ইয়েমেনের এক অভিনেত্রী ও মডেলকে মিথ্যা মামলায় আটক করে রেখেছে হুতি বিদ্রোহীরা
সানা, ০৩ জুলাই – ইয়েমেনের এক অভিনেত্রী ও মডেলকে ‘অশালীন আচরণ’ এবং মাদক রাখার অভিযোগ তুলে দেশটির হুতি বিদ্রোহীরা মিথ্যা মামলা দিয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
২০ বছর বয়সি ইনতিসার আল-হাম্মাদি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করছেন। বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত রাজধানী সানার কারাগারে তাকে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আটক রাখা হয়েছে।
তার আইনজীবী বলেছেন, এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হাম্মাদি সানায় আরও তিনজনের সঙ্গে গাড়িতে যখন যাচ্ছিলেন, তখন হুতি বাহিনীর সদস্যরা গাড়িটি থামায় এবং সবাইকে গ্রেফতার করে।
হুতিদের পরিচালিত জেলখানায় তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে এবং কারাগারের হাসপাতালে ইনতিসার আল-হাম্মাদিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তার আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, ইনতিসার আল-হাম্মাদিকে যারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন, তাকে বাক্যবাণে হয়রানি করেছে, বর্ণবাদী অপমানজনক কথাবার্তা বলেছে এবং চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে একটি নথি সই করতে বাধ্য করেছে।
এমনকি তাকে ‘কুমারীত্বের পরীক্ষা’ দিতে বাধ্য করার হুমকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তার কৌঁসুলিরা।
তার আইনজীবী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছেন, হাম্মাদির মামলার কাগজপত্র দেখতে তাকে বাধা দেয়া হয়েছে এবং এ মাসের গোড়ার দিকে হাম্মাদিকে দুইবার যখন আদালতে হাজিরা দিতে হয়, তখন তার আইনজীবীকে আদালতে তার প্রতিনিধিত্ব করতে দেয়া হয়নি।
হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তারা এই ঘটনা সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেনি।
হাম্মাদির বাবা ইয়েমেনি এবং মা ইথিওপিয়ান। তিনি চার বছর ধরে ইয়েমেনে মডেল হিসাবে কাজ করছেন। তিনি ইয়েমেনের দুটি টেলিভিশন সিরিজেও অভিনয় করেছেন।
হাম্মাদি রক্ষণশীল মুসলিম সমাজের বিধি উপেক্ষা করে কখনও কখনও হিজাব ছাড়াই তার ছবি অনলাইনে পোস্ট করেছেন।
হাম্মাদিকে চোখ বেঁধে ফৌজদারি তদন্তকারী সংস্থার একটি দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে ১০দিন আটকে রাখা হয়। সেসময় কারও সঙ্গে তাকে যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি বলে জানান তার আইনজীবী।
তার ফোন জব্দ করা হয় এবং তার মডেলিংয়ের ফটোগুলোকে অশালীন কাজ বলে বিবেচনা করা হয়। সে কারণে হুতিদের চোখে তিনি পতিতা বলে গণ্য হন বলে জানান হাম্মাদির আইনজীবী।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, মে মাসের শেষ দিকে একদল মানবাধিকার কর্মী ও একজন আইনজীবীকে মডেল হাম্মাদির সঙ্গে জেলখানায় দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
তারা বলেন, যারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তারা হাম্মাদিকে চোখ বাঁধা আবস্থায় একটি নথিতে সই করতে বাধ্য করেন।
ওই নথিটি ছিল কার্যত বেশ কিছু অপরাধের জন্য ‘স্বীকারোক্তি।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর
এস সি/০৩ জুলাই