ঢাকা, ১৯ অক্টোবর- মুজিব বর্ষে দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের ঘর দেওয়ার যে ঘোষণা সরকার দিয়েছে, তা সফলে সর্বাত্মক কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইতোমধ্যে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়েছে বলে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে জানানো হয়েছে।
মুজিববর্ষে দেশের সব মানুষকে ঘরে বন্দোবস্তু করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।
সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে সরকার। মাঠ প্রশাসনের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কী করণীয় সেই বার্তাও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে
উপকারভোগী নির্বাচন, ঘরের গুণগত মান নিশ্চিত এবং নির্দিষ্ট সময়ে কর্মসূচি বাস্তবায়নে করণীয়ও নির্ধারণ নিয়ে সোমবার বৈঠক হয়, যাতে মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ছিলেন। সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে উপকারভোগী নির্বাচন ও গৃহনির্মাণ কাজ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পৌঁছে দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের (মুজিববর্ষ) মধ্যে সবার জন্য গুণগত মানের ঘর নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী যে সকল নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো বাস্তবায়নে আমাদের টিম সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে।”
ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা তৈরির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক’ শ্রেণির অর্থাৎ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা (জুন ২০২০ পর্যন্ত) মোট ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি, ‘খ’ শ্রেণি অর্থাৎ যার ১-১০ শতাংশ জমি আছে ঘর নেই/খুবই জরাজীর্ণ ঘর এমন পরিবারের সংখ্যা মোট ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি। ‘ক’ ও ‘খ’ দুই শ্রেণিতে মোট পরিবারের সংখ্যা ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২।
সোমবারের সভায় জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে প্রথম পর্যায়ে ‘ক’ শ্রেণির পরিবারগুলোর পুনর্বাসন কাজ শুরু করা হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।
ভূমির্হীনদের জন্য এমন নকশায় ঘরগুলো হচ্ছে।ভূমির্হীনদের জন্য এমন নকশায় ঘরগুলো হচ্ছে।দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা পাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সবগুলো বাড়ি সরকার নির্ধারিত একই নকশায় হবে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা থাকবে এসব বাড়িতে।
ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগে ৪১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৪ হাজার ৫৩৮টি পরিবারকে ঘর বানিয়ে দেবে আশ্রয়ন-২ প্রকল্প।
রাজশাহী, সিলেট ও খুলনা বিভাগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় ৩৪৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ হাজার ৩৭৩টি পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় ২৫৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪ হাজার ৮৯২টি পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।
প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৯ হাজার ৮০৩টি গৃহ নির্মাণের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে সোমবারের সভাটি হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন, গুচ্ছগ্রাম-২য় পর্যায় প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম ওয়ালী উল্লাহ ও আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা মনিটরিং কমিটির সদস্যরা ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হন।
সূত্র: বিডিনিউজ
আর/০৮:১৪/১৯ অক্টোবর