অপরাধ

টঙ্গীর মাদক ব্যবসায়ী কোটিপতি ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল গ্রেপ্তার

গাজীপুর, ২৮ এপ্রিল – গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে বহুল আলোচিত কোটিপতি ছাত্রলীগ নেতা মো. রেজাউল করিমকে (৩২) মঙ্গলবার রাত সোয়া একটার দিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) ইলতুৎমিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, টঙ্গী পূর্ব থানার একটি মামলায় রিমান্ডে থাকা আসামি জাকির হোসেনের স্বীকারোক্তি মতে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন হিমারদীঘি আমতলী কেরানীরটেক এলাকা তার নিজ বাসার আলমারি হতে পাঁচশত পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

পরে অভিযানকালে জাকির হোসেনের ভাই মো. নবীন হোসেনের কাছ থেকে ২৯৪ পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ নবীন হোসেনকেও গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার জাকির হোসেন পুলিশকে জানায়, টঙ্গীর নোয়াগাঁও হিমারদিঘী এলাকার হোসেন আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করীমের সরবরাহ করা উক্ত ইয়াবা জাকির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে বেচা-কেনা করে আসছে। ইয়াবা বিক্রির লভ্যাংশ তারা আনুপাতিক হারে ভাগ করে নেয়।

মঙ্গলবার দায়ের করা একটি চাঁদাবাজি মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে টঙ্গীর নোয়াগাঁও এলাকার বাসা থেকে ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করীমকে গ্রেপ্তার করে।

স্থানীয়রা জানায়, গাজীপুর মহানগরের আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা মো. রেজাউল করীম। কক্সবাজার থেকে মাদক এনে টঙ্গীর বিভিন্ন কারবারিদের হাতে পৌঁছে দিতেন তিনি।

সম্প্রতি, সাজ্জাদুল ইসলাম মনির নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ছাত্রলীগের এই নেতা। ভুক্তভোগীর স্ত্রী শিল্পী আক্তার এ ঘটনায় বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে রেজাউল করীমকে।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করীমের বিরুদ্ধে মাদক কারবারি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই ওই ছাত্রলীগ নেতার বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। তারই জেরে ইয়াবা কারবারে রেজাউলের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, রেজাউল করিম গাজীপুরের টঙ্গীর হিমারদিঘী নোয়াগাঁও এলাকার হোসেন আলীর ছেলে। রেজাউলের বাবা আগে টঙ্গী রেলস্টেশনের পাশে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতেন। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট রেজাউল পুবাইল আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ২০০৭ সালে টঙ্গী সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়ার পর পড়ালেখার খরচ জোগাতে রেজাউল করিম বাসের টিকিট কাউন্টারে কাজ নেন।

রেজাউলের এই সংগ্রাম অনেকেরই নজর কেড়েছিল। তখনই মাদক ব্যবসায় যুক্ত হন রেজাউল। টিকিট বিক্রির পাশাপাশি ফেনসিডিলও বিক্রি শুরু করেন। হাতে টাকা আসতে থাকলে একের পর এক ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে।

স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা জানান, রেজাউল পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেন। একটি মেয়েও রয়েছে। ছাত্রত্ব নেই অনেক দিন। তবু ছাত্রলীগের পদে আছেন। ২০১৬ সালে রেজাউল ছাত্রলীগের পদ পাওয়ার পর ফেনসিডিল ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে শুরু করেন ইয়াবা ব্যবসা।

টেকনাফ ও কক্সবাজার থেকে নিজের পরিচয় দিয়ে ও নিজের গাড়ি দিয়েও তিনি ইয়াবা নিয়ে আসতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মাত্র চার বছরে মাদক ব্যবসা করে কোটিপতি বনে গেছেন রেজাউল।

সূত্র : দেশ রূপান্তর
এন এইচ, ২৮ এপ্রিল

Back to top button