মগবাজারে রহস্যজনক বিস্ফোরণে যারা মারা গেলেন
ঢাকা, ২৮ জুন – মগবাজার ওয়ারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালে নিহত মোট চার জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে তিনজন ও ঢাকা মেডিক্যালে একজন মারা যায়।
রোববার ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২৮ জনু) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিহতদের স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেন। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য সৃষ্টি হয়।
নিহতদের মধ্যে একজন হলেন স্বপন (৩৫)। তিনি তিন সন্তান ও স্ত্রী মিনু বেগমকে নিয়ে মগবাজার চেয়ারম্যান গলি এলাকায় থাকতেন। তার বাবার নাম নুরুল ইসলাম। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে তিনি চাকরি করতেন।
তার পরিবারের লোকজনের জানান, স্বপন অসুস্থতার জন্য মগবাজারে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিল। তখন এই বিস্ফোরণে সে মারা যায়।
এই ঘটনায় আরও নিহত হয়েছেন আজমেরী পরিবহনের বাস চালক আবুল কাশেম মোল্লা (৪৫)। তার মরদেহ শনাক্ত করেন পরিবারের সদস্যরা। নিহত মোল্লার বাড়ি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। মেয়ে মিম (৫) ও স্ত্রী সোহাগী বেগমকে নিয়ে গাজীপুর সালনা এলাকায় থাকতেন। পরিবহন সেক্টরেই তিনি যুক্ত ছিলেন গত ২৫ বছর। গত দেড় বছর আগে ধার-কর্জ করে একটি বাস কিনে আজমেরী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে চালাতেন। ঘটনার সময় তিনি নিজে সে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
নিহতের স্ত্রী সোহাগী বেগম বুকফাটা আর্তনাদ করে বলতে থাকেন, আমাদের সংসারের আয় ছিল ওই বাস থেকে। বাস মেরামত করলে পাওয়া যাবে কিন্তু আমার স্বামীকে তো আর আমি কোনদিন পাব না।
পরিচয় শনাক্ত হওয়া তৃতীয় ব্যক্তির নাম মোস্তাফিজুর রহমান (২৭)। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায়। তিনি থাকতেন শনিরআখড়া এলাকায়। একটি বেসরকারি রেডিওসহ প্রাইভেট টিভির ইসলামিক অনুষ্ঠান করতেন তিনি। তিনিও ডাক্তার দেখিয়ে বাসে করে বাসায় ফিরছিলেন।
এদিকে এই ঘটনায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জান্নাত নামের এক নারী মারা যায়। মগবাজার ওয়ারলেস এলাকায় ঘটনার সময় একটি শর্মা হাউসে তার ৮ মাসের শিশু সন্তান ওর ছোট ভাই রাব্বিকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। ঘটনার সময় তার ৮ মাসের শিশু সন্তান মারা যায়।
এদিকে মগবাজারের বিস্ফোরণের ঘটনায় ঘটনাস্থলে মারা যান রুহুল আমিন নোমান (২৬)। তিনি মগবাজার আড়ং শো রুমে সিনিয়র সেলসম্যান হিসাবে চাকরি করতেন। তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কাঁঠালি গ্রাম। তার বাবার নাম খয়বর মন্ডল। স্ত্রী ও দুই বছরের শিশু সন্তান নাবিলাকে নিয়ে শান্তিনগরে থাকতেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান জানান, মগবাজার ওয়ারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ৬ জনের মৃতদেহ আমরা পেয়েছি। এদের মধ্যে জান্নাত ও তার শিশু সন্তানকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি চারজনের মৃতদেহ ঢাকা মেডিক্যাল মর্গ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সূত্র: বাংলানিউজ
এন এ/ ২৮ জুন