জাতীয়

শাটডাউনের কথা শুনেই আগেআগে রাজধানী ছাড়ার হিড়িক

ঢাকা, ২৫ জুন- দেশে করোনা ভাইরাসের ভয়ংকর রূপ দেখা দিয়েছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দিনকে দিন মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে ১৪ দিনের ‘শাটডাউন’ দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

আজ শুক্রবার (২৫ জুন) সকালে ঢাকায় প্রবেশ ও বাহিরের অন্যতম সড়ক গাবতলী এলাকা, ঢাকা- মাওয়া রোড, ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড। সবকিছু উপেক্ষা করেই ছুটছেন নারী-পুরুষেরা। ১৪ দিনের শাটডাউনের কথা শুনেই আগেআগে রাজধানী ছাড়ছেন তারা। ​আজ ছুটির দিনের সকালে রাজধানীর প্রবেশমুখে মানুষের ঢল নামে। বাস বন্ধ থাকায় ভেঙে ভেঙে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে ছুটছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিটি গাড়িকেই পুলিশের তল্লাশি চৌকি পার হতে হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো গাড়িকেই ঢাকায় ঢুকতে বা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু ঠেকানো যাচ্ছে না পায়েহাঁটা মানুষের ঢল।

এদিকে লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আজও শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের ফেরিতে যাত্রী পারাপার হচ্ছে। শাটডাউন ঘোষণার আশঙ্কায় যাত্রীদের ভিড় বেড়ে গেছে ঘাটে। সড়কে চেকপোস্ট বসিয়েও আটকানো যাচ্ছে না তাদের। আজ শুক্রবার সকাল থেকে নৌরুটের ফেরিগুলোতে ঢাকা ও দক্ষিণবঙ্গগামী উভয়মুখী প্রচুর যাত্রীকে পার হতে দেখা যায়। একসঙ্গে পারাপার হচ্ছে পণ্যবাহী ও জরুরি যানবাহন। বিআইডাব্লিউটিসি শিমুলিয়াঘাটে সহকারী ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) ফয়সাল আহমেদ বিডি২৪লাইভকে জানান, নৌরুটে বর্তমানে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে। লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী লকডাউনের আওতামুক্ত গাড়ি পারাপারের কথা থাকলেও যাত্রীরা ঘাটে আসছে।

বিআইডাব্লিউটিসি সুপার ভাইজার শাহাবুদ্দিন জানান, যাত্রীদের জন্য চাপ বেড়েছে। শিমুলিয়াঘাটে পারাপারের অপেক্ষা শতাধিক বড় গাড়ি রয়েছে। সকাল থেকে বেলা ১০ টা পর্যন্ত ২শতাধিক গাড়ি পার করা হয়েছে। মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জাকির হোসেন জানান, শিমুলিয়াঘাটের প্রবেশ মুখে চেকপোস্ট আজও রয়েছে।আমাদের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব যাত্রীদের ঘাটে আসা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করানহচ্ছর।লকডাউনের নির্দেশনা মানার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু যাত্রীরা বিভিন্ন ভাবে ঘাটে এসে উপস্থিত হচ্ছে। মূলত শাটডাউন ঘোষনার আশংকায় যাত্রীদের আগমন বেড়েছ।বাংলাবাজারঘাট থেকেও ফেরি যোগে শিমুলিয়াঘাটে আসছে অনেক যাত্রী।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে নতুন করে কমপক্ষে ১৪ দিনের ‘শাট ডাউন’ সুপারিশ করেছে করোনায় গঠিত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটি। কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মােহাম্মদ সহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ১৪ দিন জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সব কিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন। এতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ রােগের বিশেষ ডেলটা প্রজাতির সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে ও দেশে ইতােমধ্যেই রােগের প্রকোপ অনেক বেড়েছে। এই প্রজাতির জীবাণুর সংক্রমণ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশাের্ধ্ব জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। রােগ প্রতিরােধের জন্য খণ্ড খণ্ড ভাবে নেওয়া কর্মসূচির উপযােগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

অন্যান্য দেশ, বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরােধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলােচনা করা হয়েছে। তাদের মতামত অনুযায়ী, যে সব স্থানে পূর্ণ ‘শাট ডাউন’ প্রয়ােগ করা হয়েছে সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিডি২৪লাইভ
এস সি/২৫ জুন

Back to top button