পশ্চিমবঙ্গ

আম কূটনীতি’-তে হাসিনা-মমতা

সুমনা সরকার

আম পাঠিয়ে বন্ধুত্ব দৃঢ় করা পুরোনো কূটনৈতিক কৌশল। বর্তমান সময়ই হোক বা রাজা-বাদশাদের আমল-আমকে ঘিরে কূটনীতি নতুন নয়। হিমসাগর, ল্যাংড়া এবং লক্ষ্মণভোগ দিল্লিতে পাঠিয়ে আম কূটনীতি বজায় রেখেছেন মমতা। তবে কেবল অন্তর্দেশীয় রাজনীতি নয় দু’দেশের মধ্যে চাপা টেনশন মেটানোই হোক বা বিদেশে বাণিজ্য বিস্তারের হাতিয়ার-দৌত্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। সৌভ্রাতৃত্ব ও উষ্ণতার দূত হিসাবে আমকেই বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনাও।

আম পাঠিয়ে বন্ধুত্ব দৃঢ় করা পুরোনো কূটনৈতিক কৌশল।  বর্তমান সময়ই হোক বা রাজা-বাদশাদের আমল-আমকে ঘিরে  কূটনীতি নতুন নয়। ফলের রাজা আম বরাবরই অঙ্গ ছিল টনীতির। বাবর থেকে শাহাজাহান-প্রায় সব মুঘল শাসকেরা ছিলেন আম রসিক। বাবর নিজে আম খেতে ভালবাসতেন। ইতিহাসের পরনো দলিল থেকে জানা যায়, তেমনি রাজসভায় আগত বাবর নিজে আম খেতে ভালবাসতেন। ইতিহাসের পরনো দলিল থেকে জানা যায়, তেমনি রাজসভায় আগত বিদেশি অতিথি ও অন্য বাদশাদের তিনি নিয়মিত ভাবে আম ভেট পাঠাতেন। একধাপ এগিয়ে আকবর বিহারের দ্বারভাঙ্গার কাছে লাখিবাগে প্রায় লক্ষাধিক আম গাছের চারা পুঁতেছিলেন। বাদশাদের  জন্য নির্দিষ্ট থাকা সে সব আম চেখে দেখার অনুমতি ছিল না ।আম-জনতার। আইন-ই আকবরিতে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে, এ দেশের বিভিন্ন প্রজাতির আমের স্বাদ ও কোন মাটিতে কোন আম ভাল হয় তা নিয়েও।

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর সেই আম দৌত্য রাজ্যে চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।  প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার সমস্ত মন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য ল্যাংড়া,হিমসাগর, ফজলি ও গোলাপখাস পাঠিয়ে থাকেন মমতা। একুশের ভোটে বিরোধী বিজেপির সঙ্গে মারকাটারি লড়াই হয়েছে তৃণমূলের। মমতা ৃ-মোদী কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলেননি। ভোট পরবর্তী সময়ও কেন্দ্র রাজ্য় দ্বন্দ্ব বর্তমান। আর এর মাঝেও দিল্লির নেতাদের আম উপহার পাঠালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।  আম উৎপাদনে দেশের অন্যান্য রাজ্যের র তুলনায় অষ্টম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এরাজ্যে আম আয়ের অন্যতম উৎস। বিভিন্ন প্রজাতির আমের জন্য রয়েছে জগৎ জোড়া নাম। আর সেই আম তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর  উপহার  পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।

হিমসাগর, ল্যাংড়া এবং লক্ষ্মণভোগ দিল্লিতে পাঠিয়ে আম কূটনীতি বজায় রেখেছেন মমতা। তবে কেবল অন্তর্দেশীয় রাজনীতি নয় দু’দেশের মধ্যে চাপা টেনশন মেটানোই হোক বা বিদেশে বাণিজ্য বিস্তারের হাতিয়ার-দৌত্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। সৌভ্রাতৃত্ব ও উষ্ণতার দূত হিসাবে আমকেই বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশর প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনাও। । ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী মোদী ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ওপার বাংলার ঐতিহ্যশালী আম পাঠিয়েছেন হাসিনাও ।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই আম কূটনীতিকে বিশেষ গুরুত্বের চোখেই দেখা হচ্ছে। অতীতে ইলিশ ও আম কূটনীতি নিয়ে বহুবার বাংলাদেশে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে হাসিনাকে। বর্তমানে দেশে ভ্যাকসিনের ঘাটতি রয়েছে। তিস্তা চুক্তিও ঝুলে রয়েছে। এই আবহে হাসিনার আম কূটনীতি বলে দিচ্ছে তিনি ভারতের সঙ্গে সৌহার্দ্যের সম্পর্ক রক্ষা করতে কতটা বদ্ধপরিকর।

Back to top button