শিক্ষা

নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি রাবি উপাচার্যের

রাজশাহী, ২৯ জুন – রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

উপাচার্যের পক্ষে সোমবার বিকেলে এই জিডি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম মতিহার থানায় এ জিডি করেন।

জিডিতে রাবি রেজিস্ট্রার উল্লেখ করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা তার নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বিষয়টি অবহিত করে উপাচার্য আমাকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে অনুরোধ করেছেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে আপনাকে একটি সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।

ওই জিডির সঙ্গে উপাচার্যের দেয়া একটি চিঠি যুক্ত করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম। চিঠিটি উপাচার্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখেছেন।

রেজিস্ট্রারকে দেয়া চিঠিতে উপাচার্য উল্লেখ করেছেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তরা কর্মক্ষেত্রে যোগদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথা আমার ওপর বারবার চাপ দিচ্ছে। গত ১৯ জুন সকাল সাড়ে ৯টায় আমার বাসার গেটের সামনে ৫০-৬০ জন চাকরিপ্রত্যাশী হট্টগোল করতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমার স্ত্রী-কন্যারা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

বাসার কম্পাউন্ডের মধ্যে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে রাখে। সেদিনের বিশৃঙ্খলকারীদের অন্যতম হলো ফিরোজ মাহমুদ, মতিউর রহমান মর্তুজা প্রমুখ। শুধু তাই নয়, গত ২২ জুন সন্ধ্যা ৬টায় আমার বাসভবনের সামনে কয়েকজন এসে মহড়া প্রদর্শন করে, তাদের অন্যতম ছিলেন ইন্দ্রনীল মিশ্র এবং শাহরিয়ার মাহবুব।

চিঠিতে উপাচার্য আরও বলেন, গত ১৯ জুন ফাইন্যান্স কমিটির সভা ও ২২ জুন সিন্ডিকেট সভাও তাদের বাধার কারণে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। গুরত্বপূর্ণ এই দু’টি সভা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যায়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এবং আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন রক্ষার্থে বিষয়টি মতিহার থানায় সাধারণ ডায়েরি হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাধারণ ডায়েরির জন্য একটি আবেদন এসেছিল। সেটা জিডি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৬ জুন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ কর্মদিবস ৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৩৮ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়ে যান। মন্ত্রণালয় সেদিনই এই নিয়োগ ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এর প্রেক্ষিতে ৮ মে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩৮ জনের চাকরিতে যোগদান স্থগিত ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তদন্ত কমিটি গত ২৩ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত কমিটি এই ‘অবৈধ’ নিয়োগে বিদায়ী উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে। প্রতিবেদনে আব্দুস সোবহানের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনো দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর মধ্যেই নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদানের জন্য গত এক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন করছেন।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এম ইউ/২৯ জুন ২০২১

Back to top button