জাতীয়

সোয়া ২ লাখ কোটি টাকার এডিপি‘র প্রস্তাব

জাফর আহমেদ

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল – মহামারীকালে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সরকার ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) গ্রহণ করতে যাচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। যদিও তা গত মাসে ৭ হাজার ৫০২ কোটি টাকা কমিয়ে এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকায় সংশোধন করা হয়।

সে হিসাবে আগামী অর্থবছরের এডিপি‘র আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি‘র তুলনায় ২৭ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেশি।

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী জানান, সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা বিভাগের কাছে আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার ‘সিলিং’ দিয়ে একটি বরাদ্দপত্র পাঠিয়েছে।

“এখন আমরা সেই সিলিংয়ের মধ্যে রেখে খাতভিত্তিক বরাদ্দ ভাগ করার জন্য কাজ শুরু করেছি।”

প্রস্তাবিত এডিপিতে সরকারের নিজস্ব তহবিল বা অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বা প্রায় ৬১ শতাংশ, আর বাকি ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা বা ৩৯ শতাংশ প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বৈদেশিক সম্পদ থেকে যোগ হবে বলে জানানো হয়েছে।

সচিব জয়নুল বারী বলেন, “শিগগির আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এই বরাদ্দ প্রস্তাব বিবেচনা করার জন্য পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভার বৈঠক ডাকা হবে। ওই বৈঠকের অনুমোদন নিয়ে আমরা খাতভিত্তিক বরাদ্দ চূড়ান্ত করব।”

তিনি জানান, ঈদের পরে আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দিকে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় এডিপি চূড়ান্ত হবে।

এদিকে পরিকল্পনা বিভাগের কার্যক্রম বিভাগের উর্ধতন একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে এডিপির অধীনে দেশে চলমান সব প্রকল্পকে ১৭টি খাতে ভাগ করে উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু আগামী অর্থবছর থেকে ৩টি খাত কমিয়ে ১৪ খাত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই এখন আগে কোন খাতে কোন প্রকল্প রাখা যায়, তা বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কার্যক্রম বিভাগের প্রধান খন্দকার আহসান হোসেন বলেন, “এখনও আমরা কোন খাতে কত বরাদ্দ দেওয়া হবে, তা আমরা চূড়ান্ত করতে পারিনি।”

তিনি বলেন, খাত কমিয়ে ১৪টি করার সরকারের এই সিদ্ধান্ত তারা সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন।

এদিকে কার্যক্রম বিভাগের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, আগামী অর্থবছরেও অন্যান্য অর্থবছরের মতো ফার্স্টট্র্যাক প্রকল্পগুলোই বরাদ্দে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। একক প্রকল্প হিসেবে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হতে পারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৪ হাজার ৮০৭ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হতে পারে রাজধানীতে চলমান মেট্রোরেল (এমআরটি-৬) প্রকল্পের জন্য এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হতে পারে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য।

এছাড়াও পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, দোহাজারী –কক্সবাজার রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পে দেওয়া হতে পারে ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।

এছাড়া পায়রা বন্দরে প্রথম টার্মিনাল নির্মাণে ১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা এবং পায়রা বন্দরের জন্য ১ হাজার ১০৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে বলে ওই কর্মকর্তা আভাস দেন।

সূত্র : বিডিনিউজ
এন এইচ, ৩০ এপ্রিল

Back to top button