এসআই আকবরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, হিলি সীমান্তে সতর্কতা
সিলেটে, ১৭ অক্টোবর- সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন হত্যায় অভিযুক্ত এসআই আকবরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এরপরেই হিলি সীমান্তে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
শনিবার দুপুরে মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস হাসান টিটো।
তিনি বলেন, আমরা সীমান্তে সবসময় সতর্ক অবস্থায় থাকি। যাতে করে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে কেউ যেন পারাপার না হয়। শুধু এসআই আকবরই নয়, যেকোন অপরাধী এই সীমান্তপথ ব্যবহার করে যাতে ভারতে যেতে না পারে সেদিকে আমরা ২৪ ঘণ্টা কঠোর অবস্থানে থাকি।
অন্যদিকে করোনার কারণে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বন্ধ থাকায় এই পথ ব্যবহার করে কেউ ভারতে যেতে পারবে না বলে জানান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকালে রায়হান উদ্দিন নামের এক যুবককে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আটক করা হয়। ওইদিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করে।
ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় রায়হানের বাবা। তাতে ওই ফাঁড়িতে তাকে আটকে রেখে ছেড়ে দেয়ার জন্য টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানায় রায়হান। বাবাকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করে রায়হান।
ছেলেকে বাঁচাতে ভোরে তার বাবা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে তাকে জানানো হয়, রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে। পরে সকাল ১০টা দিকে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে।
এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলোও উপড়ানো ছিল। পুলিশ এরপর দাবি করে রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।
তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোন প্রমাণ মেলেনি। রোববার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকালে ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
আরও পড়ুন: রাবিতে নিজের নামে ‘মাদ্রাসা’ চালু করলেন উপাচার্য!
রায়হানকে পুলিশ হেফাজতে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনাটি রোববার থেকেই গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলা দায়েরের পর এর তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।
সূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল
আডি/ ১৭ অক্টোবর