পরিবেশ

৩ লাখ একর বনভূমি দখলদারের কবজায়

ঢাকা, ২০ অক্টোবর- দেশের প্রায় তিন লাখ একর বনভূমি ৯০ হাজার দখলদারের কবলে। এর মধ্যে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দেওয়া প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সংসদীয় কমিটি ওই ৯০ হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা মন্ত্রণালয়ের কাছে চেয়েছে। তালিকা পাওয়ার পর তা প্রকাশ করবে সংসদীয় কমিটি। এ ছাড়া বেদখল হওয়া বনভূমির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন কমিটি সদস্য পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, রেজাউল করিম বাবলু, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও শাহীন চাকলাদার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বন বিভাগের দুই লাখ ৮৭ হাজার ৪৫২ একর জমি জবরদখলে আছে। সবচেয়ে বেশি বনভূমি দখলে আছে কক্সবাজার জেলায়। এ জেলায় ৫৯ হাজার ৪৭১ হাজার একর বনের জমি বেদখলে আছে।

বৈঠক শেষে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, যারা দখল করে রেখেছে, তাদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। বনের একচুল জমিও বেদখলে যেতে দেব না। তিনি জানান, দখলদারদের উচ্ছেদে কতবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, আইনজীবী কারা, আইনে কী ধরনের ফাঁকফোকর রয়েছে- এসব কিছুই কমিটি খতিয়ে দেখতে চায়। বন বিভাগ, মন্ত্রণালয় এবং সংসদীয় কমিটির জরুরি ভিত্তিতে জমি উদ্ধারে কাজ করবে।

আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে উত্তাল বড়াল

বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণির মোট বনভূমির পরিমাণ ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ একর। এর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কাছে এক লাখ ৬০ হাজার ২৪০ একর জমি হস্তান্তর করেছে।

বনভূমি জবরদখলের কারণ সম্পর্কে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিএস রেকর্ডমূলে রেকর্ডভুক্ত বনভূমি পরে এসএ/আরএস/বিএস জরিপে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ড হয়েছে। এ ছাড়া ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বনভূমি (সংরক্ষিত বনভূমি ছাড়া অন্যান্য, যেমন- রক্ষিত, অর্পিত বনভূমি) জেলা প্রশাসন কর্তৃক অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বন্দোবস্ত দিয়েছে। স্থানীয় জনগণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনভূমি দখল করে কৃষিকাজ, স্থায়ী স্থাপনা, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, স্কুল, প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। অনেক জবরদখল করা বনভূমিতে শিল্পকারখানা স্থাপন করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিল্পপতি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনভূমি জবরদখলের ক্ষেত্রে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গেলে নিম্ন আদালতে মামলা ও আপিল এবং উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে স্থিতাবস্থা বা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে থাকে। এ ছাড়া উচ্ছেদের কাজে স্থানীয় জনগণ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অসহযোগিতা করে বলে সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে বন বিভাগ।

এদিকে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ থাকা বিভিন্ন ইকোপার্ক শর্তসাপেক্ষে নভেম্বরে খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সূত্র : সমকাল
এম এন / ২০ অক্টোবর

Back to top button