জাতীয়

৩৫ জেলায় আইসিইউ নেই!

রাজবংশী রায়

ঢাকা, ০৪ জুলাই – দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর আগে থেকেই বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্য বিভাগকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এখনও আহ্বান জানিয়ে চলেছেন। তবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে খুবই কম। করোনা সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসায় তা পর্যাপ্ত নয়। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রোগীর চাপ অনেক বেশি। প্রয়োজন আছে এমন অনেক রোগী সময়মতো আইসিইউ পাচ্ছেন না। কারও কারও আইসিইউ পেতে কয়েক দিন লেগে যায়। অপেক্ষা করতে করতে অনেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। সরকারি পরিসংখ্যান মতেই, ৩৫ জেলায় আইসিইউ সুবিধা পাচ্ছেন না রোগীরা। সারাদেশের মোট আইসিইউ শয্যার ৭৬ শতাংশই ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতে। এর মধ্যে রাজধানীতেই ৭৩ শতাংশ।

করোনা সংক্রমণ শুরুর পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট চালুর নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের বিভাগীয় পর্যায়ে অথবা রাজধানীতে ছুটতে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বহুজন পথেই মারা যাচ্ছেন।

সংশ্নিষ্টদের ভাষ্য, আইসিইউ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবলের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ চাইলেও রাতারাতি জনবল তৈরি করা সম্ভব হবে না। দক্ষ জনবল ছাড়া শুধু আইসিইউ শয্যা স্থাপন করে কোনো লাভ হবে না।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, স্বাস্থ্য বিভাগের বক্তব্য সঠিক নয়। আইসিইউ চিকিৎসা পদ্ধতি সম্মিলিত। রোগীর যে বিভাগের চিকিৎসক প্রয়োজন হয়, সেই বিভাগের চিকিৎসকই সেবা নিশ্চিত করবেন। শুধু সার্বক্ষণিক যেসব চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মী থাকবেন, তাদের প্রশিক্ষিত হতে হবে। দ্রুততার সঙ্গে সেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব। স্বল্পমেয়াদে প্রশিক্ষণ দিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীদের জেলা পর্যায়ে পদায়ন করে সমস্যার সমাধান করা যায়।

সারাদেশে মোট আইসিইউ শয্যা এক হাজার ১৫৭টি। এর মধ্যে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ফাঁকা ছিল ৪৬৪টি। রাজধানীর ৮২১ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ৩৪৫টি। রাজধানীর সরকারি ৩৮৪ শয্যার মধ্যে ফাঁকা ১১৭টি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে যাদের তীব্র শ্বাসকষ্ট থাকে তাদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে। এসব রোগীর চিকিৎসার জন্য আইসিইউ শয্যা, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর ও এইডিইউ শয্যার প্রয়োজন হয়। হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন থাকলে শ্বাসকষ্টের রোগীদের চিকিৎসা সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়। সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের মাধ্যমে মিনিটে একজন রোগী সাধারণ শয্যায় ভর্তি থেকে ১৫ লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন সাপোর্ট পাবেন। তবে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য আইসিইউর প্রয়োজন। দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর আগে থেকে এসব বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে বারবার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল ছাড়া আইসিইউ চালানো যাবে না। কিন্তু জরুরি প্রয়োজনের সময় ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ দরকার নেই। সংক্ষিপ্ত সময়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনবল তৈরি করে কাজে লাগাতে হবে। এ ধরনের প্রশিক্ষণে এক মাসের বেশি প্রয়োজন হয় না। বিষয়টি সদিচ্ছার। স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম থাকতে হতো করোনার আগে চলা নীতি নিয়ে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগ চলছে করোনার পেছনে। এভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।’

একটিও আইসিইউ নেই: ঢাকা বিভাগের মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর; ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা ও শেরপুর; চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম জেলা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া; রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও জয়পুরহাট; রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট; খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল; বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠি এবং সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলায় একটিও আইসিইউ শয্যা নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুন প্রথমে ১৮টি শয্যা সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আওতায় আনা হয়। পরে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় তা ৭২ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু জেলায় কোনো আইসিইউ নেই। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

রাজশাহী বিভাগের আরও তিনজন সিভিল সার্জন জানান, আইসিইউ, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা থাকলে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হতো। কিন্তু এখন সেটি সম্ভব হচ্ছে না।

৭৬ শতাংশই ঢাকায়: করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগে সারাদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আইসিইউর সংখ্যা ছিল ২৯৮টি। গতকাল পর্যন্ত তা বেড়ে ৬৯১টিতে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ করোনাকালে আইসিইউ শয্যা বেড়েছে ৩৬১টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও ৪৬৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৪৩৭টি।

ঢাকা বিভাগে সরকারি-বেসরকারি মিলে আইসিইউ রয়েছে ৮৭৭টি। এর মধ্যে ৮২১টি শয্যা রয়েছে রাজধানী ঢাকায়। ঢাকার সরকারি হাসপাতালে ৩৮৪টি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৪৩৭টি আইসিইউ রয়েছে। এ হার ৭২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ বিভাগের অন্যান্য জেলায় আরও ৫৬টি আইসিইউ রয়েছে। এ হিসেবে মোট আইসিইউর ৭৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ ঢাকা বিভাগে।

চট্টগ্রাম বিভাগে আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৬৮টি, রাজশাহী বিভাগে ৪৬টি, খুলনায় ৪০টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫টি, রংপুর বিভাগে ২৬টি করে, সিলেট বিভাগে ৩১টি এবং বরিশাল বিভাগে ২৫টি। সব মিলিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে মাত্র ২৯ জেলায় আইসিইউ সুবিধা রয়েছে।

