চলনবিলে দু গ্রুপের সংঘর্ষে একই পরিবারে নিহত ২, আহত ১১
সিরাজগঞ্জ , ১৬ অক্টোবর- চলনবিলে একই পরিবারের ২জন নিহত ও আহত হয়েছেন ১১জন। আসামীদের ফাঁসির দাবিতে এলাকায় উত্তাল পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রশাসন চেষ্টা করছে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে।
বুধবার সকালে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলা খানমরিচ ইউনিয়নের দাসবেলাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায় ওই গ্রামের ১টা পুকুর নিয়ে অনেক দিন যাবত গোলমাল চলতে ছিল বেল্লাল ও গফুর গ্রুপের। দু গ্রুপের মধ্যে মিলেমিশে পুকুরে চাষ করার জন্য দু গ্রুপের মধ্যে ১জনকে সভাপতি ও ১জনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি করা হয়। কিন্তু এ পুকুরে চাষ করাকে কেন্দ্র করে গোলমাল চলতে চলতে এটা পারিবারিক দ্বন্ধে পরিনত হলে মান সম্মান নিয়ে জড়িয়ে পরে।
এই সূত্র ধরে বেল্লাল গ্রুপের লোকজন বেল্লাল, মফিদুল, জিয়াউর, শুকুর, জাবেদ, মজিবর, হাসেম, আছাব, কালাম, মোক্তার,আমিরুল,আনিছুর,আলম,বাবু,আবজাল, আলামিন,খাইরুল,রবিউল,সোবহান ফজর নামাজ পর অতর্কিত ভাবে গফুর গ্রুপের উপর হামলা করলে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে বেল্লাল বাহিনীর লোকজন গফুর বাহিনীর লোক জনকে মেরে আহত করে। আহতরা হলেন, তোরাব আলী,ফজলুর,আব্দুল গফুর,জহির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, মমিন, আলা উদ্দিন,আশরাফুল,হাফিজুর,বাছিয়া খাতুন,মমেন ও হালিমা খাতুন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের অবস্থার অবনতি দেখে রাজশাহী মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠান। রাজশাহী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকাল ৫টায গফুর গ্রুপের তোরাব আলী (৭৫)মারা যান। পরের দিন সকাল ১১টার দিকে বাবার মৃত্যুর পর ছেলে ফজলুর রহমান (৩৫)মারা যান। একই পরিবারের বাবা ও ছেলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। তোরাব আলীর ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ের মধ্যে ছোট ছেলে ফজলুর রহমান তার স্ত্রীসহ ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে গেছেন। উভয়কে শুক্রবার সকালে জানাযা নামাজ পর সুলতানপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইছামতি নদী পারাপারে স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগ
মেয়ে আফিয়া খাতুন’র (১০) কান্নায় এলাকার মানুষ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না। মেয়ে বলে আমি আমার আব্বার মুখ দেখতে পারি নাই। আমার আব্বাকে যারা মারছে ,আমাদের যারা এতিম করছে তাদের আমি ফাঁসি চাই।
এ ব্যাপারে নিহত ফজলুর স্ত্রী আলেফা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ও শ্বশুরকে যারা মেরে ফেলেছে এবং যাদের উস্কানীতে এই কাজ করেছে,যারা সহযোগীতা দিয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই শাস্তি চাই। আমার ছেলে মেয়েকে যারা এতিম বানিয়েছে যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে ,সেই সকল হত্যাকরীদের ফাঁসি চাই। এ বিষয়ে খানমরিচ ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বলেন, এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক । শান্তি বজায় রাখার জন্য ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ রাখা হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই ঘটনায় থানায় ১৮ জনের নামে মামলা হয়েছে।তার মধ্য থেকে ৫জনকে আটক করা হয়েছে। বাদবাকী আসামীদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়াও শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ রাখা হয়েছে।
সূত্র : বিডিলাইভ২৪
এন এইচ, ১৬ অক্টোবর