জাতীয়

নৌপথের ৫৩ রুটে ড্রেজিংয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে

ঢাকা, ০৭ এপ্রিল – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রযুক্তি ও যান্ত্রিক উপকরণ ব্যবহার করে আমাদের সমুদ্র, নদী ও স্থলবন্দরসমূহের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য সহজতর তথা প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য সরকার ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও অন্যান্য নাব্যতা উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, বন্দর সংযোগকারী নদী চ্যানেলসমূহ ড্রেজিং এবং রাস্তাসমূহ ৬ লেন ও ৪ লেনে উন্নীতকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদী বন্দরসমূহের পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নৌবন্দর স্থাপন, নদীর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীররক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ এবং নদীর তলদেশ হতে বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।

বুধবার (৭ এপ্রিল) নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

আরও পড়ুন : আইসিইউতে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু

শেখ হাসিনা বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন করাসহ যাত্রী সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছরের নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘মুজিববর্ষের শপথ, নিরাপদ রবে নৌপথ’।

তিনি বলেন, আবহমানকাল ধরে নদী, নৌপথ আর নৌকার সঙ্গে এক দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক জীবন। সুপ্রাচীনকাল হতে আজ অবধি আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ আর মালামাল পরিবহনে নৌপথের ভূমিকা অপরিসীম।

তিনি আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মহান স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের উন্নয়নের গতিধারা বেগবান করতে এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নৌপরিবহনের ওপর ব্যাপক গরুত্বারোপ করেন। তার দূরদর্শী ভাবনায় ‘দি টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স অ্যান্ড মেরিটাইম জোন্স অ্যাক্ট-১৯৭৪’ প্রণীত হয়।

জাতির পিতার সূচিত সেই পথ ধরে আওয়ামী লীগ সরকার নিরাপদ ও আরামদায়ক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে সবচেয়ে জনপ্রিয় নৌপরিবহন ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সরকার নদী আর নৌপথকে বাঁচিয়ে রাখতে, নৌপথের প্রসার ও উন্নয়নে এবং পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নৌসম্পদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমাদের বিশাল সমুদ্র-সীমানা, যা আমাদের নৌবাণিজ্যে যুক্ত করেছে এক নতুন মাত্রা। সুনীল অর্থনীতির অবারিত দ্বার আমাদের সম্মুখে উন্মুক্ত। আমার বিশ্বাস, নৌপরিবহন ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে ৪৫৫.৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘এস্টাব্লিসমেন্ট অভ গ্লোবাল মেরিটাইম ডিসট্রেস এন্ড সেইফটি সিস্টেম এন্ড ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম’ এবং ৪.১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ডেভেলপমেন্ট অভ মেরিটাইম লেজিসলেশন অভ বাংলাদেশ’ নামক দু’টি প্রকল্প এবং ‘ন্যাশনাল শিপস এন্ড মেকানাইজড বোটস ডাটাবেইজ ম্যানেজমেন্ট এন্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ নামক একটি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ, উপকূলীয় ও সমুদ্রপথে চলাচলরত সকল প্রকার দেশি ও বিদেশি জাহাজের সার্বিক নৌ নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নও বৃদ্ধি পাবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার রক্ষার মাধ্যমে এতে দেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বলতর হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ষড় ঋতুর দেশ। এখানে গ্রীষ্মকালে প্রায়শই কালবৈশাখী ঝড় ওঠে। তাই এ সময়ে নৌযান চালকরা এবং যাত্রীসাধারণ সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে। খারাপ আবহাওয়ায় বা অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে অথবা যান্ত্রিক ক্রটিসহ যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদের ঝুঁকি নিয়ে নৌযান চালানো বা নৌভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালনকালে একটি নিরাপদ আনন্দময় পরিবেশবান্ধব নৌপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সকলে এগিয়ে যাব, এই হোক আমাদের প্রত্যয়। আমি ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

সূত্র : জাগো নিউজ
এন এইচ, ০৭ এপ্রিল

Back to top button