চট্টগ্রামের তিন জেলায় আইসিইউ: আমাদের প্রতিবেদক শৈবাল আচার্য্য জানান, চট্টগ্রাম বিভাগে মোট ৬৮টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ৩৮টি, যার ২৮টি করোনা সংক্রমণের পর স্থাপন করা হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ১০টি, জেনারেল হাসপাতালে ১৮টি ও হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজারে ১০টি, কুমিল্লায় ২০টি আইসিইউ রয়েছে। এ বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে একটিও আইসিইউ নেই।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির দাবি, যেসব জেলায় আইসিইউ পরিচালনার জনবল নেই, সেখানে এই ব্যবস্থাপনা চালু করেও কোনো লাভ হবে না। কারণ, প্রশিক্ষিত জনবল ছাড়া আইসিইউ চালানো সম্ভব নয়।

রাজশাহী ও বগুড়া ছাড়া কোথাও আইসিইউ নেই: সাংবাদিক সৌরভ হাবিব ও মোহন আকন্দ জানান, রাজশাহী মহানগরী ও বগুড়া সদর ছাড়া বিভাগের কোথাও আইসিইউ শয্যা নেই। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০টি, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮টি, টিএমএসএস হাসপাতালে ১০টি এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ৮টি রয়েছে। এ বিভাগে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের রাজশাহী অথবা বগুড়ায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে শয্যা খালি না থাকলে ঢাকায় পাঠানো হয়।

সিলেটে ৩ হাসপাতালে আইসিইউ :প্রতিবেদক চয়ন চৌধুরী জানান, সিলেট বিভাগে সরকারিভাবে ৯টি হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা দেওয়া হলেও মাত্র তিনটিতে আইসিইউ সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৬, এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১০টি এবং মৌলভীবাজারে পাঁচটি শয্যা রয়েছে। শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে ‘কভিড ডেডিকেটেড’ ঘোষণার পর আইসিইউ ইউনিট চালু করা হয়।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, আইসিইউ পরিচালনার জন্য চিকিৎসক ও নার্স থাকলেও অন্য জনবলের সংকট রয়েছে।

বরিশাল আর ভোলা ছাড়া কোথাও নেই: সাংবাদিক পুলক চ্যাটার্জি জানান, বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ২২টি এবং ভোলায় ৩টি আইসিইউ রয়েছে। এ ছাড়া বিভাগের অন্য কোথাও আইসিইউ সুবিধা নেই। শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলামও আইসিইউ শয্যা ব্যবস্থাপনার জন্য দক্ষ জনবলের সংকটের কথা বলেন।

দুই হাসপাতালে আইসিইউ: সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৩টি এবং জামালপুরে দুটি শয্যা রয়েছে। তবে জামালপুরের আইসিইউ শয্যা তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আইসিইউ ইউনিট চালু করতে কমপক্ষে ৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ১৫ জন নার্স ও লোকবলসহ প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। থাকতে হবে আলাদা প্যাথলজি বিভাগ। এর কোনোটাই নেই এ হাসপাতালে। এ কারণে ইউনিটটি চালু করা যাচ্ছে না।

চালু নেই মাগুরার আইসিইউ: সাংবাদিক মামুন রেজা জানান, খুলনার ১৩০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ শয্যা ছিল। গত ২০ মে আরও ১০টি আইসিইউ শয্যা চালু করা হয়। এ ছাড়া সাতক্ষীরায় আটটি, মেহেরপুরে দুটি, বাগেরহাটে তিনটি, যশোরে তিনটি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। আর মাগুরায় চারটি আইসিইউ রয়েছে, তবে তা চালু নেই। কর্তৃপক্ষ বলছে জনবল সংকটের কথা। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চার শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। একই অবস্থা নড়াইল জেলা সদর হাসপাতালের; ১০ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের কথা থাকলেও তা হয়নি।

উত্তরবঙ্গের ভরসা রংপুর-দিনাজপুর: সাংবাদিক মেরিনা লাভলী জানান, রংপুর বিভাগের মধ্যে রংপুর ডেডিকেডেট আইসোলেশন হাসপাতালে ১০টি এবং দিনাজপুর এম রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এর বাইরে আইসিইউ সুবিধা নেই। কয়েকটি জেলার সিভিল সার্জনবলেছেন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা জেলা পর্যায়ে নেই।

স্বাস্থ্য বিভাগের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আবু জাকিরুল ইসলাম বলেন, আইসিইউ শয্যা স্থাপন করলেই মানুষ সেবা পাবে না। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত জনবল প্রয়োজন। সেটি অনেক প্রতিষ্ঠানে নেই। এ অবস্থায় আইসিইউ স্থাপন করলেও কোনো লাভ হবে না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, অধিকাংশ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হয়েছে। রাতারাতি সবকিছু পাল্টে দেওয়া সম্ভব নয়। বিশ্বব্যাপী সব দেশ একটি ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের যেসব সামগ্রীর প্রয়োজন, সেগুলো অন্যান্য দেশেরও প্রয়োজন। সুতরাং সব সময় চাহিদা অনুযায়ী দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসা সামগ্রী পাওয়া যায় না। এর পরও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ধাপে ধাপে জেলাগুলোতে আইসিইউ, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলাসহ সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন স্থাপন করা হবে।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ০৪ জুলাই

Back to top button