জাতীয়

লকডাউন দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না করোনার ঊর্ধ্বগতি

ঢাকা, ১৬ জুন – দেশের বিভিন্ন জেলায় লকডাউন দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। সেই সঙ্গে বেড়েছে মৃত্যু। অন্যান্য জেলার তুলনায় উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এবং আশপাশের জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত বেশি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন মেনে চলার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া নমুনা পরীক্ষা, রোগী শনাক্ত এবং কন্টাক্ট ট্রেসিং করে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বরোপ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যে জানা যায়, এখন পর্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোতে শতভাগ লকডাউন বা বিধিনিষেধ মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি। যে কারণে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ সামাজিক সচেতনতার অভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে।

রাজশাহী
করোনায় রাজশাহী অঞ্চলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমছে না। গত ২৪ ঘণ্টার তথ্যানুযায়ী রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় চলছে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন। এই লকডাউনের মধ্যে টানা দুই দিন কমার পর ফের বেড়েছে সংক্রমণ। লকডাউনের পঞ্চম দিন মঙ্গলবার (১৫ জুন) নগরীতে যানবাহনের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। তবে মার্কেট-দোকানপাট ছিল বন্ধ।

নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগের চার দিনের তুলনায় শহরে রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের চলাচল বেশি। মঙ্গলবার ও ষষ্ঠ দিন বুধবার (১৬ জুন) সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে রাজশাহী শহরে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালনেও বিঘ্ন ঘটেছে। এই সুযোগে নগরীতে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে, সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও বেশি দেখা গেছে। অবশ্য লকডাউনের কয়েকদিনে সন্ধ্যার পর শহর সুনসান নীরব হয়ে যাচ্ছে।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, কয়েকদিন ধরে গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আমরা প্রচুর রোগী পাচ্ছি। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি গ্রামের। ফলে বর্তমানে গ্রামেও ব্যাপকহারে সংক্রমণ হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। যা আমাদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। এছাড়াও শুধু বয়স্কদের মধ্যে বেশি ছড়াচ্ছে তা নয়; এখন অনেক তরুণ রোগীও হাসপাতালে আসছে। অবস্থার উন্নতির জন্য স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার বিকল্প নেই।

তবে বিধিনিষেধ মেনে চলা নিশ্চিতে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক। তিনি বলেন, সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ, র্যাব, আনসারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতও মাঠে আছে। বিনা কারণে বাড়ির বাইরে বের হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়াও বুধবার (১৬ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর সার্কিট হাউসে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে লকডাউন শহরের বাইরে দেওয়া হবে কিনা।

খুলনা
করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত ১৩ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় খুলনা জেলায় কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। বিধিনিষেধ সফল করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে ভ্রাম্যমাণ আদালতে গত ১০ দিনে ৩০০ মামলায় ৩১৪ জনকে পাঁচ লাখ চার হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) দেবাশীষ বসাক বলেন, খুলনায় হঠাৎ করোনা সংক্রমণ হার অনেক বেড়ে গেছে। অথচ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অনেক উৎসুক জনতা জনসমাগম ও চলাফেরা করছে। জনগণের একটি বড় অংশের মুখে মাস্ক নেই। একই রিকশায় তিন জন উঠছেন। অনেকে মাস্ক পকেটে রেখে অসচেতনতার পরিচয় দিচ্ছেন। এসব কারণে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জুন থেকে অভিযান শুরু হয়। অভিযানের গত ১০ দিন ধারাবাহিকভাবে রূপসা. ডাকবাংলা, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে পরিস্থিতি তদারকি করা হয়। এ সময় ৩০০ জনের নামে ৩১৪টি মামলা হয়। মোট ৫ লাখ ৪ হাজার ৮৯৫ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।

গত ৪ জুন প্রথম দফায় করোনা সংক্রমণের আধিক্য বিবেচনায় রূপসা উপজেলা, খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা এবং খালিশপুর থানায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল ১১ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ১১ জুন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি ফের বৈঠক করে ১৩ জুন থেকে ২১ জুন পর্যন্ত জেলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে সকাল থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকান পাট খোলা রাখার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

