মাগুরা, ১৭ জুন – এক সময়ের জরাজীর্ণ মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি এখন শুধু একটি চিকিৎসা কেন্দ্র নয়, পরিণত হয়েছে দর্শনীয় স্থানে। ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটির সামনের বিশাল মাঠ এক সময় গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছিল।
সন্ধ্যা হলেই মূল ভবনের বারান্দা ও মাঠের শেষ প্রান্তে নির্জন স্থানে ভিড় করত মাদকসেবীর দল। সেই হাসপাতালটির প্রবেশদ্বার এখন ফুল বাগান ও অভ্যন্তরের ফাঁকা স্থানগুলো বিভিন্ন বৃক্ষরাজি দিয়ে সুসজ্জিতভাবে সাজানো হয়েছে। হাসপাতালটি দেখতে শপিংমলের মতো মনে হওয়ায় শুধু চিকিৎসা নিতে নয়, অনেক দর্শনার্থী এখানে বেড়াতে আসেন। এখানে রয়েছে সেবা নিতে আসা রোগীর সুন্দর অবসর কাটানোর জন্য সমৃদ্ধ লাইব্রেরি।
হাসপাতালের মূল ভবনের সামনে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল ফুলের বাগান। বাহারি পদের ফুলগাছ শোভাবর্ধন করেছে সীমানাজুড়ে। ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছে হাসপাতাল চত্বরে। আগে কমপ্লেক্সের আবাসিক ভবনে চিকিৎসকরা থাকতেন না। সংস্কার করে তা করা হয়েছে বাসযোগ্য। এখন সেই আবাসিক এলাকাটি সমৃদ্ধ করতে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে মিনি পার্কসহ ছোট ছোট স্থাপনা। সেখানে শাক-সবজি চাষের সুযোগ পাচ্ছেন আবাসিক কর্মকর্তারা। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ বাইসাইকেলে আসেন স্বাস্থ্যসেবা নিতে।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মহম্মমদপুর উপজেলার কানুটিয়া গ্রামের আয়েশা বেগম জানান, হাসপাতালটি অনেক সুন্দর। পরিষ্কার-পরিছন্ন। কোথাও কোনো দুর্গন্ধ নেই। হাসপাতালের টয়েলেটগুলো সব সময় পরিষ্কার থাকে। হাসপাতালের ডাক্তাররা রোগীর সেবা যত্ন করেন। এই হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের বই পড়ার জন্য একটি লাইব্রেরি রয়েছে। অবসর সময়ে হাসপাতালের অনেকেই এখানে বই পড়েন।
মহম্মদপুর উপজেলার সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহিন রহমান জানান, হাসপাতালটি মধুমতি নদীর পশ্চিমে গড়েছে উঠেছে। চারদিকে সবুজে ঘেরা। পাখির কলকাললিত মুখর। হাসপাতালটিতে রয়েছে মিনি পার্ক। এখানে অবসর সময়ে হাঁটাচলা ও ব্যয়ামের সু-ব্যবস্থা। হাসপাতালটির পশ্চিম দিকে রয়েছে বাঁধানো পুকুর ঘাট। পুকুরে রয়েছে নানা প্রজাতির মাছ। পুকুর ঘাটে বসে সময় কাটানোর জন্যেও রয়েছে ব্যবস্থা।
ওই হাসপাতালের নিসিয়র স্টাফ র্নাস কিরন বালা বলেন, হাসপাতালে সব সময় ২০-৩০ জন রোগী থাকে।
নিয়মিত রোগীর সেবা যত্নসহকারে করা হয়। রোগীদের সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে হাসপাতালটিতে। এখানে সিনিয়র স্টাফ র্নাসসহ ২১ জন কমরত আছেন। বেডের সংখ্যা ৩১টি। গাইনি চিকিৎসার জন্য রয়েছে একটি অপারেশন কক্ষ। এই হাসপাতালটিতে রোগীর আনা নেওয়ার জন্য একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।
হাসপাতালটির পরিচালক মোকছেদুল মোমনি বলেন, মহম্মদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স একটি ব্যতিক্রম স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র। এখানে রোগীদের বই পড়ার জন্য একটি লাইব্রেরি রয়েছে। রোগী ও স্বজনদের খাওয়ার জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। গাড়ি প্যাকিং গ্যারেজ তৈরি করা হয়েছে। ৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও এখানে মাত্র ৩১ জনবল নিয়ে চলছে হাসপাতালটি। আমি আশা করি পূর্ণাঙ্গ লোকবল পেলে এই হাসপাতাল জেলার মধ্যে একটি ব্যক্তিক্রম হাসপাতাল হবে।
সূত্র : বাংলানিউজ
এম এউ, ১৭ জুন