সম্পর্ক

যে ৫টি লক্ষণে জানবেন দূরত্ব বাড়ছে ভালোবাসার মানুষটি থেকে!

বেশ কিছুদিন ধরেই সম্পর্কটা খারাপ যাচ্ছে। কারণে-অকারণে সে রেগে যাচ্ছে। ভালো লাগার বিষয়গুলোও কমে গিয়েছে, কোন কিছুই যেন আগের মত ভালো লাগে না। খুব অল্পতেই ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে আপনাদের, একসাথে সময় কাটানো বা দাম্পত্যের স্বাভাবিক শারীরিক প্রেমের ব্যাপারেও অনীহা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে দুজনের মানসিক যোগাযোগটা যেন একেবারেই নেই আজকাল, নিজেকে সারাক্ষন বিচ্ছিন আর একা বোধ করতে শুরু করেছেন।

বেশিরভাগ প্রেমিক যুগল বা দম্পতিরাই জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে এ ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। অনেক দিন প্রিয়ে গেলে সম্পর্কের প্রতি অবহেলা করতে দেখা যায় অনেককেই। অনেক সময় দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ মনে জমিয়ে রাখলেও সম্পর্কের অবনতি ঘটে। বাড়তে শুরু করে মানসিক দূরত্ব। নিজের অজান্তেই এক সময়ে দূরত্বটা এত বেশি হয়ে যায় যে সেটা আর অতিক্রম করা যায় না। শত চাইলেও না। তাই একদম শুরুতেই বিপদসংকেত চিনে নেয়া জরুরি। তাতে নিজের সাধ্যমত সবকিছুই করা যায়, একটু চেষ্টা করলেই মিতিয়ে ফেলা যায় দূরত্ব।

তুচ্ছ বিষয়ে অকারণ ঝগড়া
একটি সম্পর্কে ঝগড়া হতেই পারে। কিন্তু তা যদি হয় তুচ্ছ সব বিষয় নিয়ে আর খুব ঘন ঘন, তাহলে বুঝে নিন যে আপনার সম্পর্কটি ঝুঁকিপূর্ণ একটি সময় পার করছে। প্রতিদিনের নানান তুচ্ছ বিষয়ে ভুল ধরা, বিরক্তি প্রকাশ,অকারণ অনীহা কিংবা সন্দেহ- ইত্যাদি থেকে সৃষ্টি হওয়া ঝগড়া গুলো সম্পর্কের জন্য খুবই ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক সময় ছোট ছোট বিষয়ে ঝগড়া লেগে যায় আর সেটা অনেক বড় আকার ধারণ করে এবং সহজেই সম্পর্কে বিচ্ছেদের মত সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনার ভালোবাসার সম্পর্কে এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে চেষ্টা করুন ধৈর্য ধরে সেটার সমাধান করতে। দুজনেই উত্তেজিত হয়ে রাগ করলে তো সমাধান হবে না, তাই শান্ত থাকাটা খুব জরুরি।

একঘেয়ে লাগা
একসাথে অনেকটা সময় পাশাপাশি করার পর কিছুটা একঘেয়ে লাগার সম্ভাবনা আসলেই থেকেই যায়। কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে একঘেয়ে লাগলে কিংবা পরস্পরকে বিরক্ত লাগতে শুরু করলে সেটা বিপদ সংকেতই বটে। পরস্পরের মাঝে নতুনত্ব না পেলে অনেক সময়েই যুগলদের মধ্যে একঘেয়েমী দেখা দেয়, ক্রমশ সেটা ব্রেক আপ বা পরকীয়ার মত সমস্যার দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে আমরা মানুষ, টেলিভিশন নই যে চ্যানেল ঘোরালেই নতুনত্বের স্বাদ মিলবে প্রতিবার। আর ভালোবাসার সম্পর্ক হচ্ছে প্রিয় সিনেমার মত, যা বারবার দেখলেও পুরনো হয় না। তাই একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক চাইলে প্রতিদিন নতুনত্ব খুঁজবেন না। বরং নিজে কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করুন আপনাদের সম্পর্কে। দেখবেন যে তিনিও একই চেষ্টা করছেন আর সবকিছু হয়ে উঠেছে উপভোগ্য।

কথা খুঁজে না পাওয়া
দীর্ঘ দিন পাশে থাকার পর অনেক যুগলই কথার অভাবে ভোগে। দুজনে দুজনকে কী বলবে যেন কিছুই খুঁজে পায় না। আগের মত সারাদিন গল্প করে কাটিয়ে দেয়াকেও অসম্ভব বলে মনে হয় তখন। দুটি মানুষ একটি সম্পর্কে থেকে বা একই ছাদের নিচে থেকেও কথা খুঁজে না পেলে স্বাভাবিক ভাবেই সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এরকম পরিস্থিতিতে প্রতিদিন অফিসে কি হলো, কি রান্না হয়েছে, টেলিভিশনে কি দেখিয়েছে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলাপ চালিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন। ধীরে ধীরে কথা বলার অভ্যাসটি আবার ফিরে আসবে।

একে অপরকে খুশি রাখার চেষ্টা না করা

সম্পর্কের শুরুর দিকে দুজনে দুজনকে খুশি রাখার অনেক রকম চেষ্টাই করে থাকি আমরা। কখনো হুট করে উপহার নিয়ে আসি, আবার কখনো ফুলের তোড়া নিয়ে এসে হাজির হই। কিংবা দুজনে মিলে দূরে কোথাও ঘুরতে চলে যাই কয়েকদিনের জন্য। কিন্তু সম্পর্কের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এইসব কোথায় যেন হারিয়ে যায়। সম্পর্ক যত পুরোনোই হোক না কেন, চেষ্টা করুন দুজনে দুজনাকে কিছুটা হলেও খুশি রাখার চেষ্টা করতে। মাঝে মাঝে উপহার দিয়ে চমকে দিতে পারেন একে অপরকে। অথবা প্রিয় মানুষটির পছন্দের কোনো বিশেষ খাবার রান্না করে চমকে দিন তাকে।

যত্নশীলতার অভাব
সম্পর্কের শুরুতে প্রিয় মানুষটি কি খাবে,তার ঠান্ডা কিংবা গরম লাগছে কিনা,তার কী প্রয়োজন, কী ভালো লাগা-মন্দ লাগা ইত্যাদি সব নানান প্রয়োজনের দিকে খেয়াল থাকে সবারই। কিন্তু ধীরে ধীরে সবাই যেন কিছুটা স্বার্থপর হয়ে যায়। ফলে সম্পর্ক ঝুঁকিগ্রস্ত হয়ে যায় নিজের অজান্তেই এবং অনেকেই সম্পর্কের উপর বিরক্ত হয়ে অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। তাই সম্পর্কের বয়স যতই হোক না কেন একে অপরের প্রতি সবসময়েই যত্নশীল থাকার চেষ্টা করুন।

এম ইউ

 

Back to top button