সাতক্ষীরা
করোনা সংক্রমণরোধে জেলায় চলছে লকডাউন। বিধিনিষেধ মেনে চলার সরকারি নির্দেশনার ১২তম দিনে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে প্রশাসনকে। বুধবার (১৬ জুন) সকাল থেকে পুলিশ সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যারিকেড বসিয়ে বিনা কারণে চলাচলরত মানুষ ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে। অপ্রয়োজনে বের হলে তাদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবে উপজেলাগুলোতে প্রশাসন মাঠে নামলেই পালানোর চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষ। আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চলে গেলে, অবাধে ঘোরাফেরা করএছন স্থানীয়রা। যেন সংক্রমণের বিষয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। বিধিনিষেধ মানতে এ উদাসীনতা অনেক বেশি ক্ষতি করছে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং অপ্রয়োজনে ঘরে বাইরে আসা রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন স্তরে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সীমান্তে বিজিবি, সড়কে পুলিশ ও মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।

পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লকডাউন বাস্তবায়নে ও সাধারণ মানুষকে ঘরে ফেরাতে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। জনসমাগম না করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরিধান করা ও প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার বিষয়ে সচেতন করছে পুলিশ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের শুরু থেকে ১১১টি অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ৫৬৭টি মামলায় পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

কুষ্টিয়া
সীমান্তবর্তী জেলা কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। সোমবার ২৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দুজনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্তের হার ৪১ শতাংশ।

জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৪৫ জন। এ পর্যন্ত করোনায় ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, পৌরসভা এলাকায় চলমান সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধের বুধবার ছিল পঞ্চম দিন। তবে বিধিনিষেধ চলছে ঢিমেতালে। দোকানপাট, শপিংমল বন্ধ থাকলেও পৌর এলাকার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে মানুষের ভিড় ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা মাস্কও পরে না অধিকাংশ মানুষ। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা করোনার সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা নেবে।

নোয়াখালী
নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৩৪৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় এ ফলাফল পাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এতে জেলায় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৯১১ জন। আক্রান্তের হার ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। জেলায় করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১২৭ জন। মৃত্যুর হার ১দশমিক ২৮ শতাংশ।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৪৭ জন সদর উপজেলার, ১১ জন বেগমগঞ্জের, সাতজন সোনাইমুড়ীর, পাঁচজন কোম্পানীগঞ্জের, দুজন চাটখিলের, দুজন কবিরহাটের ও একজন সুবর্ণচরের। এছাড়া মোট সুস্থ হয়েছেন সাত হাজার ১৫৯ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭২ দশমিক ২৩ শতাংশ।

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও নোয়াখালী পৌরসভায় চলমান লকডাউনের সময়সীমা প্রথম ধাপে ৫ জুন থেকে ১১ জুন এবং সংক্রমণ অব্যাহত থাকায় তা ১৮ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলেও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা যায়নি। দোকানপাটে আড্ডা দিচ্ছে মানুষজন।

নওগাঁ
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ১০ জুন থেকে বিধিনিষেধ মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে বেশিরভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। চা স্টল বাদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দোকান খোলার নির্দেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এসব দোকানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে একে-অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া রাস্তার ধারে এবং বিভিন্ন পাড়ার দোকানেও একই অবস্থা। তবে অপ্রেয়াজনে ঘরে বাইরে না থাকা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।

নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. এ বি এম আবু হানিফ বলেন, মানুষ সচেতন না হলে বিধিনিষেধ যতই আরোপ করা হোক না কেন, কাজে আসবে না। মানুষের উদাসীনতার কারণে আমাদের সবাইকে মূল্য দিতে হবে। বিধিনিষেধ আরোপের ফলে সাময়িক একটু কষ্ট হলেও জীবন রক্ষা পাবে, এই বোধ থেকে আমাদের সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তিনি আরও বলেন, নওগাঁয় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ১৩ মে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) পর্যন্ত তিন হাজার ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে করোনা সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জেলার পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ড ও বাজারে এক সপ্তাহের জন্য জনসমাগম ও অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণের (রেসট্রিকটেড মোড) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৪ জুন) বিকালে জেলা করোনা সংক্রান্ত কমিটির ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ম্যাপিংয়ের কাজ করেছি। জেলার কোন অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণের মাত্রা বেশি সেটা নির্ণয় করে আমরা আপাতত পৌর এলাকার ২, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ডে জনসমাগম ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এই এলাকাতে সংক্রমণ বেশি। এই এলাকায় আমরা কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছি। মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকাল ৫টা থেকে পরবর্তী সাত দিন এই বিধিনিষেধ চলবে। এরপরও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না হলে আমরা কঠোর লকডাউনে চলে যাবো।’
মাগুরা
করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সোমবার সকাল থেকে মাগুরা শহর ও মহম্মদপুর উপজেলা সদরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এছাড়া পৌর এলাকার ২, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তবে লকডাউনে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করলেও বেশিরভাগ সড়কেই স্বাভাবিক অবস্থা দেখা গেছে।

সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, জেলায় শনাক্তের সংখ্যা তেরশ’ ছাড়িয়েছে, আর মারা গেছেন ২৪ জন। সব মিলিয়ে জেলায় করোনা শনাক্তের হার শতকরা ৪২ ভাগ। এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাগুরা শহর ও মহম্মদপুর উপজেলা সদরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এছাড়া পৌর এলাকার ২, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম বলেন, লকডাউন কার্যকর, রেড জোনে জনসাধারণের যাতায়াত সীমিত করা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে শতভাগ মাস্ক পরা নিশ্চিতে কাজ করছে প্রশাসন।

দিনাজপুর
সংক্রমণ ও মৃত্যুহার ঠেকাতে দিনাজপুর সদর উপজেলায় লকডাউন চললেও করোনা শনাক্ত বেড়েছে তিনগুণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুর সদরে ৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গতকালও এই সংখ্যা ছিল ১৯ জন। এ অবস্থায় ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৫৫.২৬ শতাংশে।

সিভিল সার্জন কার্যালয় ও এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৯৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যার মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ৭৬ জন। জেলায় মোট শনাক্তের হার ৩৮.৯৭ শতাংশ। এর মধ্যে সদর উপজেলায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১৪টি। যার মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৬৩ জন। সদর উপজেলায় শনাক্তের হার ৫৫.২৬ শতাংশ।

এখন পর্যন্ত দিনাজপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৪৪৩ জন। যার মধ্যে সদরেই তিন হাজার ৬৮৪ জন। অর্থাৎ মোট শনাক্তের ৫৭.১৮ শতাংশই দিনাজপুর সদরের। মৃত্যুবরণকারী ১৪৪ জনের মধ্যে ৭১ জনই সদরের। বর্তমানে দিনাজপুরে মোট রোগী রয়েছেন ৬০৪ জন। সদরের রয়েছেন ৪১১ জন। আর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৮৪ জন।

এদিকে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ায় দিনাজপুর সদর উপজেলায় চলছে লকডাউন। তবে লকডাউনের বিধিনিষেধগুলো অনেকটাই উপেক্ষিত। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে এই লকডাউন শুরু হয়েছে, চলবে ২১ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত। তবে লকডাউনের প্রভাব তেমন পড়েনি। শহরের মধ্যে ইজিবাইক, রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেল, সাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এমনকি ভারী যানবাহন চলাচলও লক্ষ্য করা গেছে। লকডাউনের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ওষুধের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকার ঘোষণা থাকলেও অনেকেই দোকান খুলেছেন। দিনাজপুর চুড়িপট্টি, বড়বন্দর, বটতলী, কালিতলা, মালদহপট্টি, কালিতলা, হাসপাতাল মোড়, বুটিবাবুর মোড়, জেলরোড ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। লকডাউনের মধ্যেই মাস্ক ছাড়াই অনেককেই অবাধে চলাচল করতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার কোনও বালাই ছিল না। এদিকে প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের মাঠে নেমে সহযোগিতার কথা থাকলেও তেমনটা দেখা যায়নি।

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সেখানে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বপালন করছেন। তবে শহর ও সদরের প্রবেশপথগুলো লকডাউন করা উচিত। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চান তিনি।

