অপরাধ

ভল্ট থেকে চার কোটি টাকা উধাও, বছর খানেক ধরে এই টাকা সড়িয়েছেন তারা

ঢাকা, ২০ জুন – ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ভল্ট থেকে প্রায় চার কোটি টাকা উধাও হওয়ায় ঘটনায় ওই শাখার আটক দুই কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা হলেন-ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ক্যাশ ইনচার্জ রিফাতুল হক ও ম্যানেজার অপারেশন এমরান আহমেদ। গ্রেফতারের পর তারা জানিয়েছেন, প্রায় বছরখানেক ধরেই ধারাবাহিকভাবে টাকা সড়িয়ে রাখছিলেন তারা।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রায় বছর খানেক ধরে আসামিরা ভল্টের ৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা গায়েব করতে অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভল্টের ১০০ টাকার বান্ডিলের দুইপাশে ৫০০ টাকার নোট ও ৫০০ টাকার বান্ডিলের দুইপাশে ১০০০ টাকার নোট রেখে সবাইকে প্রতিনিয়ত বোকা বানিয়ে গেছেন। ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় আসামিরা এমন কৌশলে ওই টাকা গায়েব করেছেন। বিপরীতে ব্যাংকের ক্যাশ খাতায় হিসাব মিলিয়ে রাখতেন।

শনিবার (১৯ জুন) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামিরা ব্যাংকের ভল্টের টাকার দায়িত্বে ছিলেন। ভল্টের চাবি তাদের কাছেই ছিল। বৃহস্পতিবার ব্যাংকের অডিট টিম অডিট করার সময় ভল্টে থাকা তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার হিসাবে গড়মিল পান। ব্যাংকের ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিকের কাছে অডিট টিম টাকা গড়মিলের স্টেটমেন্ট দাখিল করে। তখন আবু বক্কর সিদ্দিক অডিট টিমের স্টেটমেন্টের ভিত্তিতে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আসামিরা তাৎক্ষণিকভাবে টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির বংশাল শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক গত ১৭ জুন বাদী হয়ে রিফাতুল হক ও এমরান আহম্মেদকে আসামি করে বংশাল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। রিফাত ওই শাখায় ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে কর্মরত আছেন। গত ১৭ জুন আইসিসি ডিভিশনের ইন্টারনাল অডিট অ্যান্ড ইন্সপেকশন ইউনিট বাৎসরিক নিরীক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বংশাল শাখা পরিদর্শনে যায়। তদন্তে ইউনিট শাখার ভল্টে মোট ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার অসামঞ্জস্যতা পায়। তাৎক্ষনিক জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা স্বীকার করেন রিফাতুল হক। ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময় অল্প অল্প করে টাকা সরান তিনি।

প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, আসামিরা ভল্টের টাকা সরানোর জন্য অভিনব কৌশলের আশ্রয় নেন। ভল্টে ১০০ টাকার বান্ডিলের দুইপাশে ৫০০ টাকার নোট ও ৫০০ টাকার বান্ডিলের দুইপাশে ১০০০ টাকার নোট দেখিয়ে টাকার হিসাব মিলিয়ে রাখতেন। অর্থাৎ ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের সংখ্যা বেশি দেখিয়ে কাগজে-কলমে হিসাব সঠিক করে রাখতেন। যাতে প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হয় সব ঠিকই আছে। আর ভল্টের চাবির দুই সেট রিফাতুল ও এমরান আহম্মেদের কাছে রক্ষিত ছিল। তারা যৌথভাবে ভল্টের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের বংশাল শাখার ভল্টে রক্ষিত টাকা থেকে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধাৱা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।

সূত্র : বিডি২৪লাইভ
এন এইচ, ২০ জুন

Back to top button