পাবনা

চিকিৎসাব্যবস্থা সংকটে পাঠানো হচ্ছে অন্যত্র,স্থানান্তরের সময় রাস্তায়ই মারা যাচ্ছে রোগী

পাবনা, ০৬ জুলাই – পাবনায় মেডিকেল কলেজ থাকলেও নেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতাল একমাত্র চিকিৎসাসেবার ভরসাস্থল। কিন্তু এ হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ চিকিৎসাব্যবস্থা নেই। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহসহ নেই আইসিইউ। এ অবস্থায় হৃদরোগের গুরুতর রোগী গেলে সঙ্গে সঙ্গে রেফার্ড করা হয় ঢাকা বা রাজশাহীতে। এ হলো দেশের সবচেয়ে পুরোনো জেলা পাবনার ৩০ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার হাল।

এদিকে এ করোনার প্রকোপের মুখে পাবনায় আইসিইউ ও পিসিআর ল্যাবের জন্য মানুষ হাহাকার করছেন। হৃদরোগসহ করোনা আক্রান্ত গুরুতর রোগীকে আইসিইউর জন্য ঢাকা বা রাজশাহী স্থানান্তরের সময় রাস্তায়ই মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এছাড়া হৃদরোগসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ চলছে নামমাত্র। চিকিৎসক এবং আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের মহাসংকট। নেই কোনো আইসিইউ শয্যা। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। একজন চিকিৎসক দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে হৃদরোগ বিভাগ। প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকছেন নির্ধারিত শয্যার দ্বিগুণ। একদিকে নির্ধারিত রোগের নেই সুচিকিৎসা, সরঞ্জাম নেই, চিকিৎসক নেই-এমন নানা অজুহাত। আবার দিনের দ্বিতীয় হাফে বা দুপুরের পরে যদি রোগী ভর্তি করা হয় তাহলে দেখা যায় ইন্টার্ন ছাড়া কোনো চিকিৎসক নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নার্স জানান, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে রাতে ওয়ার্ড ভিজিট হয় না। ইমার্জেন্সি কল দেওয়া নিষেধ। এ অবস্থায় নার্স এবং ইন্টার্ন ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।

নাটোরের চিকিৎসাব্যবস্থায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অভাবে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। জনদুর্ভোগ বেড়েছে ব্যাপক আকারে। দুর্বল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার কারণে মারা যাচ্ছে একের পর এক করোনা রোগী। নাটোর জেলায় কোনো মেডিকেল কলেজ যেমন নেই তেমনি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালসহ কোনো হাসপাতালে নেই সিসিইউ ও আইসিইউ ব্যবস্থা। সাধারণ চিকিৎসকদের দিয়েই চলছে জেলার সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অভাবে দীর্ঘদিন থেকে ব্যবহার করা যায়নি হাসপাতালের হরমোন এনালাইজার, ইলেকট্রো লাইট ও সেল কাউন্টারের মতো অত্যাধুনিক ও মূল্যবান প্যাথলজি যন্ত্রপাতি। এক্স-রে মেশিনও সব সময় ব্যবহার হয় না। এক ব্যক্তি করোনা টেস্টসহ হাসপাতালের সব প্যাথলজির কাজ করায় দিনের কাজ দিনে কখনো শেষ হয় না, সৃষ্টি হচ্ছে জটিলতা। সংকটময় সময়ে পাঠানো হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই অক্সিজেনের অভাবে মারা যান রোগী।

তথ্যসূত্র: যুগান্তর
এস সি/০৬ জুলাই

 

Back to top button