যশোর
করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে যশোরে দ্বিতীয় দফায় আরও সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগে, ৫ জুন করোনা কমিটির সভায় যশোর পৌরসভার দুটি ও নওয়াপড়া পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর গত ৮ জুন ওই দুটি পৌর এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুন রাত
১২টা থেকে ২৩ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত যশোর সদর, পৌর এলাকা, চাঁচড়া, উপশহর, আরবপুর ও নওয়াপাড়া ইউনিয়ন, ঝিকরগাছা উপজেলার ঝিকরগাছা পৌর এলাকা, শার্শা উপজেলার শার্শা ইউনিয়ন ও বেনাপোল পৌর এলাকার বেনাপোল বাজার এবং অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভায় চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এতে জেলার অভ্যন্তরীণ সব রুটে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে, হাইওয়ে রোডে আন্তঃজেলা গণপরিবহন স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনপূর্বক চলাচল করতে পারবে। এদিকে গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নাটোর
করোনা সংক্রমণরোধে দেওয়া লকডাউনে সাধারণ মানুষের মুখে উঠেছে মাস্ক। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে সদর ও সিংড়া পৌর এলাকায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। প্রথম দফায় ৯ জুন থেকে সাত দিনের বিধিনিষেধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক শাহরিয়াজ। ১৫ জুন সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হওয়ার কথা। তবে ১৫ জুন বিধিনিষেধ আরও সাত দিন বাড়ানো হয়। ২২ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নাটোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি জালাল উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী লাহিড়ী বলেন, চলমান বিধিনিষেধ ঘোষণার আগে নাটোর ও সিংড়া পৌর এলাকার অধিকাংশ মানুষই কারণে-অকারণে বাইরে আসতেন। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকতো হাটবাজার ও মার্কেটে। এসব স্থানে আসা অনেকের মুখেই থাকতো না মাস্ক। বিধিনিষেধ ঘোষণার পর শহরের বিভিন্ন প্রবেশ পথে বসেছে পুলিশের চেকপোস্ট। কড়াকড়ি করা হয়েছে যান ও জন চলাচলে। মাস্ক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে। এ অবস্থায় নাটোর আর সিংড়া পৌর এলাকায় কমেছে অবাধ চলাচল, বৃদ্ধি পেয়েছে মাস্ক ব্যবহার।

সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়ায় হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও বেডের সংকট হয়েছিল। বিষয়টি জানার পর আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ২০টি বড় ও ১০টি ছোট অক্সিজেন ও সিলিন্ডার দিয়েছেন। এছাড়া সদর আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের সহযোগিতায় সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৯টি শয্যা বাড়িয়ে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া র্যা পিড টেস্টের ব্যবস্থা হয়েছে। তবে সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনও বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।

জামালপুর
জামালপুরে করোনা শনাক্তের হার বাড়ায় রবিবার (১৩ জুন) রাতে জেলা প্রশাসক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বিধিনিষেধ মেনে চলার নির্দেশনা দেন। তবে নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলে জনসাধারণের উদাসীতা দেখা গেছে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শপিং মল, ছোটবড় মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, রাস্তাঘাট ও বাজারে নির্দেশনা মানার কোনও বালাই দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনিক নজরদারির অভাব ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের ঢিলেঢালা সচেতনতা কার্যক্রমের কারণে সবাই গা ছাড়া ভাব নিয়ে চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয় সুধী মহলের। এ অবস্থায় সংক্রমণ বেড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

সিভিল সার্জন প্রণয়কান্তি দাস বলেন, এক সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলায় করোনা আক্রান্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। জেলার অন্যান্য এলাকার চেয়ে পৌর এলাকায় বেশি সংক্রমণ হচ্ছে। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করা এবং মাস্ক না পরার কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।

সংক্রমণ বাড়ায় জামালপুর পৌর এলাকাকে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন উল্লেখ করে ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান।

মোংলা
মোংলা এলাকায় করোনার তৃতীয় দফার কঠোর থেকে অধিকতর কঠোর বিধিনিষেধ বুধবার (১৬ জুন) শেষ হচ্ছে। তবে বিগত কঠোর বিধি নিষেধে কোনও ফলাফল না পাওয়ায় আবারও কঠোর বিধি নিষেধ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধে তেমন একটা ফল পাওয়া যায়নি, মানুষও সচেতন হয়নি। তাই মাঠ পর্যায়ে কাজ করা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে নতুন সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে শেষ দিনেও স্থানীয়দের ঢিলেঢালাভাবে বিধিনিষেধ মেনে চলতে দেখা গেছে। শহরজুড়ে যান ও মানুষের অবাধ চলচলে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হয়েছে। যাত্রীবাহী ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও একদিনের জন্যও তা বন্ধ থাকেনি। এমন পরিস্থিতি স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বে উদাসীনতার ফল বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে জানতে বুধবার সকালে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদারকে ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

