জাতীয়

পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় বিএনপি

ঢাকা, ২৪ জুন – রাজধানীতে পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা ওয়াসায় স্মারকলিপি দিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপির পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেয়া হয়। অযৌক্তিকভাবে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।

ওয়াসার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন সংস্থাটির প্রধান নিরাপত্তা কর্মী মো. মাকসুদুল হক। স্মারকলিপি গ্রহণের পর মাকসুদুল হক জানান, স্মারকলিপিটি তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেবেন।

পানির দাম বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী উল্লেখ করে বলা হয়, নিরবচ্ছিন্নভাবে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ওয়াসা কর্তৃপক্ষ সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বারবার অযৌক্তিকভাবে পানির দাম বৃদ্ধি করা সরকারের ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু নগরবাসীর জন্য সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করতে পারেনি।

অবিলম্বে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল এবং ঢাকা ওয়াসার দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করে নগরবাসীর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহের জোর দাবি জানানো হয়।

স্মারকলিপি দেয়ার পর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, পানির বিল অন্যায়ভাবে বাড়ানো হয়েছে। গত ১৩ বছরে ১৪ বার ওয়াসা পানির বিল বাড়িয়েছে। এই পানির বিল ছিলো, ৬ টাকা ৪ পয়সা। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ হাজার লিটার পানির বিল হবে, ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

হাবিব উন নবী বলেন, এই ওয়াসার পানি মান সম্পর্কে আপনারা জানেন। পানি অপর নাম জীবন। আর ওয়াসার পানির অপর নাম মরণ।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনি যদি একদিনের জন্য ওয়াসার এক গ্লাস পানি খান, খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে আপনি যদি চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হন, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেবো।

ওয়াসা এখন একজন এমডির কথা মতো চলে মন্তব্য করে হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, দিন যায় রাত আসে, গ্রীষ্ম যায় বর্ষা আসে- সব পরিবর্তন হয়, কিন্তু ওয়াসার এমডি পদে যিনি আছেন, তার কোনও পরিবর্তন নেই!

প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের বেতন ৩০ হাজার টাকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ঢাকায় ময়লা পানির যিনি কারিগর তার বেতন ২০ হাজার না, ১ লাখ না, ২ লাখ না, ৩ লাখ না, ৪ লাখ না- তার বেতন ৬ লাখ ২০ হাজার টাকা! আর এই করোনা মহামারিতে ঢাকাবাসীর পাশে না দাঁড়িয়ে ওয়াসার এমডি মার্কিন মুলুকে বসে রিমোট কন্ট্রোলে ওয়াসা চালাচ্ছেন।

স্মারকলিপি দিতে গিয়ে মহানগর বিএনপির ৬ থেকে ৭ জন কর্মীকে আটক করে পুলিশ। স্মারকলিপি প্রদান শেষে সোহেল আটক কর্মীদের ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করলে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।

এদিকে ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে লেখা বিভিন্ন ফেস্টুন নিয়ে নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা ওয়াসা ভবনের সামনে যায়। এতে লেখা ছিলো, করোনায় মানুষ মরে, এমডির বেতন বাড়ে, পানির জন্য হাহাকার, ওয়াসা নির্বিকার, ন্যায্য মূল্যে পানি দাও, নইলে গদি ছেড়ে দাও, ওয়াসার যাঁতাকলে ঢাকাবাসী গুমরে মরে, অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি মানি না বাতিল কর প্রমুখ।

এ সময় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আওয়াল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম নকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র : ঢাকাটাইমস
এন এইচ, ২৪ জুন

Back to top button