পশ্চিমবঙ্গ

সরাসরি ব্যাঙ্কের সঙ্গেই প্রতারণার অভিযোগ উঠল দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে

কলকাতা, ২৮ জুন – জাল টিকা, জাল সার্টিফিকেট, ভুয়ো নথি- প্রতারণার একেবারে নয়া নজির গড়েছেন দেবাঞ্জন দেব (Kasba Fake Vaccination Camp) । এবার তাঁর বিরুদ্ধে আরও এক অভিযোগ। জাল স্যালারি স্লিপ তৈরি অভিযোগ উঠেছে দেবাঞ্জনের (Debanjan Deb) বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকারের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অফিসারের স্যালারি স্লিপ তৈরি করেছিলেন দেবাঞ্জন। নিজের বেতন দেখিয়েছিলেন মাসিক ৭৭ হাজার টাকা। সেই স্লিপ দেখিয়ে বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ২০ লক্ষ টাকার পার্সোনাল লোন নিয়েছিলেন তিনি। ঋণ মেটানোর জন্য ৪০ হাজার টাকা মাসিক কিস্তি ঠিক করে দেয় বেসরকারি ব্যাঙ্ক।

ভুয়ো নথি দেখিয়ে দেবাঞ্জনের ব্যাঙ্ক প্রতারণার নজির আগেই সামনে এসেছে। এবার সরাসরি ব্যাঙ্কের সঙ্গেই প্রতারণার অভিযোগ উঠল দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে। তদন্তে জানা গিয়েছে, বেসরকারি ব্যাঙ্কের গোলপার্কের শাখা থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ২০ লক্ষ টাকার ঋণ নেন দেবাঞ্জন দেব। ব্যাঙ্ক কর্মীদের কথায়, দেবাঞ্জন নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ব্যাঙ্কে আসেন। সঙ্গে ছিলেন দেহরক্ষীও। ব্যাঙ্কে নিজের পরিচয় দেন রাজ্য সরকারের যুগ্ম সচিব হিসাবে। লোন নেওয়ার জন্য নিজের স্যালারি স্লিপ-সহ যাবতীয় কাগজপত্র দেখান। তাঁর মাসিক কিস্তি ছিল ৪০ হাজার টাকা। স্বল্পভাষী দেবাঞ্জনের ‘অ্যাটিটিউডে’ কখনই তাঁকে ভেকধারী বলে আঁচ করতে পারেননি ব্যাঙ্ক কর্মীরা।

রাজ্য সরকারের স্যালারি স্লিপের হবহু নকল করেছিলেন দেবাঞ্জন। তাই তাঁর স্যালারি স্লিপ খালি চোখে জাল মনে হয়নি ব্যাঙ্ক কর্মীদের। মিল এতটাই যে, অভিজ্ঞ আইপিএস অফিসাররাও দেবাঞ্জনের ভুয়ো স্যালারি স্লিপের সঙ্গে নিজেদের স্যালারি স্লিপের কোনও পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছেন না। দেবাঞ্জনের গাড়ি, আদব-কায়দা দেখে সন্দেহ হয়নি ব্যাঙ্কের কর্তাদেরও। তবে ভেরিফিকেশন যে ব্যাঙ্ক কর্মীরা করেননি, তার প্রমাণ মিলছে। জানা যাচ্ছে, চারটে কিস্তি দিয়েছেন দেবাঞ্জন। বাকি টাকা দেননি।

ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছেন তদন্তকারীরা। যে সব নথি উদ্ধার হয়েছে, তা পুরসভা-নবান্নের স্যালারি স্লিপ ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের। এগুলি দেখেই নকল কপি বানাতেন দেবাঞ্জন, তাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। উদ্ধার হয়েছে হলোগ্রাম, রবার স্ট্যাম্প। পুরসভা দাবি করেছে হলোগ্রাম নকল করা যায় না। তবে সেটা কীভাবে সম্ভব করলেন দেবাঞ্জন? এতটা হবহু কীভাবে নকল করতেন তিনি?

তদন্তকারীদের কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট। সরকারি বহু জিনিসের অ্যাক্সেস ছিল দেবাঞ্জনের কাছে। কিন্তু সেটা কার মাধ্যমে ছিল, সেটাই এখন খুঁজছেন তদন্তকারীরা।

সূত্র: টিভি নাইন বাংলা
এম ইউ/২৮ জুন ২০২১

Back to top button