তিন গুণ বেশী ব্য়য়ে ১২.২ মিটার উচ্চতায় হচ্ছে কালুরঘাট সেতু
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর- অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কালুরঘাট সেতুর উচ্চতা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কাটল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) দাবি অনুযায়ী ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের পরিচালক (প্রকিউরমেন্ট) মো. গোলাম মোস্তফা।
যদিও শুরু থেকেই ৭ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় সেতুটি নির্মাণ করতে চেয়েছিল রেলওয়ে।
গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ হবে। যদিও আমরা ৭ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় করতে চেয়েছিলাম। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাই আমরা ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় সেতুটি তৈরি করব।’
১২.২ মিটার উচ্চতায় হচ্ছে কালুরঘাট সেতু, ব্যয় বাড়ছে তিন গুণ
এক্ষেত্রে তিন গুণ ব্যয় বাড়বে বলে জানান গোলাম মোস্তফা। বলেন, ‘৭ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় সেতুটি নির্মাণ করতে খরচ ধরা হয়েছিল দুই হাজার কোটি টাকা। ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় করতে গেলে তিন গুণ ব্যয় বাড়বে। এক্ষেত্রে সেতুর মোট ব্যয় দাঁড়াবে ছয় হাজার কোটি টাকায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নতুন নির্দেশনার পর নতুন করে দাতা সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। এছাড়া নতুন নকশা প্রণয়ন ও ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য বিষয় নতুন করে করতে হবে।’
আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব
রেলওয়ের এই কর্মকর্তা জানান, বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রেল লাইন অ্যালাইনমেন্টে উচ্চতা সর্বোচ্চ ৯ মিটার পর্যন্ত করা যাবে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, দুঃসময়ে জাহাজ পারাপারে সেতুটি যাতে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে সেজন্য সেতুর উচ্চতা বাড়াতে হবে।
১২.২ মিটার উচ্চতায় হচ্ছে কালুরঘাট সেতু, ব্যয় বাড়ছে তিন গুণ
নৌপরিবহন অধিদফতর দেশের সব নদীকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে সরকারি গেজেট প্রকাশ করেছে। যেখানে দেশের প্রধান নদীসমূহ যেমন- পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, গোমতী, কর্ণফুলীসহ বেশ কয়েকটি নদী প্রথম শ্রেণিভুক্ত। এর মধ্যে কর্ণফুলী নদীর বঙ্গোপসাগর মোহনা থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত অংশকে প্রথম শ্রেণিভুক্ত এবং শাহ আমানত সেতু থেকে হালদা নদীর মোহনা পর্যন্ত দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে।
নৌপরিবহন অধিদফতরের গেজেট অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণির নদীতে সেতু করতে হলে তার উচ্চতা হতে হবে ১৮ দশমিক ৩ মিটার, দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত নদীতে সেতু হলে উচ্চতা হতে হবে ১২ দশমিক ২ মিটার আর তৃতীয় শ্রেণিভুক্ত নদীতে সেতু হলে উচ্চতা হতে হবে ৭ দশমিক ২ মিটার। তাই কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট পয়েন্টে রেলওয়ে সেতুটি ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় করতে হবে।
ব্রিটিশ আমলে মিয়ানমারের (বার্মা) সঙ্গে সৈন্য আনা-নেয়ার কাজে সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯১৪ সালে। ১৯৩০ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। ৯০ বছর বয়সী সেতুটি ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে মরণদশায় পরিণত হয়েছে। তবুও ঝুঁকি নিয়ে দিনে লক্ষাধিক মানুষ সেতুটি ব্যবহার করছেন।
সূত্র : জাগো নিউজ
এম এন / ১৯ অক্টোবর