লকডাউন দিয়েও উপজেলায় সংক্রমণ ও শনাক্তের হার কমেনি। গত ২৪ ঘন্টায় মোংলায় ৫৮ জনের মধ্যে ৩৩ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। বর্তমানে শনাক্তের হার প্রায় ৫৭ ভাগ বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস। সচেতনতার অভাব ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা সংক্রমণ বাড়ার মূল কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

হিলি
সীমান্তবর্তী এলাকা হিলিতে সংক্রমণ বাড়ায় কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলার দ্বিতীয় দিন চলছে। তবে বিধিনিষেধ জারির পরেও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলাচল করছেন স্থানীয়রা। বাজারে অনেকেই মাস্ক ছাড়া ঘুরছেন, অবাধে চলাচল করছেন তারা। মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকাল ৬টা থেকে এই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে উপজেলা প্রশাসন। ২২ জুন ভোর ৬টা পর্যন্ত এই কঠোর বিধিনিষেধ চলবে।

সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণরোধে দেওয়া বিধিনিষেধ পালনে সাধারন মানুষের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। মাস্ক ছাড়াই বাজারে ঘোরাফেরা করছেন তারা, দোকানগুলোতে পণ্য ক্রয় করছেন। দুই-একজন মাস্ক পরলেও তা ছিল থুঁতনির নিচে। কেউবা সাইকেলে বা ভ্যানের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে রেখেছেন মাস্ক। এদিকে দোকানগুলোতে পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। বাজারগুলোতে কঠোর বিধিনিষেধ প্রতিপালনে প্রশাসনের কোনও নজরদারিও দেখা যায়নি। এতে করোনার প্রকোপ কমার পরিবর্তে বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন,
আমরা চেষ্টা করছি যথাসম্ভব জনসমাগম কমিয়ে আনতে। প্রথম অবস্থায় সাতদিনের জন্য এই বিধিনিষেধ আরোপ করেছি, এতে সংক্রমণ না কমলে ও প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বিধিনিষেধের সময় বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে যশোরের বেনাপোলসহ গোটা শার্শা উপজেলায় সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) থেকে ২১ জুন পর্যন্ত তা মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসময় সকাল ৯টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। এই সময়ের পর শুধুমাত্র ওষুধের দোকান ও ভারতফেরত যাত্রীদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য কয়েকটি আবাসিক হোটেল এবং খাবার হোটেল খোলা থাকবে বলে জানান সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান ।

এছাড়া বিধিনিষেধের মধ্যে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। তবে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা চালক ও তাদের সহকারীদের সব সময় মুখে মাস্ক এবং পিপিই ব্যবহার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন্দরের ভেতরে এক জায়গায় বেশি লোক সমাগম করা যাবে না। এছাড়া বন্দরে চলাচলেও বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবির তরফদার।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি জানান, সীমান্ত জেলা যশোরের কয়েকটি উপজেলায় করোনার প্রকোপ বেড়েছে। সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং প্রশাসনের তরফ থেকে গোটা উপজেলা কঠোর-বিধিনিষেধের আওতায় আনা হয়েছে। এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের শতকরা হার ৭৩ শতাংশের উপরে।

এদিকে ভারতফেরতদের বিষয়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আহসান হাবিব। তিনি বলেন, ভারতফেরত প্রতিটি যাত্রীর কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যাতে ছড়াতে না পারে, সেজন্য সাবধানে তাদের কোয়ারেন্টিন হোটেলে পাঠানো হয়। গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ভারত থেকে পাঁচ হাজার ২৩৯ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশে ফিরেছেন বলে জানান তিনি। এদের মধ্যে কোভিড পজিটিভ সনদ নিয়ে ভারত থেকে ফিরেছেন ১৩ জন। ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ৪৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আর ছয় জনের শরীরে মিলেছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
এম ইউ/১৬ জুন ২০২১

Back to top button