ভারতের ব্যবসায়ীরা আস্থা রাখছেন বিজেপিতেই
কলকাতা, ২৫ জুন – করোনা মহামারির মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার কিছুটা ভাটা পড়লেও দেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় বিজেপিতেই আস্থা রাখছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণারত অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রাটিক রিফর্মস (এডিআর) এর দেওয়া সাম্প্রতিক তথ্যে এমনই প্রমাণ মিলছে। এডিআরের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের মাধ্যমে শিল্পসংস্থাগুলি ভারতীয় জনতা পার্টিকে ২৭৬ কোটি ৪৫ লাখ রুপি অনুদান দিয়েছে। এর বিপরীতে জাতীয় কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ৫৮ কোটি রুপি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপি বিভিন্ন নির্বাচনে যে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে তার উৎসের হিসেব এডিআর রিপোর্টে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ২১টি রেজিস্টার্ড ট্রাস্টের মধ্যে ৭টি এই সংক্রান্ত আয়-ব্যয়ের হিসেব দিয়েছে। এসব ট্রাস্ট রাজনৈতিক দলগুলোকে মোট অনুদান দিয়েছে ৩৬৩.৫২ কোটি রুপি।
মোট অনুদানের ৭৬.১৭ শতাংশ বা ২৭৬.৪৫ কোটি পেয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১৫.৯৮ শতাংশ বা ৫৮ কোটি রুপি। এছাড়াও অন্য ১২টি রাজনৈতিক দলকে মোট অনুদান দেওয়া হয়েছে ২৫.৪৬৫২ কোটি। এর মধ্যে অরবিন্দ কেজরিওয়ালে আম আদমি পার্টি ১১.২৭ কোটি, এসএইচএস ৫ কোটি, এসপি ২ কোটি, জননায়ক পার্টি ২ কোটি, এলজিপি ১ কোটি, এসএডি ১ কোটি, আইএনএলডি ৫০ লাখ রুপি অনুদান পেয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে জেএস স্টিল লিমিটেড। তাদের মোট অনুদানের পরিমান ৩৯.১০ কোটি রুপি। এরপরেই আছে অ্যাপোলো টায়ার লিমিটেড তারা দিয়েছে ৩০ কোটি রুপি। এরপরে রয়েছে ইন্ডিয়া বুলস ইনফারস্টেট লিমিটেড। তাদের অনুদানের পরিমান ২৫ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ সালেও দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল যে অনুদান পেয়েছিল তার ৯৩ শতাংশ অর্থই যায় বিজেপির তহবিলে। যা টাকার অংকে ৪৩৭ কোটি। কংগ্রেসের পেয়েছিল ২৬.৭ কোটি রুপি। কংগ্রেস এবং বিজেপি বাদ দিলে আর্থিক অনুদান বাবদ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির পেয়েছিল প্রায় ৬ কোটি রুপি। শরদ পওয়ারের এনসিপি পেয়েছিল ২.০৮ কোটি রুপি, সিপিএম ২.৭৫ কোটি রুপি, সিপিআই ১.১৪ কোটি রুপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ২০ লক্ষ রুপি।
প্রতি বছরই অনুদান পাওয়ার হিসেবে বাকিদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকছে বিজেপি। যখন ক্ষমতায় ছিল না এনডিএ, তখনও কংগ্রেসের থেকে অনেক বেশি টাকা আর্থিক অনুদান পায় বিজেপি। কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকার পাশাপাশি একাধিক রাজ্যেও ক্ষমতায় হারিয়েছে কংগ্রেস। এসব কারণে শিল্পমহলের অনুদান ক্রমশ কমেছে কংগ্রেসের। অন্যদিকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকে নরেন্দ্র মোদির শিল্পমহলের সঙ্গে সখ্যতা বিজেপিকে কর্পোরেট অনুদানে দলীয় তহবিলকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে চলেছে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/২৫ জুন ২০২১