সাজ-সজ্জা

পদযুগলকে নজরকাড়া সুন্দর করতে ৩টি সহজ কৌশল

শীত শুরু তো ত্বকের রুক্ষতা শুরু। আমরা ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে শীতকালে কত কিছুই না করে থাকি। সকালে বাসা থেকে বের হবার সময় সানস্ক্রিন, বাসায় ফিরে যত্ন-আত্তি, রাতে ঘুমোবার আগে ক্রিম লাগানো ইত্যাদি আরও কত কি। কিন্তু এই সব করতে গিয়ে বেশিরভাগ সময় পায়ের দিকে নজর দিতে ভুলে যাই। ভুলে যাই আমাদের পায়েরও দরকার শীতকালীন রুক্ষতা থেকে মুক্তি। যতই মুখ ও দেহের ত্বকের পেছেনে সময় ব্যয় করি না কেন, পায়ের দিকে নজর না গেলে শরীরের পুরোপুরি যত্ন হয় না। শীতের রুক্ষতা থেকে রক্ষা করে পা-কে কোমল ও সুন্দর করতে বেশি কিছু লাগে না। দরকার শুধু আপনার একটুখানি সময়। দিন শেষে বাসায় ফিরে সময় করতে না পারলেও রাতে একটু সময় বের করে পায়ের যত্নে ব্যয় করুন। জেনে নিন অল্প সময় ব্যয়ে কিভাবে শীতের রুক্ষতা থেকে রেহাই দেবেন আপনার পা-কে। আর পা-কে করে তুলবেন নজর কাড়া সুন্দর।

পায়ের রুক্ষতা দূর করতে তেলের ব্যবহার
নারকেল তেল ও ভিটামিন ই তেল ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে বেশ কার্যকরী উপাদান। মুখের ত্বক অনেক নরম হয় বিধায় মুখে সরাসরি নারকেল তেল ও ভিটামিন ই তেল ব্যবহার করা যায় না, ব্রনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু নারকেল তেল ও ভিটামিন ই তেল অনায়াসে পায়ের ত্বকে ব্যবহার করা যায়। নারকেল তেল ব্যবহার করলে পায়ের ত্বক নরম ও কোমল হয়। রুক্ষতা দূর হয়। আবার ভিটামিন ই তেল ব্যবহারের পদ্ধতি জানা থাকলে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনি আপনার পা ব্লিচ করতে পারবেন। এছাড়াও অলিভ অয়েল ও পায়ের ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করলে পায়ের ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে পারবেন।

পদ্ধতিঃ
নারকেল তেল ও অলিভ অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র তেলগুলো হালকা গরম করে ম্যাসাজ করলেই পায়ের ত্বকে কমনীয়তা ও উজ্জলতা লক্ষ্য করতে পারবেন। প্রতিদিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। আর পায়ের ত্বক ব্লিচ করতে চাইলে আপনার দরকার হবে ভিটামিন ই তেল ও সামান্য কাঁচা হলুদ বাটা। প্রথমে একটি কাঁচা হলুদ বেটে নিন। তারপর এতে ভিটামিন ই তেল পরিমাণ মত মিশিয়ে পেস্টের মত তৈরি করুন। তারপর এই মিশ্রণটি পুরো পায়ে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ঘষে তুলে নিন। এই মিশ্রণটি শুধুমাত্র পায়ের ত্বকের উজ্জলতাই বাড়ায় না, পাশাপাশি পায়ের ত্বককে টানটান করে তোলে।

পায়ের মৃতকোষ দূর করতে মুলতানি মাটি কিংবা ময়দা
পা ভালো ভাবে স্ক্রাব না করা হলে পায়ে কালচে ভাব চলে আসে। অর্থাৎ স্ক্রাবিং না করার ফলে পায়ের ত্বকের উপরিভাগে মৃতকোষ জমা হয়। যার ফলে পা কালো দেখায়। এর জন্য আপনার দরকার খুব ভালো একটি স্ক্রাবার। মুখের ত্বকের জন্য যে স্ক্রাবার ব্যবহার করেন তাতে পায়ের ত্বক ঠিক মত স্ক্রাব হয় না। আপনার দরকার আরও শক্তিশালী স্ক্রাবারের। প্রাকৃতিক উপায়ে স্ক্রাব করতে চাইলে আপনি খুব সহজেই বাসায় একটি স্ক্রাবার তৈরি করে নিতে পারেন। পায়ের মৃতকোষ দূর করে পা কে উজ্জলতা দিতে এর জুরি নেই।

পদ্ধতিঃ
ঘরোয়া এই স্ক্রাবারটির জন্য আপনার লাগবে মুলতানি মাটি, দুধ ও মধু। যদি মুলতানি মাটি না পান তবে ময়দা দিয়েও স্ক্রাবারটি তৈরি করতে পারবেন। প্রথমে একটি বাটিতে ৩ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি কিংবা ময়দা মিয়ে তাতে ২ টেবিল চামচ মধু মেশান। এরপর এতে ১ টেবিল চামচ দুধ দিন। মিশ্রণটিকে পেস্টের মত তৈরি করে নিন। এরপর এই মিশ্রণটি পায়ে লাগিয়ে রাখুন। ইচ্ছে করলে এটি আপনি হাতেও লাগাতে পারেন। না শুকানো পর্যন্ত মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে হাত দিয়ে ঘষে তুলে নিন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ১ বার এভাবে স্ক্রাব করুন।

পায়ের তলা মসৃণ করতে ভিনেগার ও লবণ
অনেকেই পায়ের গোড়ালি নিয়ে বিপদে পড়েন। শক্ত, মোটা ও খসখসে গোড়ালি যেন মসৃণ হয়ে উঠতেই চায় না। পায়ের উপরিভাগের যত্ন নিলেও পায়ের তলার এই যত্নটি অনেকেই আলসেমির জন্য করেন না। পায়ের তলার এই মোটা ও খসখসে ত্বক মোলায়েম জন্যও রয়েছে অনেক সহজ একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করলে শুধু যে মসৃণ গোড়ালি পাবেন তা নয়। এর সাথে পায়ের ছত্রাকজনিত সকল প্রকার রোগ থেকে রেহাই পাবেন। রোধ হবে পা ফাটাও।

পদ্ধতিঃ
প্রথমে পা ভালো ভাবে ধুয়ে ১ চা চামচ লবন নিয়ে ভেজা পায়ের উপরিভাগ ও তলার দিক ভালো ভাবে ঘষে নিন। এরপর একটি পাত্রে ২/৩ লিটার পানি পায়ের সহনশীলতা অনুযায়ী গরম করে নিন। তারপর চুলা থেকে নামিয়ে প্রতি লিটারের জন্য ১ কাপ ভিনেগার দিন। এই ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। ২০ মিনিট পর পানি থেকে পা তুলে ব্রাশ দিয়ে হালকা ঘষে পায়ের তলার মোটা ও খসখসে চামড়া তুলে ফেলতে পারবেন। ব্রাশ দিয়ে ঘষা শেষ হলে কুসুম গরম পানি দিয়ে পা দুয়ে মুছে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ১ বার এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন।

এম ইউ

 

Back to top button