ঢালিউড

পরীমনির ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত কে এই নাসির ইউ মাহমুদ

ঢাকা, ১৪ জুন – ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার বিষয়ে নাসির ইউ মাহমুদসহ (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন অভিনেত্রী পরীমনি। রোববার পরীমণির ব্রিফিংয়ের পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন নাসির।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নাসির ইউ মাহমুদ ঢাকা বোট ক্লাবের সদস্য। তিনি ৩৭ বছর ধরে ডেভেলপার ব্যবসায়ে আছেন। ১০ বছর ধরে মাহমুদ কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। কুঞ্জ ডেভেলপার্সের আগে তিনি মাহমুদ বিল্ডার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের এমডি ছিলেন।

সূত্র জানায়, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগ থেকে পড়াশোনা করেন। তিনি ও তার প্রতিষ্ঠান সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি), রাজউক, রেলওয়েসহ সরকারি-বেসরকারি নানা ঠিকাদারি কাজ করেন।

এছাড়াও তিনি জাতীয় পার্টির (জাপা) একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য। ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর জাপার ৯ম কাউন্সিলে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়।

ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে নাসিরকে রোববার রাতে ও সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে ফোন দেওয়া হলে তার ব্যক্তিগত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সেদিন কী ঘটেছিল জানতে চাইলে বোট ক্লাবের রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফের ম্যানেজার জহিরুল হক বলেন, আমি অনেকদিন ছুটিতে ছিলাম। রোববার অফিস করেছি এবং সন্ধ্যায় অভিযোগটি শুনেছি। বোট ক্লাবে এমন কিছু ঘটেছে কি না এখন পর্যন্ত আমরা জানি না।

পরীমণির মামলা

ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার করেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি। সোমবার (১৪ জুন) সাভার থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এর আগে সকালে রূপনগর থানার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ করেন পরীমণি।

সাভার থানার পরিদর্শক কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, পরীমণি নিজে বাদী হয়ে মোট ৬ জনের নামে এ মামলা করেছেন (মামলা নম্বর ৩৮)। মামলা সূত্রে জানা যায়, ৯ জুন (বুধবারে) রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়।

রোববার (১৩ জুন) রাতে প্রথমে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেন এই অভিনেত্রী। পরে তার নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সামনে এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বুধবার রাতে উত্তরার বোট ক্লাবে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে এ ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।

পরীমনি বলেন, এমন ঘটনায় সাধারণ মেয়েরা প্রথমে কোথায় যায়? থানায় যায়। আমিও থানায় গিয়েছি। আমি বারবার বলেছি, ঘটনাটা যদি নিজের সঙ্গে না ঘটে তাহলে কেউ বুঝবে না। ওইদিন পর্যন্ত কি তবে অপেক্ষা করবেন?

কী ঘটেছিল সেটা জানতে চাই, আপনি নির্ভয়ে বলুন- উপস্থিত সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পরীমণি বলেন, আমার মুখটা সাদা কাপড়ে ঢাকা পড়লেই কেবল বুঝতেন। আমি চার দিন ধরে কারও সাপোর্ট পাইনি। আপনারা সত্যিটা খোঁজেন।

পরীমনি আরো বলেন, সাধারণ কোনো মেয়ের হলে সে খবর হয়তো আপনাদের কাছে পৌঁছায় না। সাংবাদিকদের কাছে খবর পৌঁছানো হয় না। আমার মতো যখন কোনো মেয়েকে ভয় দেখানো হয় তখন সাধারণ মেয়ের খবর তো পাবেন না!

তিনি বলেন, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তার এক বন্ধু (অমি) বাসায় আসেন। বাসা থেকে তাকে উত্তরার বোট ক্লাবে (ঢাকা বোট ক্লাব) নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জিমি (ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী)। বোট ক্লাবে যাওয়ার পর সেখানে সাত/আটজনের একটা গ্রুপ ছিল। তাদের মুরব্বি ছিলেন নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ)। তিনি বোর্ড ক্লাবের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দেন।

‘নাসির উদ্দিনসহ (নাসির ইউ মাহমুদ, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী) উপস্থিত সাত/আটজন আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করতে থাকে। আমাকে আটকে ফেলে। জোর করে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করার চেষ্টা করে। জিমিকে মারধর করা হয়। অশ্লীল নানা কথাবার্তা বলা হয়। মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।’

নাসির উদ্দিন (নাসির ইউ মাহমুদ) তার সঙ্গে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ করেন পরীমণি।

এন এইচ, ১৪ জুন

Back to top button