুইডেনসহ বেশ কয়েকটি দেশের নারী ও শিশুদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে দেশগুলোর সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত এবং যেকোনো সময় তাঁরা বন্দিশিবির ত্যাগ করতে পারে। তবে কোনো কিছুই সুনির্দিষ্ট নয় বলেও মুখপত্র জানান।

শিশুদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’ নামে সুইডিশ একটি সংগঠন সুইডিশ শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের বন্দিশিবির থেকে সুইডেনে ফিরে ব্যাপারে যথেষ্ঠ আশাবাদি বলে জানায়। সংগঠনটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিট্রিস এরিকসন বলেছেন, ’আমরা প্রত্যাশা করি যে সুইডিশ সরকার এ ব্যাপারে পূর্ণ দায়িত্ব নেবে এবং সব শিশুদের ঘরে ফিরিয়ে আনবে।’

সুইডেনে ফিরিয়ে আনার পর সব মহিলার সম্ভাব্য সব ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার ব্যাপারে সুইডিশ কতৃপক্ষ তদন্ত করে দেখবে। এরই মধ্যে সুইডেনের উচ্চ আদালত সিরিয়া থেকে ফিরে আসা এক নারীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে, যিনি ২০১৪ সালে আইএস-এর সাথে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করার জন্য তার দুই বছরের ছেলে সব সিরিয়ায় গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য নারী ’যৌনদাসী’ হিসেবে সিরিয়াতে গিয়েছিলেন এবং আইএস-এর সাথে যোগ দিয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ
এস সি/ ০৭ জুলাই

 

Back to top button