সার্টিফাইড কপি হাতে পেলে ২৪ ঘণ্টায় ৫৪ হাজার নিয়োগের ফল প্রকাশ
ঢাকা, ০৫ জুলাই – বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সচিব ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেছেন, আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। এ রায় যুগান্তকারী। সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে আশা করছি তিন-চার দিনের মধ্যে রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পাবো। কপি হাতে পাওয়ার পরই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৫৪ হাজার নিয়োগের ফল প্রকাশ করা হবে।
সোমবার মুঠোফোনে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সার্টিফাইড কপির জন্য অপেক্ষা করছি। এটা পাওয়ার পরই নিয়োগ দেয়া হবে।’
চলমান বিধিনিষেধে ফল প্রকাশ সম্ভব কী না এমন প্রশ্নে ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেন, ‘আমরা আদালতে খবর নিয়েছি। রায়ের সার্টিফাইড কপিতে প্রধান বিচারপতিসহ ৬ জন বিচারপতির স্বাক্ষর লাগবে। করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় অনেক বিচারপতি অফিসে আসছেন না। আমরা তদবির করেও এটি বের করার চেষ্টা করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জানা মতে রায়ের ড্রাফট তৈরি করা হয়েছে, তবে বিচারপতিগণ দেখে এটি স্বাক্ষর করবেন।’
কোনো আইনি জটিলতা দেখছেন কী না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যেহেতু অ্যাপিলেড ডিভিশনের রায় হয়েছে সেহেতু নতুন করে আইনি জটিলতায় পড়ার সুযোগ নেই। তবে মাঝখানে বয়স নিয়ে সমালোচনা হয়েছিলো যে কারণে বিচার বিশ্লেষণ করেই ফল প্রকাশ করা হবে।’
এনটিআরসিএ সচিব জানান, আমি যতদূর জানি পূর্ণাঙ্গ রায়টি ২৬/২৭ পৃষ্ঠার হবে। দুই-তিন পৃষ্ঠার একটি আদেশ হলে শটকাটে বোঝা যেতো। যেহেতু এটি পূর্ণাঙ্গ রায় এটি না দেখে ফল প্রকাশ ঠিক হবে না।
তিনি দাবি করেন, নিয়োগ ফল যখন হয়ে যাবে তখন সবাই এর স্বচ্ছতা দেখতে পারবে। এখানে সামনের কাউকে বাদ দিয়ে পেছনের কাউকে নেয়া হবে না। এটির জন্য আমরা ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে রাখছি।
এদিকে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছে চাকরি প্রত্যাশীরা। তারা বলছেন, আন্দোলন থেকে আদালত সব পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ হলেও ফলে আটকে গেছেন তারা। এমনকি এ বিষয়ে এনটিআরসিএকে দূষছেন চাকরি প্রত্যাশীরা।
এ বিষয়ে ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম বলেন, ফল প্রকাশের জন্য আনুষাঙ্গিক সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকারের চলমান বিধি-নিষেধ শেষ হলেই ফল প্রকাশ করা হবে। এজন্য নিয়োগ প্রত্যাশীদের আর অল্প কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলেন তিনি।
এনটিআরসিএ সূত্র জানায়, গত ২৯ জুন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর সঙ্গে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ নিয়ে পরামর্শ করে কর্তৃপক্ষ।
ওই বৈঠকে উপস্থিত এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা বলেন, উপমন্ত্রী রায়ের সার্টিফাইড কপি হাত পাওয়ায় আইনজীবীদের রায় বিচার-বিশ্লেষণ করে ফল প্রকাশ করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
তবে আড়াই হাজার শিক্ষক নিয়োগ প্রত্যাশীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর বিচার-বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ (রিভিউ) নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে তিনি কপি দেখার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
ফল প্রত্যাশীরা বলছেন, অনেক দিন হয়েছে আমরা এই নিয়োগের ফলের আশায় আছি। প্রায় ২ বছর পর এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। করোনার এই মহামারিতে অন্যান্যা নিয়োগ পরীক্ষাও বন্ধ তাই আমরা চাই দ্রুত এনটিআরসি ফলাফল ঘোষণা করুক।
তৃতীয় গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী রাশেদ হাসান বলেন, এই নিয়োগে আবেদনের জন্য অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করেছিলাম। কিন্তু এতোদিন পার হলেও এখনও ফল প্রকাশ হয়নি, যা দুঃখজনক।
এনটিআরসিএর কাছে দ্রুত এ নিয়োগের ফল প্রকাশের দাবি জানান তিনি।
তৃতীয় গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ বলেন, ফল প্রকাশ নিয়ে এনটিআরসিএ যে তালবাহানা শুরু করেছে তা মানা যায় না। আমরা যে কোন উপায়ে দ্রুত প্রকাশ করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের হস্তক্ষেপ চাই। যদি ফল প্রকাশ দ্রুত না করা হয় তবে কঠোর আন্দোলনে যাবার ঘোষণা দেন তিনি।
সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/০৫ জুলাই ২০২১