টাঙ্গাইল

সাবেক এমপি রানার বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা

টাঙ্গাইল, ১০ জুন – টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলার আসামির টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার (৯ জুন) টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ বলেন, মামলাটি টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শামসুল আলম মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।

গোলাম কিবরিয়া বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের এমপি তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই। তিনি টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা বাস কোচ মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম জানান, গত ৭ জুন আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, তার (রানার) বড় ভাই আমিনুর রহমান খান বাপ্পির হত্যাকারী গোলাম কিবরিয়া বড় মনি এবং তার ছোট ভাই তানভীর হাসান ছোট মনির। এছাড়া তারা দুই ভাই (গোলাম কিবরিয়া বড় মনি ও তানভীর হাসান ছোট মনির) জার্মানিতে অস্ত্রের ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন বলেও উল্লেখ করেছেন। অথচ আমিনুর রহমান খান বাপ্পি হত্যার সাত বছর আগেই তারা দুই ভাই জার্মানিতে চলে যান। দেশে ফেরেন বাপ্পি হত্যার ঘটনার ৬-৭ বছর পর। বাপ্পি হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা আতাউর রহমান খান বাদি হয়ে যে মামলা করেন, সেখানে গোলাম কিবরিয়া বড় মনি বা তানভীর হাসান ছোট মনির কারো নাম ছিল না। পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সেখানেও তাদের কারো নাম নেই। তাছাড়া তারা জার্মানিতে মোটরগাড়ি ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। অথচ মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে গোলাম কিবরিয়া বড় মনি ও তার পরিবারের সদস্যদের হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে। এতে তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে ক্ষতি হয়েছে। এতে তার পাঁচ কোটি টাকার সম্মানহানি হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। সেই তদন্তে ফারুক হত্যা মামলায় রানা ও তার অপর তিন ভাইয়ের জড়িত থাকার প্রমাণ বেরিয়ে আসে। তখন তারা আত্মগোপনে চলে যান।

২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এ হত্যা মামলায় আমানুর রহমান খান আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।

এ মামলায় সাবেক এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি রয়েছেন। প্রায় ২২ মাস আত্মগোপন ও ৩৪ মাস ২১ দিন কারাবাসের পর ২০১৯ সালের ৯ জুলাই জামিনে মুক্তি পান রানা। তবে তার আরেক ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আত্মসমর্পণ করে কারাগারে রয়েছেন। তার আরো দুই ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন আর সানিয়াত খান বাপ্পা এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন।

সূত্র : জাগো নিউজ
এন এইচ, ১০ জুন

Back to top button