হবিগঞ্জ

প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য বৃদ্ধা মাকে খুন!

হবিগঞ্জ, ২৭ মে– হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা গোলাপ চান বিবিকে হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। প্রতিপক্ষকে হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর জন্য বৃদ্ধার ছেলে মোহাম্মদ আলী এই হত্যা করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে দায় স্বীকার করে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে সে এই স্বীকারোক্তি দেয়। আদালত পরিদর্শক আনিসুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী ও তার চাচাত ভাই আব্দুল কাদিরের মধ্যে বাড়ির সীমানা, পানি নিস্কাশনের রাস্তাসহ জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে চলছে মামলা মোকদ্দমা। সম্প্রতি বানিয়াচং থানা পুলিশ উভয়পক্ষকে ডেকে এ ঘটনাটি নিষ্পত্তি করার আশ্বাস দেন।

এর মধ্যে বুধবার সকালে মোহাম্মদ আলী ও তার চাচাত ভাই আব্দুল কাদিরকে নিয়ে এলাকার মুরুব্বীয়ান সামাজিক বিচারে বসেন। বিচারের মধ্যে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে আঘাতে মোহাম্মদ আলীর মা গোলাপ জান বিবি ঘটনাস্থলেই মারা যান।

এ অবস্থায় মোহাম্মদ আলী তার মাকে কাদির গংরা হত্যা করেছে বলে চিৎকার শুরু করে লোকজন নিয়ে কাদির গংদের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং-সার্কেল) পলাশ কুমার রঞ্জন, বানিয়াচং থানার ওসি এমরান হোসেন, ওসি তদন্ত প্রজিত দাশসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঘটনাস্থলে পুলিশের কাছে গোলাপ জান বিবির ছেলে মোহাম্মদ আলী জানান, কাদির মিয়া গং তার মাকে ফিকল (বল্লম) দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেছে। অপরদিকে পুলিশকে জানানো হয়, নিহত গোলাপ চান বিবির ছেলে মোহাম্মদ আলী ফিকল দিয়ে আঘাত করে তার মাকে হত্যা করেছে। এসব তথ্য ও নিহতের আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশ বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে।

পরবর্তীতে সেখানে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আব্দুল মালিকের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত টিম গিয়ে দিনভর তদন্ত করে। হত্যার ঘটনায় রহস্য সৃষ্টি হওয়ায় নিহতের ছেলে মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ওসি এমরান হোসেন বলেন, আমরা এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি যাছাই বাছাই করার সময় ঘটনার সত্যতা পেয়ে মোহাম্মদ আলীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেই হত্যা করেছে বলে স্বীকার করলে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করা জন্য। তিনি আরও জানান, আব্দুল কাদির এর বাড়িঘর লুটপাটের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সূত্র: বিডি প্রতিদিন
এম এন / ২৭ মে

Back to top button