মৌলভীবাজার

পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পালালো স্বামী

মৌলভীবাজার, ০৪ জুলাই – মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।

রোববার সকালে উপজেলার রতুলী গাংকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ রহিমা বেগম সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রহিমা বড়লেখার গাংকুল গ্রামের রফিক মিয়ার মেয়ে। তার স্বামীর নাম শিপন আহমদ। তিনি একই উপজেলার রতুলী আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে।

দগ্ধ রহিমার ভাই রাজু আহমদ বলেন, প্রায় তিন বছর আগে শিপনের সঙ্গে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার ওপর নির্যাতন চালাতেন দুলাভাই। তাদের দুই বছরের একটি ছেলে রয়েছে।

সম্প্রতি আমার বোনকে মারধর করেন স্বামী শিপন ও তার পরিবারের লোকজন। এ কারণে মাসখানেক আগে বোনকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসি। নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে রহিমা শ্বশুরবাড়ি যেতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন গ্রামের লোকজন। এরপর থেকে রহিমা আমাদের বাড়িতে থাকেন।

রাজু আরো বলেন, আমার বোনজামাই পেশায় মোটরসাইকেল মেকানিক। শনিবার রাতে কাজ শেষে আমাদের বাড়িতে আসেন। ভোরে ঘুম ভাঙার আগেই রহিমার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান। পরে বোনের চিৎকারে ঘরের লোকজন উঠে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এর আগেই রহিমার শরীরের অধিকাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকরা রহিমাকে আইসিইউতে রাখার কথা বললেও আইসিইউ সংকট রয়েছে বলে জানানো হয়। এখন তাকে বাঁচানোর কোনো উপায় দেখছি না।

পুলিশ জানায়, শনিবার ভোরে রহিমার চিৎকারে বাড়িতে দৌড়ে যান এলাকার লোকজন। এর আগেই রহিমার শরীর ঝলসে যায়। তাকে বাঁচানোর প্রাণান্তর চেষ্টায় পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে গেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বখাটে হিসেবে এলাকায় পরিচিত শিপন। তার চলাফেরাও খারাপ লোকদের সঙ্গে। আর স্ত্রীকে নির্যাতনের বিষয়টি অনেক পুরনো ঘটনা। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও তিনি না শুধরানোয় বাবার বাড়ি চলে যান স্ত্রী। সেখানে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পেট্রল ঢেলে গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান শিপন।

বড়লেখা থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পরিবারিক কলহের জেরে শিপন পেট্রল ঢেলে স্ত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় শিপনের মা, দুই ভাই, চাচাতো ভাইকে আটক করা হয়েছে। শিপনকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তথ্যসূত্র: নতুন সময়
এস সি/০৪ জুলাই

 

Back to top button