জাতীয়

টিক্কা খানের সামরিক ফরমান প্রত্যাখ্যান

উদিসা ইসলাম

ঢাকা, ১৩ মার্চ – আজ ১৩ মার্চ। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে সারা পূর্ব বাংলা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে ছিল উত্তাল। প্রতিদিনের মতো আজও ঢাকাসহ সারা দেশ বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মিছিল ও সমাবেশে ছিল মুখরিত।

সামরিক ফরমান প্রত্যাখ্যান

জাতীয় পত্রিকার সংবাদ বলছে, এদিন সামরিক কর্তৃপক্ষের ১১৫ নম্বর মার্শাল ল আদেশ জারি হয়। সকল বেসামরিক কর্মচারীদের প্রতিরক্ষা খাত থেকে বেতন দেওয়া হয়। তাদেরকে ১৫ মার্চ সকালে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায়, চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকিও দেওয়া হয়। এ ধরনের নির্দেশকে উসকানিমূলক বলে অভিহিত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কোনও শক্তিই বাংলার জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারবে না।’

সামরিক নির্দেশ জারির পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘যখন আমরা সামরিক শাসন প্রত্যাহারের জন্য বাংলার জনগণের প্রচণ্ড দাবির কথা ঘোষণা করেছি, ঠিক তখন নতুন করে এ ধরনের সামরিক নির্দেশ জারি জনসাধারণকে উসকানি দেওয়ার শামিল।’

আরও পড়ুন : বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না আ.লীগের উপ-কমিটির

জেনারেল টিক্কার এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ সমগ্র জাতি প্রতিবাদ ও ক্ষোভে আরও দ্বিগুণ প্রতিরোধের প্রস্তুতি নেয়।

বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে ফেলা হচ্ছিলো

পশ্চিম জার্মানির ৬০ জন, জাতিসংঘের ৪৫ জন, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের ৪০ জনসহ মোট ২৬৫ জন বিদেশিকে ঢাকা থেকে অপসারণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর ৩২ নম্বরের বাসভবনে শীর্ষস্থানীয় চার ছাত্রনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে ডেকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিক নির্দেশনা দেন। সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে ইঙ্গিত মিলছিল।

আজকের দিনে কেন্দ্রীয় নেতারা বহির্বিশ্বের কাছে পূর্ব পাকিস্তানের প্রকৃত অবস্থান তুলে ধরে বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনে তাদের সমর্থন দানের আবেদন জানান। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ও নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তি সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা অত্যন্ত সংগোপনে বহির্বিশ্বের কাছে এ বার্তা প্রেরণ করেন।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ বেগবান

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশ থেকে ত্যাগকারীদের বাড়ি-গাড়ি-সম্পদ কিনে বাংলার অর্থ বিদেশে পাচারের সহযোগিতা না করার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান। প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদীন ও সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য আবদুল হাকিম পাকিস্তান সরকার প্রদত্ত খেতাব ও পদক বর্জন করেন।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
এন এইচ, ১৩ মার্চ

Back to top button