কানাডা

বাংলাদেশে কানাডার ভিসা সেন্টার পুনঃস্থাপন এবং স্টুডেন্ট ডাইরেক্ট স্ট্রিমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তি’র উদ্যোগ নিচ্ছে কানাডায় বাংলাদেশের হাই কমিশন

টরন্টো, ৩০ মার্চ – কানাডায় বাংলাদেশের নবনিযুক্ত হাই কমিশনার ডঃ খলিলুর রহমান বাংলাদেশে কানাডার ভিসা সেন্টার পুনঃস্থাপন এবং স্টুডেন্ট ডাইরেক্ট স্ট্রিমে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তি’র উদ্যোগসহ বাংলাদেশে কানাডার অধিকতর বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে কানাডিয়ান সরকারের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

টিভি মেট্রো মেইল, কানাডা’র নির্বাহী সম্পাদক ইমামুল হকের সঞ্চালনায় এক বিশেষ লাইভ অনুষ্ঠানে গত ২৮ মার্চ কানাডায় বাংলাদেশের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার এমন প্রস্তাব এবং প্রতিশ্রুতির বিষয়ে কথা বলেন। তিনি আরো জানান যে কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান সামরিক জান্তা শাসিত মিয়ানমারে কেন বিনিয়োগ করে এবং কানাডিয়ান সরকারইবা তা কিভাবে সমর্থন করে এ বিষয়টিও তিনি কানাডিয়ান সরকারের সাথে আলোচনায় তুলবেন।

বাংলাদেশের হাই কমিশনার ডঃ খলিলুর রহমান বলেন, কানাডিয়ান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইংল্যান্ড এবং ইউরোপের সাথে মিলে মিয়ানমারে বিনিয়োগ করছে যা পক্ষান্তরে মিয়ানমার সামরিক জান্তাকেই সাহায্য করছে এবং মানুষের জন্যে তা এক বিরোধপূর্ণ বার্তাই দিচ্ছে। রহিঙ্গা ইস্যুতে কানাডার মানবিক সাহায্যের জন্যে ধন্যবাদ জানিয়ে খলিলুর রহমান বলেন, কেবল মানবিক সাহায্যই যথেষ্ট নয় এবং তা মূল সমস্যার সমাধানেও উপযোগী নয়, তাই রহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির দিকেও কানাডাকে নজর দিতে হবে।

বাংলাদেশ এবং কানাডার স্বার্থসংশ্লিঠ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত কার্যকর অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্যে টিভি মেট্রো মেইল এবং পেস কে ধন্যবাদ জানিয়ে স্কারবোরো সাউথওয়েস্ট এর নির্বাচিত এমপিপি (প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট মেম্বার) ডলি বেগম বলেন, ‘”বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যে তরুণদের দেশে থাকতে উৎসাহিত করতে হবে।'” তিনি আরও বলে, “উন্নয়ন সাহায্য সমসময় সামাজিক সমস্যার স্হায়ী সমাধান নয়, যে কোনো সাহায্যকে সময়উপযোগী ও যথার্থ হতে হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কানাডাকে ঘরে এবং বাইরে সমান ও কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে।” হাই কমিশনার কর্তৃক বাংলাদেশে কানাডার ভিসা সেন্টর পুণঃস্থাপনার উদ্যোগকে ডলি বেগম খুবই আশাব্যাঞ্জক ও প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেন।

অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো এবং কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (CIDA) এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক (এশিয়া) ডঃ সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সত্তুর দশকে প্রতিবছর কানাডার সাহায্য হিসেবে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ দিয়েছিলো। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে কানাডার উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে ছিল পুনর্নির্মাণ এবং পুনর্বাসন, এবং তারপর সরকার ও গ্রামীণ উন্নয়ন; বিশেষত কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত। গণতন্ত্র ও নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের উদ্যোগ ও স্পৃহাকে বরাবরই কানাডা প্রশংসা করে এসেছে। কানাডা নানাবিধ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও অবদান রেখে চলেছে।আজও কানাডা আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী।গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের প্রয়োগ ইত্যাদির মূল্যবোধের উপর প্রতিষ্ঠিত এ দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক মূলত বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, উন্নয়নমূলক সহযোগিতা, অভিবাসন প্রভৃতি বিষয়ের উপর বিশেষ লক্ষ্য রাখে।

খলিলুর রহমান বাংলাদেশকে ‘ডেভেলপমেন্ট মিরাকেল ‘ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন আজ বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের কাছে একটি রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। তাই বাংলাদেশ সাহায্যনির্ভর একটি দেশ হিসেবে নয় বরং উন্নয়নসহযোগী হিসেবে কানাডার সাথে কাজ করতে চায়। তিনি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে শুল্ক মুক্ত সুবিধা আগামীতেও কানাডা অব্যাহত রাখবে বলে আশা করেন। তিনি বলেন বাংলাদেশে কানাডার অধিক বিনিয়োগ সুবিধার জন্যে বাংলাদেশে কানাডিয়ান ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেছে।হাই কমিশনার কানাডাকে বাংলাদেশে অধিকতর বিনিয়োগের আহবান জানান।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Back to top button