রোহিঙ্গা শিবিরের বর্জ্যে ১০০ একর জমিতে চাষাবাদের অনুপযোগী
কক্সবাজার, ২৭ জুন – রোহিঙ্গা শিবিরের বর্জ্য ও মলমূত্রের কারণে উখিয়া-টেকনাফের একটি বিশাল এলাকায় প্রায় ১০০ একর কৃষিজমির চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গত চার বছর ধরে অনাবাদী হয়ে পড়েছে কৃষিজমিগুলো।
ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, গত চার বছরে কয়েক দফায় মৌখিক ও অলিখিতভাবে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ায় আর্থিক সংকটে রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
রোববার সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের সঙ্গে লাগোয়া পশ্চিমপাড়া ও লম্বাশিয়ার বিশাল এলাকা জুড়ে ধানি জমিতে মলমুত্র, প্লাস্টিকের বোতল, পচনশীল ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। মূলত রোহিঙ্গা শিবিরের কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এসব ময়লা আবর্জনা ও মানববর্জ্য সরাসরি কৃষিজমিতে ফেলা হয়।
কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, ডি ফোর, ফাইভ, ওয়ান ও টু ইস্টসহ পাঁচটি ক্যাম্পের বর্জ্য আমাদের কৃষিজমিতে ফেলা হয়। এ কারণে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে গত চার বছর ধরে জমিতে চাষ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এ জমিতে চাষাবাদ করে পুরো বছরের সংসার চলে তার।
রহিম উদ্দিন নামে আরেক কৃষক বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে ধান চাষ বন্ধ। অথচ এ জমি আমাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু গেল চার বছরে ধান চাষ বন্ধ থাকায় আর্থিকভাবে কষ্টে আছি। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি জানানোর পরও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
একই অভিযোগ করেছেন কৃষক জমির আহমেদ, নুরুল আলম, আলি আহমেদসহ আরও অনেকই।
এ বিষয়ে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য (কুতুপালং) হেলাল উদ্দিন বলেন, একটি ইউ ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য নানা জায়গায় আবেদন করলেও সাড়া দেয়নি কেউই। দফায় দফায় কৃষকদের নিয়ে প্রশাসন, এনজিও কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে গিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি বলে জানান এ জনপ্রতিনিধি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার কক্সবাজারের সভাপতি ফজল কাদের চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে ৫ হাজার ভূমি দখল করেছে। সে জমি থাকা গাছপালা নিধন করে মূলত এসব ক্যাম্প গড়ে ওঠে। তাদের জন্য ছেড়ে দিতে হয়েছে অনেক স্থানীয়দের জমি। এখন এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বজ্যের কারণে চাষাবাদ বন্ধ এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। দ্রুত মাস্টার প্লান করে এ ময়লা আবর্জনা অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিপপ্তর ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত এ সংকট সমাধানে চেষ্টা করা হবে।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর
এস সি/২৭ জুন