চট্টগ্রাম

সিইসি ও চসিক মেয়রসহ ৯ জনের নামে মামলা

চট্টগ্রাম, ২৪ ফেব্রুয়ারি – চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা ও চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরের দিকে চট্টগ্রামের প্রথম জেলা যুগ্ম জজ খাইরুল আমিনের আদালতে এ মামলা করা হয়। আদালতে লিখিত আবেদন করা হলেও এ ব্যাপারে কোন শুনানি হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য ও ডা. শাহাদাত হোসেনের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী।

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা-চট্টগ্রাম মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব, চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী আবুল মনজুর, এম এ মতিন, জান্নাতুল ইসলাম, খোকন চৌধুরী ও ওয়াহেদ মুরাদ।

এ বিষয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চসিক নির্বাচনে ভোটের দিন দুপুর ২টা পর্যন্ত ৪-৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। কিন্তু দিন শেষে সাড়ে ২২ শতাংশ ভোট দেখানো হয়েছে। নির্বাচনের দিন প্রতি ঘণ্টার ভোটের হিসাব দেখতে চেয়েছিলাম। ৭ দিন সময়ও দিয়েছি। কিন্তু ১০ দিন পরেও এই তথ্য কমিশন দিতে পারেনি।

আরও পড়ুন : মাদক মামলায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক কারাগারে

তিনি বলেন, নির্বাচনে ৪ হাজার ৮৮৫টি ইভিএম ব্যবহার করা হয়। সেখানে মাত্র ১০টি বুথে ইভিএম’র প্রিন্টেড কপি দেয়া হয়েছে। যদি ১০টি বুথের ইভিএম’র প্রিন্টেড কপি থাকে তাহলে সবগুলো ইভিএম’র প্রিন্টেড কপি থাকার কথা। কিন্তু তারা এটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ভোট কারচুপির অভিযোগ এবং বির্তকিত নির্বাচন বাতিল করে নতুন তফসিল ঘোষণা মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ৯ জনকে বিবাদী করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ, গত ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩৩টি কেন্দ্রে নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভোট পেয়েছেন তিন লাখ ৭৯ হাজার ২৪৮।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের ধানের শীষে ভোট পড়ে সাত ভাগের একভাগ মাত্র। তিনি ভোট পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৭৯ ভোট। অর্থাৎ প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান তিন লাখ ২৭ হাজার ৭৬৯। এর আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এত বেশি ব্যবধানে কেউ জেতেননি।

ভোটের দিন কিছু কেন্দ্রে বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পথচারী।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনেও কারচুপির অভিযোগ মিলেছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। ভোটাররা আঙুলের ছাপ দিয়ে পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর অন্য একজন তার হয়ে ভোট দিয়ে দেয়ার ঘটনায় একটি কেন্দ্রে একজন ভোটার ব্যাপক প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই ভিডিও বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে এসেছে।

ভোট শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বলেছিলেন, ‘নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা এজেন্টদের বের করে দিয়েছে, পুলিশ কোনো সাহায্য করেনি। ইভিএম কক্ষের সুরক্ষা ছিল না। বহিরাগতরা ছিল অনেক। আমাদের ২০০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। নির্বাচন হয়নি, হয়েছে নির্যাতন।’

সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল
এন এইচ, ২৪ ফেব্রুয়ারি

Back to top button