জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্ববিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে বামজোট
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল – যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত জলবায়ুবিষয়ক দুই দিনব্যাপী ‘লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেট’ এর উদ্বোধনী সেশনে গত ২২ এপ্রিল জলবায়ু পরিবর্তনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যকে স্ববিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা উল্লেখ করেন বামজোটের নেতৃবৃন্দ।
বৈশ্বিক ওই সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় জলবায়ু পরিবর্তনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের প্রতি চারটি পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেগুলো হলো— কার্বন নিঃসরণ কমানো, জলবায়ুর ক্ষতি প্রশমন ও পুনর্বাসনে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার ফান্ড নিশ্চিত করা এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দিকে বেশি মনোযোগী হওয়া। দু’দিন ব্যাপী এই ভার্চুয়াল সামিটে শেখ হাসিনাসহ ৪০ জন বিশ্বনেতা অংশ নিয়েছেন।
বিবৃতিতে বামজোটের নেতারা বলেন, লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেটে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় ধনী দেশসমূহকে কার্বন নিঃসরণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। অথচ নিজের দেশে একের পর এক পরিবেশ দূষণকারী ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে চলেছেন।
তারা বলেন, সরকার দেশের উপকূলজুড়ে ২৯টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে কাজ শুরু করেছে। এমনকি পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে জনমত উপেক্ষা করেই। সরকারের জ্বালানি পরিকল্পনায় পূর্বের ৩ শতাং থেকে বাড়িয়ে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ প্রাপ্তি ৩৫ শতাং করা হয়েছে। এসবই শেখ হাসিনার জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের পরিপন্থি এবং স্ববিরোধী।
নেতারা আরও বলেন, শুধু এসবই নয়, পরিবেশ দূষণকারী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বেসরকারি এস আলম গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকার এমনই ব্যস্ত যে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকরা বাঁশখালীতে মজুরিসহ ন্যায্য দাবি জানাতে গেলে শ্রমিকদেরকে পাখির মতো গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে। অথচ শ্রমিক হত্যাকারীদের কোনো বিচার হচ্ছে না।
বিবৃতিতে বাম জোটের নেতৃবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ ও বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচার দাবি করেন। একইসঙ্গে সরকারের জলবায়ু তহবিলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন- বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ ও জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পদক মোশরেফা মিশু, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী)’র সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
সূত্র : জাগো নিউজ
এন এইচ, ২৪ এপ্রিল