ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ মেডিকেলে আরও ৪ জনের মৃত্যু

ময়মনসিংহ, ২৯ জুন – গত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ ছিলেন ও তিনজন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।

এদের মধ্যে গফরগাঁও উপজেলার আফাজ উদ্দিন (৭৫) করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়ে এবং ফুলবাড়িয়ার মকবুল হোসেন (৫৫), ত্রিশালের নূর জামান (৭৮) এবং টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের রিনা খাতুন (৪১) উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮ টা মধ্যে ৪ জনই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন ডা. মহিউদ্দিন খান।

এছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেলে মঙ্গলবার সকাল ১১টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ১৩টি আইসিইউতে রোগী ভর্তি রয়েছেন। ২১০ সাধারণ শয্যায় ভর্তি ছিলেন ২০৯ জন। মাত্র একটি সিট খালি রয়েছে ওয়ার্ডে।

গত তিনদিনে করোনা ইউনিটে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। মৃত্যুর ক্ষেত্রে বয়স্কদের সংখ্যা বেশি। রোগীদের চাপ বাড়তে শুরু করায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক-নার্সদের। ময়মনসিংহের পাশাপাশের আশপাশের জেলাগুলোর করোনা রোগীরাও ভর্তি হচ্ছে এই হাসপাতালে। আইসিইউয়ের জন্য নেই ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের কোনো চিকিৎসক না থাকলেও অ্যানেসথেশিয়া ও মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন আইসিইউ ও করোনা ওয়ার্ডে। আইসিইউ মেইনটেইন করার জন্য নার্স থাকলেও রয়েছে সংকট।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে ১০ কিলোমিটার ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্ল্যান্ট। রোগীর অবস্থা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় অক্সিজেন প্ল্যান্টে চাপ কমানোর জন্য সিলিন্ডার ও অক্সিজেন কনসেন্টেটর মেশিনের মাধ্যমে রোগীদের মধ্যে সেবা চালু রয়েছে। মেডিকেলে ৪৫৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে সংকট রয়েছে ১৩২ জনের। ১ হাজার ১১৭ নার্স থাকার কথা থাকলেও সংকট রয়েছে ১১৫ জনের।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, রোগীর চাপ বাড়তে শুরু করায় সংকট মোকাবিলায় নতুন করে ৩২টি শয্যা বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। আপাতত অক্সিজেনের সংকট না থাকলেও চাপ আরও বাড়লে সংকট হতে পারে। সীমিত জনবল দিয়েই সেবা দেওয়া হচ্ছে।

সোমবার জেলায় ৫৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। সোমবার রাত পর্যন্ত জেলায় ৭৩০ জন হোম আইসোলেশন এবং ৩৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. শাহ আলম বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় তারা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করছেন। সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কষ্ট করে ১৫ দিন ঘরে অবস্থান করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

সূত্র : সমকাল
এন এইচ, ২৯ জুন

Back to top button