হংকংয়ের বন্ধ করে দেয়া ’অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকাটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
হংকং, ২৮ জুন- সম্প্রতি হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী সবচেয়ে বড় পত্রিকা অ্যাপল ডেইলি বন্ধ করে দেয়া হয়। এবার পত্রিকাটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ফুং ওয়াই কং-কে গ্রেপ্তার করেছে হংকং পুলিশ। তিনি ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকাটির প্রধান মতামত লেখকও ছিলন। ফুং ওয়াই কং-সহ এ নিয়ে সাতজন সিনিয়র সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে হংকং প্রশাসন।
এক খবরে বলা হয়, রোববার রাতে হংকংয়ের একটি বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হংকং প্রশাসনের দাবি, তিনি শহর ত্যাগ করার চেষ্টা করছিলেন। তার শহর ত্যাগকে হংকংয়ের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে প্রশাসন।
ফুং ওয়াই কং ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অন্য ছয়জন হলেন অ্যাপল ডেইলির মালিক মিডিয়া মোগল জিমি লাই, এডিটর ইন চিফ এবং আরও চারজন নির্বাহী কর্মকর্তা। তারা সবাই এখন কারাগারে রয়েছেন।
শুরু থেকেই হংকং এবং চীনের নেতৃত্বের সমালোচক হিসেবে পরিচিত অ্যাপল ডেইলি। পত্রিকাটির মালিক জিমি লাই জন্মগ্রহণ করেছিলেন চীনে। শিশু অবস্থায় তাকে হংকংয়ে পাচার করা হয়। এর আগে এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, তাকে কারাগারে রাখা হলেও তিনি অর্থপূর্ণ ভাবে জীবন-যাপন করবেন।
সম্প্রতি পত্রিকার অফিসে তল্লাশি চালায় পুলিশ। অভিযোগ ছিল পত্রিকাটিতে প্রকাশিত বেশ কিছু প্রতিবেদন হংকংয়ের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করেছে। অ্যাপল ডেইলিকে বিবেচনা করা হতো হংকংয়ের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রপন্থী পত্রিকা। পত্রিকাটি বন্ধ কার হংকংয়ের গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বড় ধাক্কা।
গত বছর চীন হংকংয়ের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর করে। এতে বিচ্ছিন্নবাদ ও সরকারের কর্তৃত্ব না মানাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই অপরাধে গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত ডজনখানেক বিশিষ্ট সমাজকর্মীকে আটক করা হয়েছে। মূলত হংকংয়ের বাসিন্দাদের ওপর ইচ্ছামতো অপরাধ চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে এই আইন। হংকংয়ে নতুন কার্যকর হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। গত এক বছরে এ নিয়ে দুই বার অ্যাপল ডেইলির কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। গত বছরের আগস্টেও একবার অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সরকারের নানা ধরনের চাপের মুখে গত ২৩ জুন বন্ধ করা হয়েছিল পত্রিকাটি। যার শেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল ২৪ জুন। ওইদিন অফিস ত্যাগ করেছিলেন অ্যাপল ডেইলির সব কর্মকর্তা। পত্রিকাটি বন্ধের পরও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কোম্পানির ১৮ কোটি ডলার সম্পদ।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
এস সি/২৮ জুন