ঠাকুরগাঁও

রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামবাসীর

ঠাকুরগাঁও, ১২ এপ্রিল– ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে রহস্যজনক আগুনের ঘটনায় নির্ঘুম রাত কাটছে এক গ্রামের বাসিন্দাদের। উপজেলার ছোট সিংগিয়া মুন্সিপাড়া গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের আতঙ্কে পানি নিয়ে পাহারায় নির্ঘুম দিন-রাত পার করছেন স্থানীয়রা। হাঁড়ি-কলসিতে পানি ভরে এবং পাম্প চালু রেখে আগুন নেভানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

সোমবার দুপুরে মুন্সিপাড়া ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির আসবাবপত্র বাইরে রেখে এবং অনেকেই খোলা জায়গায় অবস্থান করছেন। ছোট-বড় সবার দৃষ্টি; কার বাড়িতে কখন আগুন লাগছে। ইতোমধ্যে থাকার ঘরসহ ২০টি ঘর এবং অসংখ্য গাছপালা পুড়ে গেছে। এতে নিম্নবিত্তদের মধ্যে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় পোস্টমাস্টার সিরাজ বলেন, গত ২৯ মার্চ দুপুরে প্রথম আগুন লাগে আবদুস সালামের খড়িঘরে। এর পর ধারাবাহিকভাবে আগুন লাগতে থাকে। পরে মসলিম উদ্দীনের খড়িঘর, বাবুলের থাকার ঘর, এন্তাজুলের খড়িঘর, নুরে আলমের গোসলঘরসহ অনেক ঘর এবং গাছপালা পুড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ১৫ দিনে ২১ বার অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এ অবস্থায় খাওয়া, কাজ বন্ধ রেখে পালাক্রমে বাড়ি পাহারা দেওয়া হচ্ছে। এ গ্রামে দিন-রাত একাকার হয়ে গেছে। জানি না, আল্লাহ এ ‘গজব’ থেকে কীভাবে ও কবে মুক্তি দেবেন! প্রতিদিন কমপক্ষে দু’তিনবার আগুন লাগছে।

রশিদুল ইসলাম বলেন, আগুনের হাত থেকে বাঁচতে ২৪ ঘণ্টা পানি প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। সোমবার সকালে ছেলে ভাত খাওয়ার সময় তার প্লেটে আগুন লাগে। এ গ্রামের তাজিম উদ্দীনের স্ত্রী ফেন্সি বেগম এবং তার দুই ছেলে মনোয়ার হোসেন ও মুন্না হোসেন গুরুতর অসুস্থ। তাদের যখন গা জ্বালা-পোড়া করে তারা আগুন আগুন বলে চিৎকার করে। তখন এলাকায় কারও না কারও বাড়িতে আগুন লাগে।

আরও পড়ুন : লকডাউনে কর্মহীন পরিবার পাবে ৫০০ টাকা, লকডাউন বাড়লে খাবারও

ক্ষতিগ্রস্ত দারাব আলী জানান, গত ৯ এপ্রিল দুপুরে বাড়িতে আগুনের কোনো সংস্পর্শ ছাড়াই আগুন লাগে। সব ঘর পুড়ে যাওয়ায় খোলা জায়গায় বসবাস করছি।

শেফালি বেগম বলেন, গত ১০ এপ্রিল সকালে বিছানায় আগুন লাগলে ঘরের মালপত্র পুড়ে যায়। কোথা থেকে আগুন এলো, কিছুই বলতে পারি না। এলাকার সবাই প্রয়োজনীয় মালপত্র বাইরে রেখে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

ইউএনও যোবায়ের হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কোথা থেকে আগুন আসছে, কিছুই বলা যাচ্ছে না। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আগুনের সূত্রপাত জানার জন্য। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র : সমকাল
এম এন / ১২ এপ্রিল

Back to top button