বরগুনা

বহুল আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্ণ

বরগুনা, ২৬ জুন – বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পূর্ণ হলো। ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজ গেটে প্রকাশ্যে শাহ্ নেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসী বন্ড বাহিনী। পরে ওই দিনই বিকেলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিফাত শরীফ।

রিফাতকে কোপানোর আগে মেসেঞ্জার গ্রুপ ০০৭ এ হত্যার পরিকল্পনা করে নয়ন বন্ড বাহিনী। রিফাতকে কোপানোর সময় তিন স্তরে বন্ড সদস্যরা বিভক্ত ছিলো। নয়ন বাহিনীর প্রধান নয়ন বন্ড এবং সেকেন্ড ইন কমান্ড রিফাতের নেতৃত্বে একদল রিফাতের উপর আক্রমন করে। আরেকদল চারদিক থেকে ঘিরে রাখে যাতে রিফাত পালিয়ে যেতে না পারে। আবার আরেক দল দিয়েছিলো হত্যায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা। যাতে হত্যাকান্ডে হত্যাকারীদের কেউ বাধা দিতে না পারে।

স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সামনেই রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কোপানোর একটি রোমহর্ষক ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই হত্যাকাণ্ডের পর ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে থাকে জেলা শহরটিতে ‘কিশোর গ্যাং’য়ের দাপট, এলাকায় আধিপত্য, মাদক বাণিজ্য আর তাতে প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকতার কথা।

দেশব্যাপি নিন্দা ও প্রতিবাদের মুখে দিনের পর দিন নতুন নতুন মোড় নিলেও শেষমেষ দায়ভার পড়ে নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নির মাথায়। পুলিশি তদন্তে মিন্নিকে বানোনো নয় স্বামী রিফাত হত্যার মাস্টার মাইন্ড। ৭৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণশেষে মিন্নিকে মাস্টার মাইন্ড হিসেবে উল্লেখ করে স্ত্রী মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য ৫ জন আসামি হলেন- রিফাত ফরাজী, রাব্বি আকন, সিফাত, টিকটক হৃদয় ও মোহাম্মদ হাসান।

ঘটনার পর দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখনও রিফাতের স্মৃতি আঁকড়ে ধরে অঝোরে কাঁদেন তার মা-বাবা ও একমাত্র বোন। সকাল বিকাল ছেলের কবরের পাশে প্রার্থনায় মগ্ন হন তার মা ডেইজি আক্তার। নিহত রিফাতের স্বজনদের দাবি, আদালত খোলার সঙ্গে সঙ্গে যেন এ মামলার বিচার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হয়।

নিহত রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরিফ বলেন, রিফাত আমার একমাত্র ছেলে ছিল। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আমার সুখের সংসার ছিল। মিন্নির কারণে আমার সেই সুখের সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।

তিনি কান্নায় ভেঙে পরে আরও বলেন, রিফাতের শূন্যতা কিছুতে পূরণ হবেনা। রিফাতের শোকে আমার স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে। নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন শয্যাশায়ী। আমাদের ছেলে হত্যার বিচার কার্যকর হলে হয়তো কিছুটা আমরা সান্তনা পাবো।

সূত্র : রাইজিংবিডি
এন এইচ, ২৬ জুন

Back to top button