মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও আইনমন্ত্রী মলয়ের হলফনামা গ্রহণ করল হাইকোর্ট
কলকাতা, ৩০ জুন- মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের হলফনামা গ্রহণ করল হাইকোর্ট। তবে আদালতের নির্দেশ, ৫ হাজার টাকা করে আদালতে জমা রাখতে হবে। পরবর্তী শুনানি ১৫ জুলাই। ১০ দিনের মধ্যে উত্তর দেবে সিবিআই।
মুখ্যমন্ত্রীর দেরি করে হলফনামা জমা দেওয়ার বিষয়ে মঙ্গলবারের শুনানিতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি। জরিমানা করা হতে পারে, এমনটা ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, সুপ্রিম কোর্ট বলার পরও আদৌ কি এই হলফনামা গ্রহণ করা হবে? আজ, বুধবার বৃহত্তর বেঞ্চ স্পষ্ট করে দেয় এই হলফনামা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু হলফনামা জমা দিতে দেরি হওয়ায় ৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে প্রত্যেককে।
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সিবিআই পক্ষের আইনজীবী তুষার মেহেতা বলেছিলেন, যদি কোনও জরিমানা হয়, সেক্ষেত্রে টাকাটা অ্যাডভোকেট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে যাবে। ১৫ হাজার টাকা আইনজীবীদের কমিটিতে যাবে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী পদাধিকারি এক জনের জরিমানা ধার্য করে হাইকোর্ট স্পষ্ট বার্তা দিল, যে কোনও ভাবেই আদালতের সময় নষ্ট করা যাবে না।
মামলার প্রেক্ষাপট
গত ১৭ মে নারদ মামলায় চার হেভিওয়েট নেতাকে গ্রেফতারের পরই নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরের সামনে ধরনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এদিকে. সিবিআই আদালতে চার হেভিওয়েটের জামিনের শুনানি চলাকালীন উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। গোটা বিষয়টি সেসময় সিবিআই কর্তা হাইকোর্টে ভার্চুয়ালি গোটা বিষয়টি জানান।
এরপর হাইকোর্টে নারদ মামলায় আসে নাটকীয় মোড়। এই মামলায় যুক্ত করা হয় মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকেও। মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে তাঁদের বক্তব্য জানানোর জন্য হলফনামা দিতে বলে আদালত। কিন্তু এই মামলায় সিবিআইয়ের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতার সওয়াল শেষ হওয়ার পরে হলফনামা পেশ করেন তাঁরা।
সওয়াল জবাব চলাকালীন তুষার মেহেতার সওয়ালের পর হলফনামা পেশ করে রাজ্য। তুষার মেহেতা তা খারিজের আবেদন জানান। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন, নির্দিষ্ট সময়ের পরে দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর হলফনামা গ্রহণ করা হবে না। শুনানির প্রায় ১৫ দিনের শেষে ৯ জুন হলফনামা জমা দিতে গেলে তা খারিজ হয়ে যায়।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে জানিয়েছিলেন, হাই কোর্টের নিয়ম অনুসারে কোনও মামলার ৪ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়া যায়। কিন্তু ওই যুক্তি বিচারকরা গ্রহণ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী মূলত তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতেই হলফনামা জমা দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হলফনামা দিতে দেরি হওয়ায় হাইকোর্ট তাতে সাড়া দেয় না। হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মুখ্যমন্ত্রী। গত ২৫ জুন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার জবাবে সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টকে নির্দেশ দেয় এই বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য।
তথ্যসূত্র: টিভি ৯ বাংলা
এস সি/৩০ জুন